‘সাংসদ কোথায়?বাংলায় এতবার গেলেন, এখানে এলেন না কেন?’ উত্তর খুঁজছে বারাণসী

সাংসদ কোথায় ? ক্ষোভে ফুটছে বারাণসী৷

গা-ঢাকা দিয়েছেন বারাণসীর সাংসদ নরেন্দ্র মোদি (NarendraModi)৷ ক্ষুব্ধ বারাণসীর (Varanasi) প্রশ্ন, কোথায় আমাদের সংসদ? এই বিপদের দিনে, (Varanasi) প্রশ্ন, কোথায় আমাদের সংসদ? এই বিপদের দিনে, প্রয়োজনের মুহূর্তে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দেখা নেই কেন? ভোট চাইতে মোদি এতবার পশ্চিমবঙ্গে যেতে পারলেন আর বারাণসীর মানুষকে বাঁচাতে এখানে একবারও আসতে পারলেন না”?

মোদিকে যে কেন্দ্র ভোটে জিতিয়ে দিল্লি পাঠিয়েছে, সেই বারাণসীর মানুষের মুখে এখন একটাই কথা, “মোদি তো দরকার পড়লেই মা গঙ্গা, বারাণসী ও তার মানুষের সঙ্গে বিশেষ সম্পর্কের কথা বলতেন। কিন্তু করোনার তাণ্ডবে বারাণসীর স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ভেঙে পড়েছে। প্রধানমন্ত্রী তার নির্বাচনী কেন্দ্রকেই ভুলে গিয়েছেন। ভোট চাইতে ফের আসুন তিনি, বারাণসী জবাব দেবে সেদিন “৷

শুধু মোদি নন, বারাণসীর তোপের মুখে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথও৷ এই যোগীর বিরুদ্ধেও সমান সরব বারাণসীর মানুষ৷ তাঁদের বক্তব্য, “সরকারি রেকর্ড বলছে, বারাণসী জেলায় প্রতিদিন ১০-১২ জনের মৃত্যু হচ্ছে। যোগী আদিত্যনাথ নিখোঁজ। এমনকী স্থানীয় বিজেপি নেতারাও এখন ফোন বন্ধ রাখছেন।বারাণসীর মানুষকে ভাগ্যের হাতে ছেড়ে দিয়ে মোদি-যোগী বেপাত্তা হয়ে গিয়েছেন”।

বারাণসী এখন কার্যত নেই-রাজ্য৷ হাসপাতালে বেড নেই। অক্সিজেনের আকাল। পাওয়া যাচ্ছে না অ্যাম্বুলেন্স। করোনা পরীক্ষার জন্য অনির্দিষ্ট কাল অপেক্ষা করতে হচ্ছে। গত ১০-১২ দিন ধরে ওষুধের দোকানগুলিতে ভিটামিন, জিঙ্ক ও প্যারাসিটামলের মতো প্রাথমিক ওষুধগুলিও পর্যন্ত মিলছে না। এই অবস্থায় সঙ্গত কারনেই ক্ষুব্ধ বারাণসীর প্রশ্ন, কোথায় আমাদের সংসদ? এই বিপদের দিনে, প্রয়োজনের মুহূর্তে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দেখা মিলছে না কেন?

Advt

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বারাণসীর এক স্বাস্থ্যকর্মী সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, অক্সিজেন চেয়ে ক্রমাগত ফোন আসছে। কিন্তু আমরা নিরুপায়। প্রাথমিকভাবে প্রয়োজনীয় ওষুধগুলির সাপ্লাই পর্যন্ত নেই। এই অবস্থায় অনেকেই মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ খাচ্ছেন। অসহায় রোগীরা বলছেন, এতে কিছুটা তো কাজ হবে।

বারাণসীর ক্ষোভ, এই ভয়ঙ্কর বিপদের শুরু মার্চ থেকে। দিল্লি, মুম্বইয়ে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় ট্রেন, বাস, ট্রাক বোঝাই করে পরিযায়ীরা ফিরতে শুরু করেন। অনেকে ফিরে আসেন হোলির ছুটিতে। তার মধ্যেই এপ্রিলে হয়েছে পঞ্চায়েত নির্বাচন। সংক্রমণ দ্রুত বাড়তে থাকায় হাসপাতালগুলিতে ঠাঁই মিলছে না। স্থানীয়দের দাবি, সরকারি হিসেব থেকে বারাণসীর আসল ছবি কিছুই বোঝা যাবে না। রোজ অসংখ্য মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। হরিশ্চন্দ্র ও মণিকর্ণিকা ঘাট লাগোয়া বাসিন্দাদের বক্তব্যে ভয়াবহতা স্পষ্ট হচ্ছে। তারা জানাচ্ছেন, অ্যাম্বুলেন্সের শব্দে কান পাতা দায়। আগে এই দুই ঘাটে দিনে ৮০-৯০টি দেহ সৎকার হতো। কিন্তু গত একমাস দিনে ৩০০ থেকে ৪০০টি দেহ আসছে। শুধু বারাণসী শহর নয়, এই জেলার গ্রামগুলিতেও পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠেছে।মিডিয়ার সামনে বারাণসীর প্রায় সব মানুষের মুখে এখন এক কথা, “ভেবে দেখুন, এটা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নির্বাচনী কেন্দ্র। তা সত্ত্বেও আমরা শ্বাস নিতে না পেরে মরছি। মোদি গা-ঢাকা দিয়েছেন। ভাইরাসের তাণ্ডবে বারাণসীর স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ভেঙে পড়েছে। প্রধানমন্ত্রী তার নির্বাচনী কেন্দ্রকেই ভুলে গিয়েছেন।

এই ক্ষোভ, হতাশা, আতঙ্কের কথা মোদি বা যোগীর কানে যায়নি, এমন হতেই পারেনা৷ তবুও বারাণসীর অবস্থার বদল হয়নি৷ ক্ষোভে ফেটে পড়া বারাণসীর মুখে এখন আফশোষের সুর, ‘কেন মোদিকে ভোট দিলাম!’ একইসঙ্গে বলছেন, “ফের ভোট চাইতে আসুন মোদি-যোগী, বেঁচে থাকলে মুখের মতো জবাব দেব!”

 

Previous articleগোলপার্কের ফ্ল্যাট ছাড়ার জন্য আইনি নোটিশ শোভনকে
Next articleমুখ্যসচিবের মেয়াদ বাড়াতে চায় রাজ্য, দিল্লিতে চিঠি