গ্যাস-হৃদযন্ত্রজনিত সমস্যায় ভুগতেন কেকে, কলকাতায় পা রেখেই অসুস্থতার কথা জানিয়েছিলেন স্ত্রীকেও

প্রথম কনসার্টের পরও অসুস্থতা বোধ করেন গায়ক। গ্যাসের সমস্যা ছিল দীর্ঘদিনের। প্রায়শই গ্যাসের ওষুধ খেতেন

কলকাতার নজরুল মঞ্চে গুরুদাস কলেজের অনুষ্ঠান পারফর্ম করার পর হোটেলে ফিরেই মৃত্যু হয় প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী কেকে-র। নজরুল মঞ্চে অনুষ্ঠান চলাকালীনই প্রচণ্ড গরমে অসুস্থ বোধ করেন তিনি। এরপরই মধ্য কলকাতার হোটেলে ফিরে প্রথমে বমি করেন এবং তারপর সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন শিল্পী। হোটেলের ঘরেই লুটিয়ে পড়েন। তাঁর কপাল ও ঠোঁট থেকে রক্ত ঝড়তে থাকে। তড়িঘড়ি একবালপুরের CMRI হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন শিল্পীকে। কেকে-র ম্যানেজার হিতেশ ভাট জানিয়েছেন, নজরুল মঞ্চ থেকে বের হওয়ার সময়ই গাড়িতে অসুস্থ বোধ করেন শিল্পী। ঠান্ডা লাগছিল বলে গাড়ির এসি বন্ধ করতেও বলেন কেকে। এরপর হোটেলে গিয়েই ঘটে যায় চরম পরিণতি।

মাত্র ৫৩ বছর বয়সী কেকে-এর ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয় SSKM হাসপাতালে।ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট সামনে এসেছে। সেখানে কোনও অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করা যায়নি। বাহ্যিক কোনও আঘাতের চিহ্ন তাঁর শরীরে পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ, কোনও “ফাউল প্লে” হয়নি বলেই ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে কেকে-র মৃত্যুর কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে ‘মায়োকার্ডিয়াল ইনফারকশন’। চিকিৎসার পরিভাষায় যা ‘মায়োকার্ডিয়াল ইনফারকশন’, সেটাকেই সাধারণ ভাবে ‘হার্ট অ্যাটাক’ বলা হয়ে থাকে। হার্টে অক্সিজেনের চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে ভারসাম্যের অভাবেই এই ‘মায়োকার্ডিয়াল ইনফারকশন’ হয়ে থাকে। ৭২ ঘন্টার মধ্যে আসবে ময়নাতদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্ট।

চিকিৎসকরা বলছেন, হঠাৎ করে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার আগে শরীরে কিছু অস্বস্তির লক্ষণ দেখা যায়। যেমন বুকে, পিঠে, এবং শরীরে উপরে অংশে ব্যথা যা বেশ কয়েক মিনিট স্থায়ী হতে পারে বা মাঝেমধ্যেই হতে পারে। তার সঙ্গে শ্বাসকষ্ট, অতিরিক্ত ঘাম, ক্লান্তি ভাব, শরীর হাঁসফাঁস, বমি হতে পারে। এমনকী, সঙ্গাহীন হয়েও যেতে পারে মানুষ। মঙ্গলবার নজরুল মঞ্চে গান করার সময় এবং পরে হোটেলে এই সমস্ত উপসর্গগুলি দেখা দিয়েছিল কেকে-এর শরীরে।

প্রসঙ্গত, কেকে-এর মৃত্যুকে ঘিরে উঠে আসছে অনেক প্রশ্ন। নজরুল মঞ্চে মাত্রাতিরিক্ত ভিড়কে অনেকেই কেকে-র মৃত্যুর জন্য দায়ী করতে চাইছেন। যদিও জানা গিয়েছে, কেকে-র দীর্ঘদিন ধরেই হৃদযন্ত্রজনিত সমস্যা ছিল। সোমবার প্রথম কনসার্টের পরও অসুস্থতা বোধ করেন গায়ক। গ্যাসের সমস্যা ছিল দীর্ঘদিনের। প্রায়শই গ্যাসের ওষুধ খেতেন। ৩০ তারিখ কলকাতায় বসে স্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছিল তাঁর। তখন বলেছিলেন, “আমার কাঁধে এবং হাতে ব্যথা করছে।”

আরও পড়ুন- থানার সামনে আত্মহত্যার চেষ্টা ডাব বিক্রেতার, ত্রাতা হরিশ্চন্দ্রপুরের আইসি

Previous articleথানার সামনে আত্মহত্যার চেষ্টা ডাব বিক্রেতার, ত্রাতা হরিশ্চন্দ্রপুরের আইসি
Next articleবিপাকে ধোনি! প্রাক্তন অধিনায়কের বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর