জামিনে স্থগিতাদেশ হাইকোর্টের, জেল হেফাজত ৪ হেভিওয়েট নেতার

রাজ্যের ৪ হেভিওয়েট নেতার জামিনের নিম্ন আদালতের রায়ে স্থগিতাদেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। এর জেরে আগামী বুধবার পর্যন্ত জেল হেফাজতে থাকতে হবে রাজ্যের দুই মন্ত্রী, এক বিধায়ক ও এক প্রাক্তন বিধায়ককে। সোমবার, দিনভর টানাপোড়েনের শেষে সিবিআইয়ের জেল হেফাজতের আর্জি খারিজ করে নগর দায়রা আদালত। নারদ মামলায় অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পান ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim), সুব্রত মুখোপাধ্যায়(Subrata Mukharjee), মদন মিত্র(Madan Mitra) ও শোভন চট্টোপাধ্যায়(Shobhan Chatterjee)। ৫০ হাজার টাকা ব্যক্তিগত বন্ডে প্রত্যেককে জামিন দেন বিচারক অনুপম মুখোপাধ্যায় (Apupom Mukharjee)। এই রায়ের বিরোধিতা কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন জানায় সিবিআই। শুধু জামিনের বিরোধিতা নয়, সোমবার এই নেতাদের গ্রেফতারের পর যে ধরনের বিক্ষোভ-সমাবেশ হয়েছে তার উদাহরণ টেনে মামলাটিকে ভিন রাজ্যে নিয়ে যাওয়ার আবেদনও করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। শুনানি শেষে কলকাতা হাইকোর্ট অন্তর্বর্তীকালীন জামিনের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিয়েছে। মামলার পরবর্তী শুনানি বুধবার। এই বুধবার পর্যন্ত জেল হেফাজতে থাকবেন ৪ অভিযুক্ত। প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে রাতেই তাদের নিয়ে যাওয়া হবে। আইনের সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান তৃণমূল (Tmc) মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। তৃণমূলের অভিযোগ, এটা একটি পরিকল্পিত চিত্রনাট্য। অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক ঘটনা। নির্বাচনে জিততে না পেরে বিজেপি প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে।

নারদ মামলায় সোমবার বিনা নোটিশে গ্রেফতার করা হয় রাজ্যের দুই মন্ত্রী, এক বিধায়ক এবং এক প্রাক্তন বিধায়ককে। গ্রেফতারের পর
চারজনকে আদালতে ভার্চুয়ালি পেশ করে সিবিআই(Cbi)। এদের সঙ্গেই প্রাক্তন আইপিএস এসএমএইচ মির্জার নাম যোগ করে মোট পাঁচজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।

ভারতীয় দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় মামলা রুজু হয়। দুপুর দুটো থেকে শুনানি ঘণ্টাখানেকের মধ্যে শেষ হয়। ধৃত চারজনের ১৪ দিনের জেল হেফাজত চায় সিবিআই। কিন্তু আদালত জানতে চায়, যখন চার্জশিট পেশ করা হয়েছে, তখন হেফাজতে নেওয়ার কী প্রয়োজনীয়তা রয়েছে?

এর উত্তরে সিবিআইয়ের আইনজীবী জানান, চারজনই প্রভাবশালী। সাক্ষীদের প্রভাবিত করতে পারেন।

আদালতে অভিযুক্তদের পক্ষে সওয়াল করতে গিয়ে আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (Kalyan Banerjee) বলেন, ৪ অভিযুক্ত তদন্তে সহযোগিতা করেননি এমন অভিযোগ নেই। তারা দায়িত্বশীল নাগরিক। এরা কোথাও পালিয়ে যাননি। কোনো নথি নষ্ট করার চেষ্টা করেননি। পুরসভায় করোনা মোকাবিলার দায়িত্বে ফিরহাদ হাকিম। তার গ্রেফতারিতে এই কাজে অত্যন্ত সমস্যা হবে। একই সঙ্গে কল্যাণ অভিযোগ করেন, রাজ্যপালের কোনও ক্ষমতা নেই চার্জশিটের অনুমতি দেওয়ার।
একইসঙ্গে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, কোভিড পরিস্থিতিতে অযথা কাউকে গ্রেফতার করা বা হেফাজতে নেওয়া যাবে না।

এর পরেই এই চারজনকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিনের নির্দেশ দেয় নগরদায়রা আদালত। কিন্তু কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সেই নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিল হাইকোর্ট।

Advt

 

Previous articleজামিনের পরেও সুব্রত, ফিরহাদ, মদন, শোভনকে আটকে রেখে উত্তেজনা বাড়াল সিবিআই
Next articleমমতার কাঁধে বন্দুক রেখে জামিন ঠেকিয়ে দিল আদালত