উঠলো স্থগিতাদেশ, উচ্চ-প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ করতে পারবে রাজ্য

হাই কোর্ট

রাজ্যের স্বস্তি৷

উচ্চ-প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় জারি করা অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ শুক্রবার প্রত্যাহার করলো হাইকোর্ট ৷ এর ফলে ঘোষণামাফিক উচ্চ-প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ করতে পারবে রাজ্য সরকার৷ নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু করতে আর কোনও আইনি বাধা রইলো না।

এদিন উচ্চ-প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে জারি করা অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ তুলে নিলেন হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়৷ এদিনের রায়ে কয়েক দফা নির্দেশের পাশাপাশি রাজ্য এবং স্কুল সার্ভিস কমিশনকে বিশেষ একটি পরামর্শও দিয়েছেন বিচাপতি৷ ওই পরামর্শে বিচারপতি বলেছেন, যারা ২০১৬ থেকে এই নিয়োগপ্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছিলেন, তাঁরা ইতিমধ্যেই ৫ বছর পার করে দিয়েছেন৷ বয়সের কারণে এবার যদি তাঁরা যদি চাকরি না পান, তাহলে পরবর্তীকালে তাঁদের আর চাকরির সুযোগই থাকবেনা। গত ৫ বছর ধরে যারা আটকে আছেন, সেক্ষেত্রে শুধুমাত্র তাঁদের পরবর্তী নিয়োগপ্রক্রিয়ার অংশ নেওয়ার জন্য বয়সে ৫ বছরের ছাড় দেওয়ার পরামর্শও দিয়েছেন বিচারপতি।

আরও পড়ুন-ঢাকার কারখানায় বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ড, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫২

প্রসঙ্গত, গত ৩০ জুন হাইকোর্ট এই স্থগিতাদেশ জারি করে রাজ্যকে ফের তালিকা প্রকাশ করতে নির্দেশ দিয়েছিলো৷ ওই নির্দেশে বলা হয়েছিলো, চাকরিপ্রার্থীদের মোট প্রাপ্ত নম্বর, বিষয়ভিত্তিক নম্বর সহ বিস্তারিত তথ্য দিতে হবে সেই তালিকায়। পাস করার পরও, ইন্টারভিউ তালিকা থেকে যাঁদের নাম বাদ যাচ্ছে, তাঁদেরও নম্বর প্রকাশ করতে হবে। আবেদন খারিজের কারণও জানাতে হবে স্কুল সার্ভিস কমিশনকে। সেই অনুযায়ী পূর্ণাঙ্গ ইন্টারভিউয়ের তালিকা প্রকাশ করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন। একইসঙ্গে যাঁদের নাম ইন্টারভিউয়ের তালিকা থেকে বাদ পড়েছে তাঁদের নাম প্রকাশ করেছে কমিশন। এদিন বিচারপতির সামনে সেই তালিকা পেশ করেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (AG) কিশোর দত্ত৷ AG আদালতে বলেন, এই লিস্ট ইলেকট্রনিক প্রক্রিয়ার সাহায্য নিয়ে করা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, ভুল হওয়ার সম্ভাবনা কম৷ তালিকা প্রকাশের ক্ষেত্রে রাজ্যের ভূমিকায় সন্তোষ প্রকাশ করেছে আদালত।

বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ :

◾আদালতের এই নির্দেশিকার ২ সপ্তাহের মধ্যে স্কুল সার্ভিস কমিশন প্রকাশিত এই তালিকা সম্পর্কে যদি কারো অভিযোগ থাকে, তাঁরা কমিশনের কাছে ব্যক্তিগতভাবে প্রত্যেকে আবেদন জানাতে পারবেন।

◾আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে এই আবেদন জানাতে হবে।

◾আবেদনকারীরা কমিশনে ই-মেইল অথবা সরাসরি আবেদন জানাতে পারবেন।

◾সেই অভিযোগের নিষ্পত্তি করতে
কমিশনের ন্যূনতম সচিব পদমর্যাদার কোনও আধিকারিক প্রত্যেক আবেদনকারীর বক্তব্য শুনবেন।

◾কারো মাধ্যমে নয়, সরাসরি আবেদনকারীদের মুখ থেকেই তাঁদের বক্তব্য শুনতে হবে।

◾পরবর্তী ১২ সপ্তাহের মধ্যে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।

◾২০১৬ থেকে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আদালত রাজ্য সরকার ও কমিশনকে অনুরোধ জানাচ্ছে, এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বিলম্বের কারণে যে সব আবেদনকারীর বয়স ৫ বছর অতিক্রান্ত হয়ে গিয়েছে, নিয়োগের ক্ষেত্রে তাঁদের বিষয়টি যেন বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয় এবং তাদের বয়সের ছাড় দেওয়া হয়। এই ছাড় ৪৫ বছর বয়স পর্যন্ত প্রযোজ্য হবে।

◾রাজ্যে অনেক আবেদনকারী রয়েছেন যারা এই চাকরির দিকে তাকিয়ে রয়েছেন৷ হাজার হাজার চাকরিপ্রার্থী, যাদের ৫ বছর ইতিমধ্যে অতিক্রান্ত হয়ে গিয়েছে৷ বয়সের কারণে এবার যদি তাঁরা যদি চাকরি না পান, তাহলে পরবর্তীকালে তাঁদের আর চাকরির সুযোগ থাকবেনা। আদালত আশা করছে, রাজ্য সরকার ও কমিশন এই বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে ভেবে দেখবেন।

◾এর পরেও কোনও আবেদনকারীর কোনও অভিযোগ থাকলে বা কমিশনের গাফিলতি থাকলে, আদালতের দরজা খোলা আছে।

◾ কোনও অযোগ্য প্রার্থী যদি তালিকা নিয়ে অভিযোগ করেন, সে ক্ষেত্রে কমিশন চাইলে তাঁকে জরিমানাও করতে পারে৷

 

Previous articleঢাকার কারখানায় বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ড, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫২
Next articleস্বাস্থ্যসাথী কার্ডেই বেসরকারি হাসপাতালে জটিল অস্ত্রোপচার, সুস্থ কিশোরী