রেড রোডে মেগা কার্নিভালের আগের দিন জেলায় জেলায় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইউনেস্কোর স্বীকৃতি দানকে স্মরণীয় করে রাখতে কলকাতা-সহ প্রতিটি জেলায় কার্নিভালের আয়োজন করার নির্দেশ দিয়েছেন। সেই মতো শুক্রবার বিভিন্ন জেলায় সাড়ম্বর পালিত হল এই মেগা ইভেন্ট।

শুক্রবার সন্ধ্যায় গোটা রাজ্যের সঙ্গে কোচবিহার শহরে মহাসমারোহে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে পূজো কার্নিভাল অনুষ্ঠিত হল। ইতিমধ্যে রাজ্য সরকার কোচবিহার শহরকে হেরিটেজ শহর হিসেবে ঘোষণা করেছে। পাশাপাশি ইউনেস্কো দ্বারা দুর্গাপূজাকে হেরিটেজ তালিকায় অন্তর্ভুক্তির স্বীকৃতি দেওয়ায় প্রায় ৩০টি পুজো কমিটি ও বিভিন্ন সংস্থা এই পূজা কার্নিভালে অংশ নেয়। শহরের বিশ্ব সিংহ রোডের হরিশপাল চৌপথী সংলগ্ন এলাকায় মঞ্চে প্রদীপ জ্বালিয়ে এই অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন জেলাশাসক পবন কাদিয়ান। এছাড়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি উমাকান্ত বর্মন, জেলা পুলিশ সুপার সুমিত কুমার, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, উত্তরবঙ্গ রাষ্টীয় পরিবহন সংস্থার চেয়ারম্যান পার্থপ্রতিম রায়, কোচবিহার সদর মহকুমার শাসক সেখ রাকিবুর রহমান, অভিজিৎ দে ভৌমিক, আব্দুল জলিল আহমেদ সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এদিন শহরের বিশ্ব সিংহ রোডের মিনাকুমারী চৌপথী থেকে ট্যাবলোর মাধ্যমে শোভাযাত্রা শুরু হয়ে এল.দাস মোড় হয়ে হরিশ পাল চৌপথি সংলগ্ন এলাকায় উদ্যোক্তারা তাদের প্রদর্শনীতে অংশ নেন। শোভাযাত্রা পামতলা মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। তারপর বিভিন্ন ঘাটে প্রতিমা নিরঞ্জন সম্পন্ন হয়।

রাজ্যের অন্যান্য জায়গার মতোই উত্তর দিনাজপুর জেলা সদর রায়গঞ্জ শহরেও শুক্রবার অনুষ্ঠিত হল দুর্গাপূজা কার্নিভাল। যাকে ঘিরে উৎসাহ আর উদ্দীপনায় মেতে উঠেছেন রায়গঞ্জ শহরের মানুষ। এদিন বিকেলে রায়গঞ্জ শহরের শিলিগুড়ি মোড় থেকে শুরু হয় বিশেষ শোভাযাত্রা বা কার্নিভাল। শিলিগুড়ি মোড় পেরিয়ে সুপার মার্কেট সংলগ্ন স্থানে মূল মঞ্চের সামনে অনুষ্ঠিত হয় প্রতিটি পুজো কমিটির পৃথক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এরপর এক এক করে শহরের রাজপথ ধরে বিদ্রোহী মোড় পর্যন্ত যায় এই শোভাযাত্রা। কার্নিভাল। কার্নিভালের নীল সাদা মূল মঞ্চের উল্টো দিকে কমেন্ট্রি বক্স ও ক্যামেরা, ক্রেন ইত্যাদি রাখা হয়। মূল মঞ্চ চত্বরে প্রবেশ, অনুষ্ঠান পরিবেশন ও অনুষ্ঠানস্থল পেরিয়ে যেতে প্রত্যেকটি পুজো কমিটি সর্বাধিক ৫ মিনিট সময় নির্ধারন করা হয়েছিল। কোনোরকম অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে জোরদার করা হয়েছিল নিরাপত্তা ব্যাবস্থা।

