সাকেত গ্ৰেফতারের প্রতিবাদে নির্বাচন কমিশনে তৃণমূলের প্রতিনিধিদল

টুইট কোন ইস্যুই নয়। সম্পূর্ণ রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্যই চারদিনের মধ্যে দু’বার গ্রেফতার করা হয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেসের(TMC) জাতীয় মুখপাত্র সাকেত গোখলেকে(Saket Gokhale)। কারণ সাকেতের টুইট কোন সাম্প্রদায়িক হিংসা ছড়ায়নি বা কোনও সম্প্রদায়কে আঘাত করেনি মত তৃণমূল সংসদীয় প্রতিনিধি(parliamentary team) দলের। তৃণমূল কংগ্রেসের সংসদীয় প্রতিনিধি দল নির্বাচন কমিশনারের(Election commissioner) কাছে প্রশ্ন তুলেছেন, সাকেত গোখলেকে গ্রেফতার করা হলে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্বশর্মা এবং বিজেপি নেতা পরেশ রাওয়ালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নয় কেন? সাকেত গোখেলের গ্রেফতার নিয়ে সোমবার নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হল তৃণমূলের সংসদীয় প্রতিনিধি দল। সেখানে তারা স্মারকলিপিও জমা দেন। সৌগত রায়, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রতিমা মণ্ডল, ডেরেক ও ব্রায়েন, সুখেন্দুশেখর রায় এবং মৌসম বেনজির নূর ছিলেন প্রতিনিধি দলে। সকাল সাড়ে ১১টায় নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হন তৃণমূল সাংসদরা।

কমিশনে তৃণমূলের তরফে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, পরেশ রাওয়াল, হিমন্ত বিশ্ব শর্মাদের মন্তব্য নিয়ে কোনও পদক্ষেপ না করে মাত্র একটি টুইট করার জন্য কেন অন্যায়ভাবে দলের নেতা সাকেত গোখলেকে গ্রেফতার করা হল। নির্বাচন কমিশন বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট চাওয়া হবে বলেও তৃণমূলের প্রতিনিধি দলকে আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার।

উল্লেখ্য, গুজরাট নির্বাচনের প্রচারে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা বলেন, নরেন্দ্র মোদির মত শক্তিশালী প্রধানমন্ত্রী না হলে দেশের প্রতিটি শহরে আফতাবের জন্ম হবে। প্রসঙ্গত, দিল্লিতে লিভ ইন পার্টনার আফতাব পুনাওয়ালার হাতে খুন হন শ্রদ্ধা ওয়াকার। ঘটনায় লাভ জিহাদের অভিযোগ তুলে এই বিতর্কিত মন্তব্য করেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী । যদিও সে ক্ষেত্রে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি নির্বাচন কমিশনের তরফে। একইভাবে অভিনেতা এবং বিজেপি নেতা পরেশ রাওয়াল বাঙালিদের মৎস্যপ্রীতি নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন। সমস্ত বিরোধী দল একযোগে সরব হলেও, নীরবই ছিল কমিশন। দুটি বিষয়ই তুলে ধরা হয়েছে তৃণমূলের তরফে। অন্যদিকে, মোরবি সেতু বিপর্যয় এবং তারপর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির গুজরাট সফরের খরচ নিয়ে একটি টুইট শেয়ার করায় গ্রেফতার হন সাকেত গোখলে । প্রথমে জয়পুরে এবং পরে আহমেদাবাদ থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে গুজরাট পুলিশ।

তৃণমূলের দাবি, একটি এফআইআরে কখনও কোনও অভিযুক্তকে দু’বার গ্রেফতার করা যায় না। কমিশনে স্মারকলিপি জমা দেওয়ার পর সাংবাদিকদের তৃণমূলের লোকসভার মুখ্যসচেতক কল্যণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, তাঁদের তরফে নির্বাচন কমিশনে তিনটি পয়েন্ট তুলে ধরা হয়, “৬ ডিসেম্বর সাকেতকে গ্রেফতার করা হয়। দুদিন পুলিশ হেফাজতে থাকার পর তাঁর জামিন হয়। একই ঘটনায় দুটি এফআইআর হল কীভাবে?” তিনি জানান, একই ঘটনায় দুটি এফআইআর হতে পারে না। কেবলমাত্র প্রথম এফআইআরের সঙ্গে যুক্ত করা যেতে পারে প্রয়োজনে। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় আরও জানান, “যে আধিকারিক গ্রেফতার করতে এসেছিলেন, তাঁর কাছে কোনও গ্রেফতারি পরোয়ানা ছিল না।” তাঁর প্রশ্ন, নিজের এক্তিয়ারভুক্ত এলাকার বাইরে গিয়ে কীভাবে গ্রেফতার কতে পারে মোরবি থানার পুলিশ? তিনি প্রশ্ন তোলেন “কার নির্দেশে এগুলো হয়েছে, দ্বিতীয় এফআইআর কী করে হল?” কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, যে টুইটের জন্য সাকেত গোখলেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল, তার কোনও জায়গায় আইন অমান্য করা হয়নি।

Previous articleনির্ভয়া তহবিলের টাকায় বিধায়কদের নিরাপত্তার খরচ! বিতর্কে মহারাষ্ট্র সরকার
Next article‘হেক্সা’ জয় হল না, বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গিয়ে আবেগঘন বার্তা নেইমারের