মহানগরীর বুকে পাখিদের বাসা নিয়ে এক অভিনব কর্মশালার আয়োজন

৫টি বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান থেকে ৫০ জনেরও বেশি শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেনI  যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, অ্যামিটি বিশ্ববিদ্যালয় কলকাতা,সিস্টার নিবেদিতা বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতা, ওম দয়াল কলেজ অফ আর্কিটেকচার, উলুবেরিয়া এবং টেকনো ইন্ডিয়া ইউনিভার্সিটি, কলকাতা কর্মশালায় অংশ নিয়েছিলেন।

পাখিদের কুহুতান আজ হারিয়ে গেছে কোথায়, কারণ হারিয়েছে পাখিদের বাসস্থান। সভ্যতার গতি যত দ্রুত হয়েছে অবলুপ্ত হতে থেকেছে অমূল্য কিছু জিনিস। তবু আজও কিছু মানুষ আর কিছু মানসিকতা সেগুলোকে ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগী হয় তার প্রমাণ মিলল কলকাতার(Kolkata) বুকে।


কোলকাতা সোসাইটি ফর কালচারাল হেরিটেজ(Kolkata Society for cultural heritage), আই অ্যাম কোলকাতা, মার্লিন গ্রুপের(Merlin group) একটি সি.এস.আর. ইনিশিয়েটিভ, এনার্জি এফিসিয়েন্ট বিল্ট এনভায়রনমেন্ট ল্যাব এবং আর্কিটেকচার বিভাগ, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়( Jadavpur University), কলকাতা-র সহযোগিতায় ২০ মে ২০২২, সকাল ৯:৩০টা থেকে বিকেল ৫:৩০টা পর্যন্ত এক দিনব্যাপী এক কর্মশালার আয়োজন করা হয়, যাদবপুর ইউনিভার্সিটির আর্কিটেকচার ডিপার্টমেন্টের (Architecture Department) কর্মশালা ঘরে। শহুরে এলাকায় পাখির আশ্রয়ের জন্য বাসস্থানের ধারণা তৈরি করা এবং উপযুক্ত কঠিন বর্জ্যের দ্বারা প্রোটোটাইপ (Prototype) তৈরি করাই হলো এই কর্মশালার উদ্দেশ্য।

কলকাতা শহরে পাখির বাসা তৈরি করা একটি প্রয়োজনীয় কার্যকলাপ হতে পারে বাস্তু বাড়ি নির্মাণের ক্ষেত্রে। কেএসসিএইচ এই প্রকল্পের জন্য নিউটাউন, এ.এ. ব্লক থেকে কঠিন বর্জ্য সংগ্রহ করেছে –এটি মার্লিন গ্রুপের সি.এস.আর. ইনিশিয়েটিভ। কর্মশালায় মোট ১৫ কেজি কঠিন বর্জ্য ব্যবহৃত হয়েছে।  বর্তমান গবেষণার মাধ্যমে এই প্রথম  কলকাতা শহরে পাখির একটি অনুমান করার চেষ্টা করা হয়েছিল এই কর্মশালায়। ১০ জন পরামর্শদাতা কর্মশালা পরিচালনা করেন। শ্রী সাকেত মোহতা(Saket Mohota) , এমডি মার্লিন গ্রুপ এবং শ্রী সৌরভ মুখোপাধ্যায় (কে এস সি এইচ -এর কর্নধার )ছাড়াও সন্ধ্যায় অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন যেমন, ডঃ কল্যাণ রুদ্র, চেয়ারম্যান – পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড, এবং ড. রাজেশ কুমার আইপিএস – সদস্য সচিব – পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ, ডাঃ. মইনাক ঘোষ  ডক্টর মৈনাক ঘোষ (বিভাগীয় প্রধান,আর্কিটেকচার বিভাগ,যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়),অধ্যাপক চন্দন মজুমদার (ডিন, ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগ, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়), এবং স্থপতি দিলীপ চট্টোপাধ্যায়।. এই পাখি ঘর কর্মশালা সভার আহ্বায়ক ছিলেন অধ্যাপক মধুমিতা রায়।

