কৌশিকী অমাবস্যার ভক্তশূন্য তারাপীঠ, কোভিড বিধি মেনেই পুজো-আরতি

আজ কৌশিকী অমাবস্যাতে ফাঁকা তারাপীঠ। তারাপীঠ মানেই জনতার ভিড়। মা তারার দর্শনে লক্ষ্য লক্ষ্য দর্শনার্থীর জমায়েত। আর তারপর যদি হয় কৌশিকী আমাবস্য, তাহলে উপচে পড়া ভিড় দেখা যায় তারাপীঠ মন্দির চত্বরে। তবে গত বছরের মতো এ বছরে কৌশিকী আমাবস্যার দিন ভাটা পড়েছে মায়ের মন্দিরে। কারণ মহামারি। তবে প্রতি বছরের মতো এ বারও সেজে উঠেছে তারাপীঠ মন্দির। রীতি মেনে সেবাইতরা পুজো শুরু করেছেন সকাল থেকেই।

কিন্তু করোনা আবহে বীরভূম জেলা প্রশাসনের নির্দেশে, তারামাতা সেবাইত সংঘ এবং তারাপীঠ মন্দির কমিটি ৩ সেপ্টেম্বর থেকে ভক্ত সমাগম বন্ধ রেখেছে। বুধবার পর্যন্ত ভক্তরা যেতে পারবেন না মন্দিরে। তবে, ভক্তদের জন্য অনলাইনে পুজো দেখার ব্যবস্থা করা হয়েছে মন্দির কর্তৃপক্ষের তরফে। বসানো হয়েছে জায়ান্ট স্ক্রিণও। বিগত দেড় দশক ধরে এই কৌশিকী অমাবস্যায় কার্যত বাঁধ ভাঙা মানুষের ভিড় হয় তারাপীঠ মন্দিরে। কোনও কোনও বছর ২ লক্ষ মানুষ পর্যন্ত আসেন পুজো দিতে। তবে এ বছর সেই প্রথায় ছেদ পড়ছে।

মন্দির কর্তৃপক্ষ সূত্রে খবর, প্রথা মেনেই সোমবার সকাল থেকেই মায়ের পুজো শুরু হয়। দুপুরে দেওয়া হয় অন্নভোগ। সন্ধ্যায় কৌশিকী অমাবস্যার প্রধান পুজো। সঙ্গে হোম-যজ্ঞ এবং অন্যান্য আচার অনুষ্ঠান। অমাবস্যার দুপুরে তারা মায়ের জন্য বিশেষ ভোগের ব্যবস্থা থাকে। ভোগে নিবেদন করা হয়, সাত রকমের ভাজা, মাছ, সাদা চালের ভাত, পোলাও, শোল মাছ, সুরা। অমাবস্যা উপলক্ষে সন্ধ্যায় বিশেষ আরতিরও আয়োজনা করা হয়।

কৌশিকী অমাবস্যার অর্থ হল তারা নিশি। এই তিথি তন্ত্র সাধনার এক বিশেষ রাত। অমাবস্যার এই বিশেষ তিথিতে সাধক বামা ক্ষ্যাপা তারাপীঠের মহাশ্মশানের শিমূল গাছের তলায় মা তারার আরাধনা করে সিদ্ধিলাভ করেছিলেন। মনে করা হয়, বিশেষ এই তিথিতে তারাপীঠে তারা মায়ের পুজো করলে সকল মনের ইচ্ছে পূরণ হয়। এই কারনেই কৌশিকী অমাবস্যায় তারাপীঠে হাজার হাজার পূণ্যার্থী আসেন মায়ের আশীর্বাদ পাওয়ার জন্য। এদিন তারাপীঠের শ্মশান এক অন্য রূপ নেয়।

পুরাণে কথিত আছে, অসুরের অত্যাচার থেকে উদ্ধারের জন্য স্বর্গের দেবতারা মহামায়ার তপস্যা শুরু করেন। আরাধনায় সন্তুষ্ট হয়ে মহামায়া দেবী মানস সরোবরের জলে স্নান করে কালো রং ত্যাগ করে কৃষ্ণবর্ণা দেবী কৌশিকীর রূপ ধারণ করেন। সেই রূপেই দেবী শুম্ভ নিশুম্ভ নামের দুই অসুরকে বধ করে দেবতাদের রক্ষা করেন এই তিথিতেই। সেই থেকেই পাপের বিনাশ করার জন্য তারাপীঠ সহ নানান পীঠস্থানে কৌশিকী রূপে পুজো করা হয়, মা কে।

প্রতিবছর তারাপীঠে কৌশিকী অমাবস্যায় ভিড় সামাল দিতে কার্যত হিমসিম খেতে হয় বীরভূম জেলা পুলিশ প্রশাসনকে। বিগত বছরগুলিতে অমাবস্যার প্রায় এক সপ্তাহ আগেই সেখানকার হোটেল ও লজগুলিতে পা রাখার জায়গা থাকত না। দেশের নানা প্রান্ত থেকে লক্ষ লক্ষ দর্শনার্থী ছুটে আসেন।

আরও পড়ুন- “নিম্ন যাহার মেরুদন্ড, বিক্রিত যার হৃদয়…”, ছড়া বেঁধে শুভেন্দুকে কটাক্ষ কুণালের

advt 19

 

Previous articleজীবন দেব, মাথা নোয়াব না: ইডি থেকে বেরিয়ে বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে তোপ অভিষেকের
Next articleভবানীপুর উপনির্বাচন: মুখ্যমন্ত্রীকে রেকর্ড মার্জিনে জেতাতে নামছেন যে সকল তারকা প্রচারক