মহিলা রাষ্ট্রপতি এবং মুসলিম উপরাষ্ট্রপতি? রাজ্যসভায় নাকভি বিদায়ে চর্চা তুঙ্গে

লোকসভা ও রাজ্যসভাতে বর্তমানে কোনও মুসলিম মুখ নেই বিজেপির(BJP)। এবার আর রাজ্যসভায় প্রার্থী করা হয়নি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মুখতার আব্বাস নাকভিকে(Muktar Abbas Nakvi)। ফলস্বরূপ জল্পনা শুরু হয়েছে দেশের উপরাষ্ট্রপতি(Vice Precident) পদে বসানো হতে পারে নাকভিকে। পাশাপাশি এই পদে অন্য আর একটি নামও ঘুরছে। তিনি কেরলের রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খানের নাম। অন্যদিকে রাষ্ট্রপতি(Precident) পদে দক্ষিণ ভারতের মহিলা প্রার্থীর নাম ছিলই। তিনি তেলেঙ্গানার রাজ্যপাল তামিলি সৌন্দরাজন। আর এই নামেই যদি চুড়ান্ত শিলমোহর পড়ে, তবে গোটা ঘটনার পিছনে মহিলা, মুসলিম, দলিতের অঙ্ক দেখছে রাজনৈতিক মহল।

রাজনৈতিক মহলের দাবি, দেশজুড়ে বিজেপির বিভাজনের রাজনীতি লাগাতার ধাক্কা খাচ্ছে। বাংলা-পাঞ্জাবের মতো রাজ্যগুলি তার জ্বলন্ত প্রমাণ। এই পরিস্থিতিতে নিজেদের ধর্মনিরপেক্ষ প্রমাণ করতে মরিয়া মোদি সরকার। জাতপাতের রাজনীতি ব্যবহার করে বিভাজনের থেকে নজর ঘোরানোর চেষ্টা। পাশাপাশি বিজেপির সম্ভাবনাময় মহিলা রাষ্ট্রপতি ও মুসলিম উপ রাষ্ট্রপতির মডেলের পিছনে অবশ্য অন্য আর একটি অঙ্ক প্রকাশ্যে আসছে। তা হল, গরিষ্ঠতা প্রাপ্তি নিয়ে মোদির ঘোরতর সংশয়। দক্ষিণী দলিত মহিলা এবং মুসলিম প্রার্থী দাঁড় করাতে পারলে, ওই ফর্মুলায় বিরোধীদের থেকেও ভোট আদায় করা যাবে। আর এভাবে বিরোধীদের মধ্যেই তৈরি করা যাবে বিভাজন। রাজনীতির এও এক নয়া চাল বিজেপির। তবে রাষ্ট্রপতি এবং উপ রাষ্ট্রপতি পদে এই নামগুলিই চূড়ান্ত হবে কি না, তা নির্ভর করছে নরেন্দ্র মোদি এবং অমিত শাহের উপর। ভূমিকা থাকবে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ প্রধান মোহন ভাগবতেরও। তবে বিজেপি আশাবাদী, এই অঙ্ক তেমন বদলাবে না। কারণ, খুব বেশি হলে কর্ণাটকের রাজ্যপাল থাওয়ার চাঁদ গেহলট চলে আসতে পারেন দৌড়ে। তাহলে তিনিও হবেন বিজেপির অন্যতম দলিত মুখ।

অর্থাৎ, দক্ষিণী প্রার্থীকে সামনে এনে বিজেপি সমঝোতায় ভাঙন ধরানো। ডিএমকে বিরোধী জোটে থাকলেও বিজেপির দক্ষিণী প্রার্থীকেই তারা সমর্থন দিতে বাধ্য হবে বলে মনে করছে বিজেপি। আবার অন্যদিকে, মুখতার আব্বাস নাকভি কিংবা আরিফ মহম্মদ খানকে উপ রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী করা হলে কংগ্রেস সহ বিরোধীরা মুসলিম প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার আগে দু’বার ভাববে। তবে উপ রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জয়ের জন্য বিজেপিকে বিশেষ বেগ পেতে হবে না। কারণ, এই নির্বাচনে শুধু এমপিরাই ভোট দেন। বিজেপির এমপি সংখ্যা বেশি। সুতরাং জয় আসবে অনায়াসে। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে কিন্তু ক্রস ভোটিংয়ের সম্ভাবনা অনেক বেশি। যে কোনও সময় পাকা ঘুঁটি কেঁচে যায়। অতীতেও হয়েছে। বহুবার। তাই সন্ত্রস্ত বিজেপি। পরীক্ষিত ফর্মুলা একটাই—বিভাজন ও জাতপাতের খেলা।




Previous articleবিপাকে ধোনি! প্রাক্তন অধিনায়কের বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর
Next articleRussia Ukraine War: রাশিয়ার আগ্রাসনে ২৪৩ জন ইউক্রেনীয় শিশুর মৃত্যু, জখম ৪৪৬