৫টি বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান থেকে ৫০ জনেরও বেশি শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেনI  যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, অ্যামিটি বিশ্ববিদ্যালয় কলকাতা,সিস্টার নিবেদিতা বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতা, ওম দয়াল কলেজ অফ আর্কিটেকচার, উলুবেরিয়া এবং টেকনো ইন্ডিয়া ইউনিভার্সিটি, কলকাতা কর্মশালায় অংশ নিয়েছিলেন।পাখিরা শহরে তাদের প্রিয় গাছে উড়ে বেড়াত, তবে তারা শহরের সেই গাছ আর খুঁজে পায় না সেভাবে। এখন তারা কংক্রিটের বিল্ডিংয়ের বিভিন্ন অংশে বিশ্রাম নেয়। আয়োজকরা জানান যে  এই কর্মশালায়  শহরের প্রখ্যাত তরুণ পেশাদার স্থপতিদের দ্বারা শিক্ষার্থীদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। তারা উদ্ভাবনী ডিজাইন নিয়ে এসেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে এই পাখিদের আবাসস্থল করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। “আমরা ভবিষ্যতে স্কুল ছাত্রদেরও সম্পৃক্ত করার পরিকল্পনা করছি এবং এটিকে এভিয়ান প্রজাতির শান্তিপূর্ণ জীবনযাপনের আন্দোলনে পরিণত করার পরিকল্পনা করছি” বলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের অধ্যাপক মধুমিতা রায়।

মার্লিন গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাকেত মোহতা বলেন, ” পাখি, আমাদের বাস্তুতন্ত্রের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ যেখানে আমরা সবাই একে অপরের সাথে সংযুক্ত। আমাদের ভবনগুলিতে পাখি-বান্ধব স্থাপত্যের সন্ধান করা সময়ের প্রয়োজন, যাতে এভিয়ান প্রজাতি এবং মানব জনসংখ্যা সম্প্রীতিতে বসবাস করতে পারে। মার্লিন থেকে আমরা আমাদের প্রকল্পগুলিতে বায়োফিলিক স্থাপত্যের উপর ফোকাস করব এবং আমাদের প্রকল্পগুলিতে এই কর্মশালা থেকে কিছু পাখি-বান্ধব আবাসস্থল অন্তর্ভুক্ত (incorporate)করার চেষ্টা করব”।

কে এস সি এইচ-এর প্রতিষ্ঠাতা, সৌরভ মুখার্জি বলেন, “এই ধরনের কর্মশালা অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস তৈরিতে কঠিন বর্জ্য পদার্থের গুরুত্ব বুঝতে সাহায্য করবে আগামী প্রজন্মের কাছে। বিভিন্ন পাখির জন্য বিভিন্ন আকারের ঘর প্রয়োজন। ধারণাটি সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করাও গুরুত্বপূর্ণ।”

সাকেত মোহতা, (এমডি মারলিন গ্রুপ এবং আই এম কোলকাতার প্রতিষ্ঠাতা) বলেন, “আবহাওয়া এবং শিকারিদের থেকে সুরক্ষার জন্য এবং নিরাপদে ডিম ফোটানোর জন্য সেই পাখিদেরও আশ্রয় প্রয়োজন। আমরা এই ধরনের প্রকল্পের ধারণার প্রশংসা করি। আগামী দিনে একটি সুস্থ বিশ্বের জন্য আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের কাছে এই দায়িত্ব দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।”



Previous articleবাড়ি ফিরলেন পরেশ, হাজিরা এড়ালেন অনুব্রত, কাল কি যাবেন পার্থ!
Next articleঅভাবনীয় উদ্যোগ পুলিশের: বন্ধ হয়ে যাওয়া স্কুলে অবৈতনিক কোচিং সেন্টার