বাতিল মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা: সিদ্ধান্ত নিয়ে কী জানালেন শিক্ষাবিদরা

জয়িতা মৌলিক : করোনা পরিস্থিতিতে এবছর মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক (Secondary-Higher Secondary) পরীক্ষা বাতিল করেছে রাজ্য সরকার। জনমতের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত বলে সোমবার জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Bandopadhyay)। সরকারি এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন অনেকেই। কেউ কেউ আবার সিদ্ধান্তের রকমফের চান। আবার কারও মতে এটি সঠিক সিদ্ধান্ত নয়। এই পরিস্থিতিতে ‘এখন বিশ্ব বাংলা সংবাদ’-এর তরফ থেকে কথা বলা হয়েছিল বেশ কয়েকজন শিক্ষাবিদ, অধ্যাপক এবং শিক্ষা দফতরের প্রাক্তন আধিকারিকের সঙ্গে।

কী বললেন তাঁরা?

পবিত্র সরকার: বর্ষীয়ান এই শিক্ষাবিদের মতে, পরীক্ষা না হলে ছাত্র-ছাত্রীরা মানসিক কষ্ট পাবে। কারণ দীর্ঘদিন ধরে তারা প্রস্তুতি নিয়েছিল। করোনা সংক্রমণের ভয় আছে। সেটাকে বাঁচিয়ে যদি ভোটগ্রহণ করা যায়, তাহলে পরীক্ষা নেওয়া চেষ্টা করা হল না কেন? প্রশ্ন তোলেন পবিত্র সরকার (Pabitra Sarkar)। তবে একই সঙ্গে তিনি জানান, যেহেতু দিল্লি বোর্ড আইসিএসই-সিবিএসই পরীক্ষা বাতিল করেছে, আরো বেশ কয়েকটি রাজ্য তাদের বোর্ডের পরীক্ষা বাতিল করেছে, সে কারণে সারাদেশে এবছর পরীক্ষার মূল্যায়ন নিয়ে একটি অভিন্ন সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। তাতে ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যতে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে সুবিধা হবে।

মীরাতুন নাহার: বরিষ্ঠ এই শিক্ষাবিদের মতে, জনমতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়াটা গণতান্ত্রিক সরকারের একটি অত্যন্ত ইতিবাচক পদক্ষেপ। তবে, এ ক্ষেত্রে অভিভাবকদের মতামত কী সেটার উপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত। একইসঙ্গে এই সিদ্ধান্ত বেশ কিছুদিন আগে জানিয়ে দিলে ভালো হতো বলে মন্তব্য করেছেন মীরাতুন নাহার (Mitatun Nahar)। তাঁর মতে, অফলাইন পরীক্ষা পদ্ধতিই আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থা চালু রয়েছে। ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক- সবাই এই পদ্ধতির সঙ্গেই অভ্যস্ত। এক্ষেত্রে পরীক্ষা না নিয়ে কীভাবে মূল্যায়ন করা হবে? সেটা নির্দিষ্ট করা অত্যন্ত জরুরি। মীরাতুন নাহার বলেন, এই মূল্যায়নের উপর পরীক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ জীবন নির্ভর করছে। সে ক্ষেত্রে তাদের যেন এই করোনাকালের পরীক্ষার্থী বলে ভবিষ্যতে কোনও বিড়ম্বনায় মধ্যে পড়তে না হয় সেদিকটা গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত।

মানিক ভট্টাচার্য: মুখ্যমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন তিনি। তাঁর মতে, করোনার সময় ছাত্র-ছাত্রীদের শাস্তির কথা মাথায় রেখে পরীক্ষা না নেওয়াটা অত্যন্ত যুক্তিযুক্ত হয়েছে। দক্ষ শিক্ষাবিদরা সঠিক পদ্ধতিতে মূল্যায়ন করে ফল প্রকাশ করবেন বলে আশা প্রকাশ করেন মানিক ভট্টাচার্য (Manik Bhattacharya)।

অচিন্ত্য বিশ্বাস: প্রফেসর অচিন্ত্য বিশ্বাসের (Achintya Biswas) মতে পরীক্ষা একেবারে বাতিল না করে। কোনও বিকল্প পথে পরীক্ষা নিলে পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে বেশি ভালো হতো। তিনি উল্লেখ করেন, করোনাকালে লেখাপড়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে রাজ্যের উচ্চমাধ্যমিকের পড়ুয়াদের ট্যাব বা স্মার্টফোন কেনার টাকা দেওয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে এর মাধ্যমেই পরীক্ষার্থীদের অনলাইন পরীক্ষা নিলে সেটা আগামী দিনের জন্য ভালো হতো। তবে পরীক্ষা বাতিল হলেও, যাঁরা পরীক্ষা দিতে চান, সংক্রমণ কমলে তাঁদের সেই সুযোগ দেওয়ার পক্ষে প্রফেসর অচিন্ত্য বিশ্বাস।

আরও পড়ুন:এপিজে হাউসের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে লড়ছে দমকলের ৮ টি ইঞ্জিন

Advt

Previous articleএপিজে হাউসের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে লড়ছে দমকলের ৮ টি ইঞ্জিন
Next articleআগামী ৪ দিন রাজ্যজুড়ে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিল আবহাওয়া দফতর