‘সীমান্ত প্রহরী গঙ্গা’: জলসীমান্তে নজরদারিতে চালু মহিলা সীমান্ত চৌকি

জল সীমান্তেও সব সময় নজরদারি চালায় বিএসএফ। সেই নজরদারি আরও কঠোর করতে সুন্দরবন অঞ্চলের জল সীমান্তে বিএসএফের আরও নতুন ছ’টি ভাসমান সীমান্ত চৌকি তৈরি হয়েছে। যাকে বলা হয়, ‘ফ্লোটিং বিওপি’।

ভারত-বাংলাদেশ জলসীমান্তে সুন্দরবনে (Sundarbon) চালু হল সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সম্পূর্ণ মহিলা পরিচালিত সীমান্ত চৌকি। মাস ছয়েক আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah) সুন্দরবন এলাকায় ভারত-বাংলাদেশ জল সীমান্তে নজরদারি বাড়াতে ছটি অত্যাধুনিক ভাসমান সীমান্ত চৌকির উদ্বোধন করেন। এবার তারই একটি পরিচালনার দ্বায়িত্ব দেওয়া হল BSF-এর মহিলা রক্ষীদের।

‘সীমান্ত প্রহরী গঙ্গা’ নামে ওই আউটপোস্টে কমান্ডিং অফিসার থেকে জওয়ান-সহ সমস্ত কর্মীরাই মহিলা। সাব ইন্সপেক্টর সীমার নেতৃত্বে সেখানে মোতায়েন রয়েছে এক প্লাটুন মহিলা বিএসএফ প্রহরী। আউট পোস্টের কমান্ড্যান্ট সীমা জানালেন, সীমান্ত পথকে ব্যবহার করে মাদক, অস্ত্রশস্ত্র, কাঠ ও সুন্দরবনের বিলুপ্ত পশুদের চোরাচালান ও অবৈধ পাচার রুখতে দিনরাত কঠোর নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা।সুন্দরবনের শ্বাপদসংকুল অরণ্যে ঘেরা নদীপথে দিনের আলোর মতো রাতের অন্ধকারেও চলে টহলদারি। সেই কাজে বাহিনীর পুরুষ জওয়ানদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধে মিলিয়ে কাজ করছেন মহিলা বাহিনী।

শুধু স্থলসীমান্ত নয়, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে রয়েছে বিস্তীর্ণ আন্তর্জাতিক জলসীমান্তও। এ রাজ্যের সুন্দরবন অঞ্চলেই রয়েছে ওই সীমান্ত। স্থলপথে যেভাবে পাচার, অনুপ্রবেশ হয়, জল সীমান্ত দিয়েও সেরকম হয় বলে অভিযোগ। তাই জল সীমান্তেও সব সময় নজরদারি চালায় বিএসএফ। সেই নজরদারি আরও কঠোর করতে সুন্দরবন অঞ্চলের জল সীমান্তে বিএসএফের আরও নতুন ছ’টি ভাসমান সীমান্ত চৌকি তৈরি হয়েছে। যাকে বলা হয়, ‘ফ্লোটিং বিওপি’। মাস ছয়েক আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এগুলির উদ্বোধন করেন।

দুই দেশের মধ্যে জল সীমান্তে কোনও ‘কাঁটাতার’ নেই। দুই দেশের মধ্যে জলের উপরে রয়েছে ‘অদৃশ্য সীমানা’। জলের উপরেই একটি নির্দিষ্ট জায়গাকে সীমান্ত বলে চিহ্নিত করা হয়। সেই সীমার একপাশে ভারতের দিকে নিরাপত্তায় থাকেন বিএসএফ জওয়ানরা এবং বাংলাদেশের দিকে থাকে বিজিবি (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ)। বিএসএফ সূত্রে খবর, বর্তমানে সুন্দরবনের জলসীমান্ত এলাকায় বিএসএফের মোট তিনটি ভাসমান সীমান্ত চৌকি রয়েছে। তবে, সেগুলি আকারে ছোট। প্রায় ১৮-১৯ বছর আগে ওই তিনটি বিওপি চালু হয়েছিল। ফলে, তাতে অত্যাধুনিক পরিষেবা কিছুটা কম রয়েছে। তাছাড়া, তিনটি ফ্লোটিং বিওপি’র মাধ্যমে গোটা সুন্দরবন অঞ্চলের সম্পূর্ণ জল সীমান্ত পাহারা দেওয়া মুশকিল হচ্ছিল। কাঁটাতার না থাকায় নজরদারি চালাতেও সমস্যা হচ্ছিল। তাই আরও নতুন ছ’টি ফ্লোটিং বিওপি’র জন্য কেন্দ্রের কাছে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। বছর তিনেক আগে কেন্দ্রীয় সরকার তার অনুমোদন দেয়। তারপরই কাজ শুরু হয়। এগুলির নির্মাণে ৩০০ কোটি টাকারও বেশি বরাদ্দ হয়েছিল। বিএসএফ জানিয়েছে, নতুন ছ’টি ফ্লোটিং বিওপি সম্পূর্ণ অত্যাধুনিক। ফলে, অনেক নতুন পরিষেবা এখানে যুক্ত হয়েছে। আকারেও এগুলি আগের তিনটি বিওপি’র থেকে অনেক বড়। প্রতিটিতে মোতায়েন আছেন এক প্লাটুন করে বিএসএফ জওয়ান। ভাসমান চৌকি গুলো থেকে লাগাতার নজরদারি চালানো হয়। এ ছাড়া দিনরাত প্রতি টি চৌকিতে থাকা দুটি করে স্পিড বোট থেকে চলে লাগাতার টহলদারি।বিএসএফের সাউথ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ারের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক তথা অ্যাসিস্ট্যান্ট কমান্ড্যান্ট প্রদীপ কুমার জানিয়েছেন, নতুন আউট পোস্ট গুলি তৈরি করার পর পাচার এবং চোরা চালানের সমস্যা অনেকটাই কমেছে।

 

Previous articleভারতে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে কিডনির অসুখ, সচেতনতায় হাঁটল বিধাননগর
Next articleKiff সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানে বাংলাকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যাবে: টুইট মুখ্যমন্ত্রীর