গৃহযুদ্ধে সাফ কংগ্রেস, পাঞ্জাবে ঝড় তুলে ঝাড়ু হাতে এলেন ‘আম আদমি’ ভগবন্ত

পূর্বাভাস ছিল তবে তা যে এমন বিধ্বংসী সাইক্লোন হয়ে উঠবে তা বোধহয় টের পাইনি কেউই। সেটাই হলো। গৃহযুদ্ধে জর্জরিত পাঞ্জাব(Punjab) কংগ্রেসকে(Congress) অবশেষে ছাড়তে হলো ক্ষমতার ব্যাটন। অন্যদিকে নতুন স্বপ্নের অঙ্গীকার নিয়ে পাঞ্জাবের মসনদে বসল ‘আম আদমি’। মুখ্যমন্ত্রী হতে চলেছেন ভাগবন্ত সিং মান।

বৃহস্পতিবার ১১৭ আসন বিশিষ্ট পাঞ্জাবে নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ্যে আসার পর দেখা যায় ৯২ আসন পেয়ে একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে জয়ী হয়েছে কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি(AAP)। অন্যদিকে গোষ্ঠী কোন্দলে জর্জরিত পাঞ্জাবে ক্ষমতাশালী দল কংগ্রেস এবার পেয়েছে মাত্র ১৮ টি আসন। ৪ আসন পেয়েছে আকালি দল, বিজেপি ২ ও অন্যান্য ১। তবে কংগ্রেসের এমন লজ্জাজনক পরাজয়ের পিছনে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের দিকে আঙুল তুলছে রাজনৈতিক মহল। তাদের দাবি, পাঞ্জাবে কংগ্রেস যখন নিজেদের মধ্যে লড়াই করতে ব্যস্ত তখন গোপনে নিজের ভিত শক্ত করে গিয়েছেন আপ।

আরও পড়ুন:৪ রাজ্যে জয়ের পরে বঙ্গ BJP-কে মোক্ষম খোঁচা বিদ্রোহী রীতেশের, কী লিখলেন!

নির্বাচনের ঠিক কয়েক মাস আগে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চরমে উঠেছিল পাঞ্জাবে। বার বার অমরিন্দর সিং বনাম নভজ্যোত্‍ সিংয়ের লড়াইয়ে কংগ্রেস অস্বস্তিতে পড়ে। শেষমেশ পতন ঠেকাতে অমরিন্দর সিংকে মুখ্যমন্ত্রী রেখে সিধুকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি করা হয়। তাতেও থামেনি কোন্দল। তারপর অমরিন্দর সিংকে অপসারিত করে দেওয়া হয় মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার চেষ্টা করেন নভজ্যোত্‍ সিং সিধু পর্যন্ত। শেষে চরণজিত্‍ সিং চান্নিকে মুখ্যমন্ত্রী করে কোনওরকমে পাঞ্জাবে পতন রোধ করেন রাহুল গান্ধী। তবে তখন ঠেকনা দেওয়া গেলেও ২২-এর নির্বাচনে কংগ্রেসের অধঃপতন আটকানো গেল না।

ভোটের ফল বলছে, পঞ্জাব জুড়ে আপ ঝড়ে বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা চরণজিৎ সিংহ চন্নি দু’টি আসনেই হেরেছেন। আপ প্রার্থীরা হারিয়েছেন, উপমুখ্যমন্ত্রী ওমপ্রকাশ সোনি, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি নভজ্যোৎ সিং সিধুকেও। শিরোমণি অকালি দলের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ সিং বাদল এবং তাঁর ছেলে সুখবীরও আপ প্রার্থীদের কাছে হেরেছেন। অন্য দিকে, আপ-এর মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী ভগবন্ত মান এবং বিদায়ী বিরোধী দলনেতা হরপাল সিং চিমা বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন।

পাঞ্জাবের মাটিতে অবশ্য অনেকদিন ধরেই নিজেদের ঘাঁটি শক্ত করেছে আপ। জিততে না পারলেও দু’বার পাঞ্জাবে দ্বিতীয় হওয়ার নজির রয়েছে তাদের। ২০১৪-র লোকসভা ভোটে ওই রাজ্যের ১৩ আসনের মধ্যে অকালি-বিজেপি জোট ৬টি এবং আপ ৪টিতে জিতেছিল। আবার ২০১৭-র বিধানসভা ভোটে ১১৭টি কেন্দ্রের মধ্যে ৭৭টিতে জিতে নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠতা পায় কংগ্রেস। আপ ২০টিতে জিতে হয় দ্বিতীয়। এবার অবশ্য দ্বিতীয় নয় একেবারে সরকারের আসনে বসলো আম আদমি।

Previous articleNovak Djokovic: করোনার টিকা না নেওয়ার কারণে আরও দুই প্রতিযোগিতা থেকে সরে দাঁড়াতে হল জোকোভিচকে
Next articleভোটের ফল বেরোতেই মূল্যবৃদ্ধির ইঙ্গিত মোদির, বললেন যুদ্ধের জেরে বাড়ছে দাম