বিরাটিতে তৃণমূল কর্মী খুনে মূল অভিযুক্তের সঙ্গে এক ফ্রেমে শুভেন্দু-অর্জুন

বিরাটিতে তৃণমূল কর্মী খুনের ঘটনায় আরও চাপে পড়ল বিজেপি। ঘটনার পর রাজ্যের মন্ত্রী তথা এলাকার বিধায়ক চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য সরাসরি অভিযোগের আঙুল তুলেছিলেন গেরুয়া শিবিরের দিকেই। এরপর ঘটনায় জড়িয়ে গেল রাজ্যের দুই বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী ও অর্জুন সিংয়ের নামও। ঘটনার পর বিজেপির এই দুই নেতার একটি ছবি সামনে এসেছে। সেই ছবিতে তাদের সঙ্গে বিরাটি তৃণমূল কর্মী খুনে মূল অভিযুক্ত বাবুলাল সিংকেও দেখা যাচ্ছে। ফলে অভিযুক্ত বাবুলালের সঙ্গে বিজেপি নেতাদের যোগাযোগ স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। এখন বিজেপি কোনওভাবেই এই ঘটনার দায় এড়াতে পারছে না।

প্রসঙ্গত, একুশে জুলাই তৃণমূলের শহিদ দিবসের রাতে এক তৃণমূল কর্মীর খুনের ঘটনায় উত্তপ্ত হয় উত্তর ২৪ পরগনার বিরাটি। গত বুধবার রাতে বিরাটির বণিক মোড়ের ঘটনা। মৃত তৃণমূল কর্মীর নাম শুভ্রজিৎ দত্ত ওরফে পিকুন, বয়স ৩৮। তাঁকে গুলি করে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই তাঁকে খুন করেছে বলে অভিযোগে সরব হয়েছে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। এলাকায় পুলিশ পিকেট বসানো হয়।

স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ঘটনার তীব্র নিন্দা করে বলেছেন, ঘটনার পর থেকে বিরোধীরা তৃণমূলের গোষ্টদ্বন্দ্বের যে অভিযোগ করছেন তার কোনও ভিত্তি নেই। তৃণমূলে কোনও গোষ্ঠী নেই। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্রে তিনি হেরে গিয়েছিলেন। কিন্তু একুশের নির্বাচনে প্রায় আঠাশ হাজার ভোটে জিতে তিনি ফের বিধায়ক হন। দলে যদি কোনও গোষ্ঠী থাকতো তাহলে তা সম্ভব হত না বলেই জানান চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।

তিনি আরও বলেন, এখানে আমাদের প্রতিটি কর্মী এক হয়ে কাজ করেন তাই আমরা এই সাফল্য পেয়েছি। ঘটনার পর যে বাবুলালের নাম উঠে এসেছে তাকে নিয়ে তিনি বলেন, এই বাবুলালকে সবাই সিপিএমের আমল থেকে দুষ্কৃতী হিসেবেই চেনে। গোটা ঘটনার জন্য দূষ্কৃতীরাই দায়ী, আর তাদের পিছনে রয়েছে বিজেপির মদত।

সূত্রের খবর, ঘটনার সময় শুভ্রজিত দত্ত নামে ওই তৃণমূল কর্মী উত্তর দমদম পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কার্যালয় থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। হঠাৎই বাইকে চড়ে একদল দুষ্কৃতী এসে তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। মাথা ও বুক লক্ষ্য করে চার থেকে পাঁচটি গুলি চালায়। সেখানেই লুটিয়ে পড়েন শুভ্রজিৎ। ঘটনার পরেই এলাকায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। খবর পেয়েই সেখানে যায় নিমতা থানার পুলিশ। উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করার চেষ্টা করে তারা। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ব্যারাকপুর ও বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশ বাহিনীও। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ওই তৃণমূল কর্মীকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ময়নাতদন্তের জন্য পরে তাঁর দেহ আরজি কর হাসপাতালে পাঠানো হয়।

ঘটনার তদন্ত শুরু করে নিমতা থানার পুলিশ। ঘটনায় এলাকার দুষ্কৃতী বাবুলাল সিংয়ের নাম উঠে আসছে। পুলিশ সূত্রে খবর, ওইদিন দুপুরে বাবুলাল সিংকে মারধর করে কয়েকজন। এতে বাবুলালের মাথায় আঘাত লাগে। নিমতা থানার পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। আর সেই রাতেই গুলিবিদ্ধ হন তৃণমূল কর্মী। এই ঘটনার সঙ্গে দুপুরের ঘটনার কোন যোগ রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ইতিমধ্যে ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে পুলিশ।

আরও পড়ুন- পেগাসাস কেলেঙ্কারি এবার আদালতে, তদন্তের আর্জি সুপ্রিম কোর্টে

 

Previous articleপেগাসাস কেলেঙ্কারি এবার আদালতে, তদন্তের আর্জি সুপ্রিম কোর্টে
Next articleউচ্চ মাধ্যমিকে রাজ্যে দশম জলপাইগুড়ির অরিজিৎ