দুর্গাপুরে মহাত্মা গান্ধী রোডের মহিলা মহাবিদ্যালয়ের সামনে বিশাল মঞ্চ বেঁধে মূল অনুষ্ঠান হয়। এই কার্নিভালের মূল সুর রাজ্যের মহান কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও ধর্মনিরপেক্ষতার বার্তা তুলে ধরা। শহরের বড় বাজেটের ১৫টি পুজো কমিটি অংশ নেয়। তারা ট্যাবলো নিয়ে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা করে। ছিল জীবন্ত দুর্গার প্রদর্শনী। দুই মন্ত্রী মলয় ঘটক ও প্রদীপ মজুমদার, সাংসদ শত্রুঘ্ন সিনহা, বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়, নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, সুভদ্রা বাউড়ি, এস অরুণ প্রসাদ, সুধীর নীলকান্তম প্রমুখ ছিলেন। রায়বেঁশে, ছৌ, মুখোশনাচ ইত্যাদি দিয়ে সাজানো হয়। পুলিশের মোটরবাইক রোডশোও নজর কাড়ে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলপিতে কার্নিভ্যালে জেলার ২৫টি পুজো কমিটি অংশ নেয়। বিডিও অফিসের সামনে থেকে শোভাযাত্রা শুরু হয়। শেষ হয় কুলপি থানার সামনে। ছিলেন বিধায়ক, জেলাশাসক ও পুলিশ সুপাররা। প্রচুর মানুষ ১১৭ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে ভিড় জমান।

এই প্রথম বীরভূম জেলার সদর শহর সিউড়িতে কার্নিভাল হল। মহকুমাশাসক অনিন্দ্য সরকার জানান, বেণীমাধব স্কুল থেকে শুরু হয়ে কসমো বাজার পেরিয়ে সার্কিট হাউস হয়ে এস পি মোড়ে শেষ হল।

বিকেলে ঝাড়গ্রাম শহরে হল বিসর্জনের বিশেষ শোভাযাত্রা। বহু মানুষের সমাগম হয়। এই উপলক্ষে সাজিয়ে তোলা হয়েছিল শহরের পাঁচমাথা মোড়কে। তৈরি হয় বড় মঞ্চ। সেখানে ছিলেন মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা, সুনীল আগরওয়াল, অরিজিৎ সিংহ, কবিতা ঘোষ তিন বিধায়ক দুলাল মুর্মু, ডা খগেন্দ্রনাথ মাহাতো, দেবনাথ হাঁসদা। ১০টি পুজো কমিটি অংশ নেয়।

শুক্রবার বিকালে অন্যান্য জেলার সঙ্গেও হুগলি জেলাতেও শুরু হয়েছে মহাসমারোহে দুর্গা পূজার কার্নিভাল। এবারের এই কার্নিভালে মোট ২২ টি পূজা অংশ নিয়েছে। চুঁচুড়ার পিপুল পাতি মোড় থেকে অন্নপূর্ণা ঘাট পর্যন্ত দীর্ঘ পথ ধরে সুসজ্জিত বিভিন্ন পুজো কমিটি গুলি তাদের প্রতিমা গুলি। নিয়ে শোভাযাত্রা করে যাচ্ছে অত্যন্ত চিত্তাকর্ষ এবং এবং মনোরম প্রতিমা গুলি নৃত্য গীত সহযোগে শোভাযাত্রা রাস্তার দু’ধারে হাজার হাজার মানুষদের মনোরঞ্জন করে। এদিনের এই কার্নিভালে উপস্থিত ছিলেন চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদার মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী বিধায়ক তপন দাশগুপ্ত বিধায়ক অসীমা পাত্র বিধায়ক অরিন্দম মুইন সহ বিশিষ্টজনেরা এদিনের এই কার্নিভালে জেলা প্রশাসনের বিচারকরা নির্দিষ্ট করবেন অংশগ্রহণকারী থেকে সেরা পুজো কমিটিগুলোকে রবিবার চুঁচুড়া রবীন্দ্রভবনে জেলা তাদের পুরস্কৃত করা হবে প্রসঙ্গত উল্লেখ্য গত কয়েক বছর আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী বিসর্জন শোভাযাত্রা দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন তখন থেকেই তার এই কার্নিভালের চিন্তা এ বছর ইউনেস্কো দুর্গা পুজোকে বিশেষ সম্মান দেওয়া মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছিলেন যাতে জেলায় জেলায় তেও তেও কার্নিভাল হয় তার জন্য আজকে প্রত্যেকটি জেলায় এই অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

আরও পড়ুন- উত্তরকাশীতে মৃ*তের সংখ্যা বেড়ে ২৬, খারাপ আবহাওয়ায় ব্যাহত উদ্ধারকাজ

Previous articleসামান্য ধাক্কা খেল শেয়ারবাজার, ১৭ পয়েন্ট নামল নিফটি
Next articleপুতিন ইউক্রেনে পরমাণু হামলার কথা মোটেই মজা করে বলেন না, সতর্কবার্তা বাইডেনের