অভিষেককের কাছে বিধায়কের বিরুদ্ধে নালিশ-চিঠি, প্রমাণ হলে পদত্যাগের চ্যালেঞ্জ তাপসের

চিঠির উপরে লেখা হয়েছে, "বিধায়ক তাপস সাহার হাত হইতে আমাদেরকে বাঁচান"

নদিয়ার তেহট্টের তৃণমূল (TMC) বিধায়ক তাপস সাহার (Tapash Saha) বিরুদ্ধে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ জানিয়ে চিঠি পাঠানো হল দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Bandyopadhyay) কাছে। একটি নয়, তিনজন অভিযোগকারী আলাদা আলাদা তিনটি চিঠি দিয়ে তৃণমূল বিধায়কের নামে অভিযোগ করেছেন। যদিও নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মানতে নারাজ তাপস সাহা। পাল্টালে তাঁর মন্তব্য, অভিযোগ প্রমাণিত হলে তিনি বিধায়ক পদে ইস্তফা দেবেন।

সম্প্রতি তিনটি চিঠি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দফতরে পাঠিয়েছেন নদিয়ার তিনজন বাসিন্দা। পলাশিপাড়া বিধানসভা এলাকা থেকে একটি এবং অন্য দু’টি চিঠি তেহট্ট ও করিমপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে পাঠানো হয়েছে। চিঠির বিষয়বস্তু একই। চিঠির উপরে লেখা হয়েছে, “বিধায়ক তাপস সাহার হাত হইতে আমাদেরকে বাঁচান”। অভিযোগ, ২০১৬ থেকে ‘২১ পলাশিপাড়ার বিধায়ক থাকাকালীন চাকরি দেওয়ার নাম করে তাপস ৫০ লক্ষ টাকা নিয়েছেন। কিন্তু টাকা দিয়েও কারও চাকরি হয়নি। ফলে সেই টাকা ফেরত চান অভিযোগকারীরা। কিন্তু বার বার চাওয়া সত্ত্বেও তাপস এখনও পর্যন্ত টাকা ফেরত দেননি বলে অভিযোগ। টাকা ফেরত না পেলে আত্মহত্যার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। এমনকী, পলাশিপাড়া, তেহট্ট এবং করিমপুরের চাকরি করে দেওয়া বা লাইসেন্স করিয়ে দেওয়ার নাম করে ১৬ কোটি টাকা তুলেছেন তাপস। অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ হিসেবে অভিযোগকারীরা নিজেদের নাম, ঠিকানা এবং ফোন নম্বরও জানিয়েছেন। ২০১৬-তে নদিয়ারই পলাশিপাড়া কেন্দ্র থেকে বিধায়ক হন তাপস। একুশে তেহট্ট বিধানসভার প্রার্থী হন তিনি। সেখান থেকেও জেতেন।

অভিষেককে পাঠানো চিঠিতে নাম থাকা ভবেশ মণ্ডল পলাশিপাড়ার বাসিন্দা। বলেন, তাপস এবং প্রবীর কয়াল নামে এক দালালকে জমি-বাড়ি বিক্রি করে, গয়না বন্ধক দিয়ে চাকরির জন্য ২ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। এখন চাকরি দেওয়ার নাম নেই, টাকাও ফেরত দিচ্ছেন না বিধায়ক।

আরও পড়ুন:দক্ষিণবঙ্গের তীব্র দাবদাহ থেকে নিজেকে ও পরিবারকে কীভাবে রক্ষা করবেন? একগুচ্ছ পরামর্শ নবান্নের

করিমপুর বিধানসভা এলাকায় বাড়ি একেন মণ্ডলের। তিনি বলেন, তাঁর ছেলে আলমগির-সহ কয়েকজনকে চাকরি দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তাপস। তার জন্য ৩৬ লাখ টাকা তুলে দেওয়া হয় বিধায়ককে। কিন্তু অভিযোগ, “কারও চাকরি হয়নি। এমনকী, ওই টাকা ফেরতও দেওয়া হয়নি আমাকে।’’

যদিও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তাপস। বলেন, সব অভিযোগ ভিত্তিহীন। যাঁরা অভিযোগ করছেন, তাঁরা আগে প্রমাণ করুন। “অভিযোগ প্রমাণ হলে বিধায়ক পদ, এমনকী রাজনীতিও ছেড়ে দেব।’’

তিনি জনমানসের অত্যন্ত কাছের মানুষ। দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হয় এমন কাজ করতে তিনি বারবার নিষেধ করেছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীদের। সেই কারণেই তাঁকে ভরসা করে বিধায়কের বিরুদ্ধে নালিশ জানিয়েছেন বাসিন্দারা। এখন সেই নালিশের ভিত্তিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কী পদক্ষেপ করেন সেটাই দেখার।




Previous articleতাপপ্রবাহের জেরে এপ্রিলেই কী গরমের ছুটি? জরুরি বৈঠকে সিদ্ধান্ত নিতে পারে শিক্ষা দফতর
Next articleHabra: তেলের অভাবে হাবরা ডিপো থেকে বন্ধ বাস পরিষেবা