BNCCI: শিল্প মানেই চিমনির ধোঁয়া নয়, বিভিন্ন আঙ্গিকে ভাবার পক্ষে বাণিজ্যমেলায় সায় বিশিষ্টদের

দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতিতেও কিন্তু একটা সৌভাগ্যজনক পরিবর্তন হয়েছে

কোভিড পরিস্থিতির মতো এত বড় ধাক্কা না খেলে বাংলা মিডিয়ার আধুনিকীকরণ হত না। দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতিতেও কিন্তু একটা সৌভাগ্যজনক পরিবর্তন হয়েছে।মঙ্গলবার বেঙ্গল ন্যাশনাল চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি আয়োজিত শিল্প বাণিজ্যমেলায় সেমিনারে সংবাদমাধ্যম শিল্প নিয়ে এমনই মন্তব্য করলেন বিশিষ্ট সাংবাদিক তথা রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ।

তিনি বলেন, আগে মিডিয়ার কথা চিন্তা করলেই মানুষ মুদ্রণ এবং অডিও ভিস্যুয়াল মাধ্যমকে ভাবতেন। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে ডিজিটাল মাধ্যম এসে গিয়েছে। প্রিন্ট থেকে শুরু করে টেলিভিশন মিডিয়ায় এখন বিজ্ঞাপনের অভাব। এখন ডিজিটাল মিডিয়ার সময়। এখন একজন সাংবাদিককে ডিজিটাল মিডিয়ায় কাজ করার জন্য লেখার পাশাপাশি ক্যামেরার মুখোমুখিও দাঁড়াতে হয়।এ প্রসঙ্গে তিনি ই-বুকের কথাও উল্লেখ করেন।

এদিন ‘কোভিড পরবর্তী পরিস্থিতিতে জীবন এবং বিভিন্ন শিল্পের ধারা’ শীর্ষক আলোচনায় ছিলেন বন্দরের চেয়ারম্যান বিনীত কুমার, ব্যাঙ্ক অফ বরোদার ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার প্রদীপ কুমার দাস, অভিনেতা- পরিচালক অরিন্দম শীল, নাট্যতারকা কৌশিক সেন, আই এফ এর জয়দীপ মুখোপাধ্যায়। সঞ্চালক সাংবাদিক গৌতম ভট্টাচার্য। ছিলেন উদ্যোক্তা ডাঃ অর্পণ মিত্র, দেবাশিস দত্ত।

বন্দরের চেয়ারম্যান বিনীত কুমার বলেন, যা পরিস্থিতি তাতে প্রয়োজনে শিল্পের ক্ষেত্রকে বদলাতে হচ্ছে। কোভিড আছড়ে না পড়লে সমাজ কোনওদিনই প্রযুক্তিকে বর্তমান সময়ের মতো করে গ্রহণ করত না।

অভিনেতা পরিচালক অরিন্দম শীল বলেন, সকালে যখন উঠি তখন আমরা নিজেরাও জানিনা সেদিন কাকে আমাদের হারাতে হবে । এমন পরিস্থিতিতে ডিজিটাল মিডিয়া অনেকটাই ডেভেলপ করেছে। এখন ওটিটি প্ল্যাটফর্মে (OTT) সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে। তিনি স্পষ্ট জানান , আমি লকডাউনের সময় আমার প্রোডাকশনগুলো রিপ্রেজেন্টেশন করছিলাম সোশ্যাল মিডিয়ায়। কন্টেন্ট নিয়ে ভাবতে ভাবতে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে কনসেপ্ট চাই, যেটার মাধ্যমে বাড়িতে বসে একটা ছবি তৈরি করতে পারি। উনি আইডিয়া দিলেন। ইউটিউবে দেখতে পাবেন ২৫ মিনিটের ছবি ‘ঝড় থেমে যাবে’। সেই ছবিতে প্রসেনজিৎ, দেব, জিৎ প্রত্যেকেই নিজের বাড়িতে বসে অভিনয় করেছেলন আর আমিও বাড়ি থেকেই পরিচালনা করেছিলাম। অনলাইনে ছবি এডিট হয়েছে, ইউটিউবে আপলোড করা হয়েছে। মাত্র দুই সপ্তাহ সময় লেগেছে ছবিটা তৈরি করতে। টেকনিশিয়ানদের জন্য ৫৫ লক্ষ টাকা তুলতে পেরেছিলাম । ওই টাকা দিয়ে কষ্টে থাকা টেকনিশিয়ানদের বাড়িতে রেশন টুকু অন্তত পৌঁছে দিতে পেরেছি।এরই পাশাপাশি এই প্রসঙ্গে তিনি নেটফ্লিক্স, অ্যামাজনের তথ্য- পরিসংখ্যান তুলে ধরেন।

ব্যাঙ্ক অফ বরোদার ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার প্রদীপ কুমার দাস বলেন, এখন ব্যাঙ্ক লোন পেতে, গাড়ির লোন পেতে , বাড়ির লোন পেতে অনলাইনেই আবেদন করা যায়। সবই ডিজিটাল হওয়ার সুফল।

অভিনেতা কৌশিক সেন বলেন, ডিজিটাল হবেনা, থিয়েটার মানুষ হিসেবে আপনাকে রিপ্রেজেন্ট করে। তাই থিয়েটারের ইন্ডাস্ট্রি হওয়ার দরকার নেই, ইন্ডাস্ট্রির এটা দরকার আছে।

আইএফএর জয়দীপ মুখোপাধ্যায় বলেন, আমাদের চেয়ারের ভ্যালুটা রাখতে হবে। অনেক বেশি কাজ করে মানুষের কাছে পৌঁছাতে হবে। ভালো মানুষকে কাজের মধ্যে ইনভলভড করলে ইন্ডাস্ট্রি ভালোভাবে চলবে। ইন্ডাস্ট্রি ভালোভাবে চললে আমরা সবাই কিছুটা হলেও ভালো থাকবো।
উদ্যোক্তা দেবাশিস দত্ত বক্তাদের সুচিন্তিত মতামতের জন্য ধন্যবাদ জানান। সবমিলিয়ে এদিনের আলোচনায় একটি বিষয় উঠে আসে, আর তা হল -শিল্প মানেই শুধু চিমনি দিয়ে ধোঁয়া ওঠা নয়। বিভিন্ন আঙ্গিকে ভাবা দরকার।

Previous articleAbhishek Banerjee: বিধানসভা ভোটের আগে ফের তিনদিনের গোয়া সফরে গেলেন অভিষেক
Next articleNarendra Modi: তৃণমূলের অভিনব কটাক্ষে জৌলুসহীন মোদির কানপুর মেট্রোর উদ্বোধন