ভোট পরবর্তী সময়ে বিজেপির সাংগঠনিক বৈঠকের পর সব্যসাচী দত্ত পরোক্ষে সেই আত্মসমালোচনার পথেই হাঁটলেন। মুকুল রায় ঘনিষ্ঠ এই দলবদলু বিজেপি নেতা সব্যসাচী দত্ত স্বীকার করে নিলেন নরেন্দ্র মোদি-অমিত শাহদের ভাষা বুঝতে পারেননি বাংলার মানুষ। একইসঙ্গে বিধাননগরের পরাজিত বিজেপি প্রার্থীর বিলম্বিত উপলব্ধি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিপক্ষে কোনও বিকল্প মুখ ছিল না গেরুয়া শিবিরের। ফলে এই জোড়া কারণেই দলের ভরাডুবি বলে মনে করেন করলেন সব্যসাচী।
তাঁর কথায়, ”মানুষের সঙ্গে ভাষা আদান-প্রদানের একটা বড় মাধ্যম। আমরা যে ভাষায় কথা বলতে অভ্যস্ত, যে ভাষায় সারাক্ষণ কথা বলি, সেই ভাষায় আদানপ্রদানের দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব অনেক ভালো ভালো কথা বলেছেন। সাধারণ মানুষ ও গ্রাম বাংলার মানুষ তা বুঝতেই পারেননি। আমাদেরও ব্যর্থতা আমরা বোঝাতে পারিনি। বুথে বুথে যাওয়ার কথা ছিল। নির্বাচনী ইশতেহার কথা মানুষকে বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছি আমরা।”
অন্যদিকে, মমতার বিরুদ্ধে বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী কে, সেটা নিয়েও ভোটাররা ধন্দে ছিলেন। বাংলার নির্বাচনে মোদিই ছিলেন গেরুয়া শিবিরের প্রচারমুখ। কিন্তু তিনি তো আর মুখ্যমন্ত্রী হবেন না, তাই পদ্ম শিবিরের এই স্ট্রাটেজি ধোপে টেঁকেন বলেই মানেন করেন সব্যসাচী। দলবদলু এই নেতার কথায়, “২০১৯ লোকসভা ভোটে রাজ্যে ১৮টি আসন পেয়েছিল বিজেপি। তখন দেশের নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদি মুখ ছিলেন। বিধানসভার ভোটে নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ, জেপি নাড্ডারা যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হবেন না, তা সবাই জানত। অন্যদিকে, স্বীকৃত ও পরীক্ষিত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ১০ বছরে তাঁর সরকারের কাজ ভালো বা খারাপ দুটোই আছে। কিন্তু ১০ বছর উনি মুখ্যমন্ত্রী। উল্টো দিকে আমাদের মুখ কই কেউ জানতো না।”
ঘটনা চক্রে এদিন যে উপলব্ধির কথা সব্যসাচী দত্ত শোনালেন, বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের প্রচারে এই বিষয় বা ইস্যুগুলো নিয়েই বিজেপিকে আক্রমণ করেছিল শাসক দল। যেমন, সব্যসাচী কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ভাষার কথা বলছেন, ঠিক এই বিষয়টি নিয়েই “বহিরাগত” তত্ত্ব খাড়া করেছিল তৃণমূল। আবার বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী কে?এমন প্রশ্ন তুলেও গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে প্রচারে ঝাঁজ বাড়িয়ে ছিলেন ঘাসফুল শিবিরের নেতা-নেত্রীরা।
আরও পড়ুন- মুমূর্ষ করোনা রোগীদের অক্সিজেন বন্ধ করে মক ড্রিল! ২২ আক্রান্তের মৃত্যুর অভিযোগ