কিডনি জোগাড় করে দেওয়া হবে। তার জন্য ‘সামান্য’ কিছু টাকা দিতে হবে। ছেলের কিডনির প্রয়োজন মেটাতে ‘সামান্য’ টাকার প্রস্তাবে রাজি হয়ে মুর্শিদাবাদ ফরাক্কা থানার হোম গার্ড গোবিন্দ প্রামাণিক প্রায় ৩৭ লক্ষ টাকা খোয়াতে হয়েছে। এক বছরে ৪৮ টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে এক বছরে মোট ৩৭ লক্ষ ৩৩ হাজার ৯১১ টাকা নিয়েছে প্রতারকরা। যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে , ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর অভিযোগের ভিত্তিতে দুজনকে ঝাড়খণ্ড থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে বৃহস্পতিবার ধৃতদের আদালতে তুলে পুলিশ হেফাজতে আবেদন করে ফরাক্কা থানা পুলিশ। আদালত পুলিশের আবেদনের সাড়া দেয়।
কী ঘটেছিল? শুনুন গোবিন্দ প্রামাণিকের কথায়। তিনি জানান, ছেলে তন্ময় প্রামাণিকের ২০১২ সালে কিডনি সমস্যা দেখা দেয়। তারপর মালদা থেকে শুরু করে কলকাতা, ব্যাঙ্গালোরের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা করান। কিন্তু, ছেলে সুস্থ না হওয়ায় কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা করাতে থাকেন। তারপর একদিন গোবিন্দ বাবুর ফোনে একটি অচেনা নম্বর থেকে ফোন আসে। পরিচয় দেন উদয় প্রতাপ সিং নামে। তিনি গোবিন্দ বাবুকে বলেন আপনার ছেলের তন্ময় প্রামাণিকের কিডনি সমস্যার জন্য চিন্তা করার দরকার নেই। কিডনির ডোনার পাওয়া যাবে। সমান্য কিছু টাকা লাগবে। তাতে গোবিন্দ বাবু রাজি হন। ২০১৭ নভেম্বর সাল থেকে ২০১৮ সাল প্রর্যন্ত ধাপে ধাপে মোট ৪৮ জনের অ্যাকাউন্টে মোট ৩৭ লক্ষ ৩৩ হাজার ৯১১ টাকা নিয়ে নেন।
টাকা দিলেও কিডনি না মেলায় এরপর ফরাক্কা থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। এফআইআরে ওই ৪৮ টি অ্যাকাউন্টের তথ্যও উল্লেখ করেন গোবিন্দবাবু।
যদিও এরই মাঝে ২০২০ সালে ১১ অগস্ট মধ্যরাতে গোবিন্দবাবুর ছেলে তন্ময় প্রামাণিক মারা যান মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপতালে। ছেলের শোকে ২৫ দিন পর মারা যান গোবিন্দবাবুর স্ত্রী।
অবশ্য ২০১৮ সালে ১০ অক্টোবর গোবিন্দ বাবুর অভিযোগের ভিত্তিতে ফরাক্কা থানার পুলিশ ঝাড়খণ্ডের সুফল থেকে রাজকুমার রাম ও সুভাষ কুমার নামে দু’ জনকে গ্রেফতার করে। ধৃতদের জিঞ্জাসাবাদের জন্য জঙ্গিপুর কোর্ট থেকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
