কেন্দ্রের জালিয়াতি, ফ্রি রেশনের নামে মানুষকে বঞ্চনা, বিরাট লাভ

ফ্রি রেশন দেওয়ার নামেও সাধারণ মানুষকে বঞ্চনা করছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পের আওতাধীন রেশন গ্রাহকদের আগামী ১ বছর স্বাভাবিক বরাদ্দের খাদ্যশস্য বিনামূল্যে দেবে কেন্দ্রীয় সরকার। এর জন্য ‘প্রধানমন্ত্রী গরিব অন্ন সুরক্ষা যোজনা’ নামে নতুন প্রকল্প চালু করছে বিজেপি সরকার। বিনামূল্যে এই খাদ্যশস্য রেশন গ্রাহকদের তুলে দিতে কেন্দ্রের অতিরিক্ত খরচ হবে ১৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। তবে কেন্দ্রের সার্বিক পরিকল্পনায় বাড়তি খরচের ধাক্কা নয়! বরং সুকৌশলে এই বিপুল টাকা সাশ্রয়ের ব্যবস্থাই করছে বিজেপি সরকার। কিন্তু তা সম্ভব কীভাবে?


আরও পড়ুন:দেশীয় উৎপাদন বাড়াতে অপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানিতে শুল্ক বৃদ্ধির পথে কেন্দ্র
অতিমারিকালে ২০২০ সালের এপ্রিল মাস থেকে চালু হয় ‘প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনা’। সেই প্রকল্পটি চলতি ডিসেম্বরেই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এতে গ্রাহকদের মাথাপিছু ৫ কেজি করে অতিরিক্ত খাদ্যশস্য বিনা পয়সায় দেওয়া হত। এই প্রকল্প বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সরকারের বছরে প্রায় ১ লক্ষ ৬৩ হাজার কোটি টাকা বেঁচে যাবে। অর্থাৎ, প্রকল্পের নামে ‘কল্যাণ’-এর জায়গায় ‘সুরক্ষা’ শব্দটি যুক্ত করে কেন্দ্রের প্রায় ১ লক্ষ ৪৫ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হতে চলেছে। একই সঙ্গে চব্বিশের লোকসভা ভোটের মুখে নতুন একটি প্রকল্প চালুর ‘কৃতিত্ব’ জাহির করতে পারবে কেন্দ্রের শাসক শিবির। অথচ, মানুষ আগে যে সুবিধা পেত, তার থেকে বঞ্চিত হবে। ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে, স্রেফ শব্দের মারপ্যাঁচে মানুষকে বোকা বানানোর পরিপূর্ণ আয়োজন করেছে মোদি সরকার।

নয়া প্রকল্প চালু করতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার জন্য যে নোট প্রস্তুত করা হয়েছিল, তাতেই খরচ সংক্রান্ত তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। আরও বলা হয়েছে, আগামী দিনে খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পের আওতায় থাকা মানুষের সংখ্যা কমবে। এখন ৮১ কোটি ৩৫ লক্ষ গরিব মানুষ এই প্রকল্পের উপভোক্তা। এই সংখ্যা ২০১০-১১ সালের সমীক্ষার ভিত্তিতে নির্ধারিত। এখন যে সমীক্ষা হবে, তাতে গরিব মানুষের সংখ্যা কমবে বলেই ধারণা। সেক্ষেত্রে ভবিষ্যতে এই প্রকল্পের খরচও কমবে।

এনএফএসএর আওতাধীন রেশন গ্রাহকদের এতদিন স্বাভাবিক বরাদ্দের চাল ৩ টাকা, গম ২ টাকা ও মোটা দানাশস্য ১ টাকা কেজি দরে সরবরাহ করত কেন্দ্রীয় সরকার। জানুয়ারি থেকে তা বিনা পয়সায় দেওয়া হবে। পরিবহণ ও রেশন ডিলারদের কমিশনের আর্থিক দায় কেন্দ্র বহন করায় কেন্দ্রের খরচ ১৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বাড়বে বলে মন্ত্রিসভার নোটে বলা হয়েছে। মোট খরচ হবে প্রায় ১ লক্ষ ৮২ হাজার কোটি টাকা। সংসদে এক প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্র জানিয়েছে, ২০২১-২২ আর্থিক বছরে প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ প্রকল্পটি চালাতে ১ লক্ষ ৪৭ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে। ২২-২৩ আর্থিক বছরেও প্রকল্পটি চালু থাকলে খরচ ১ লক্ষ ৬০ হাজার কোটি টাকা ছাড়াত।
অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলারস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসু বলেন, বরাদ্দ কমিয়ে নয়া প্রকল্পে গরিব মানুষকে বঞ্চনা করল মোদি সরকার। আর পশ্চিমবঙ্গের গ্রাহকরা তো এতে কিছুই অতিরিক্ত পাবেন না। কারণ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিশেষ ভর্তুকি দিয়ে ২০২০র এপ্রিল থেকে বিনা পয়সায় চাল-গম দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন।

Previous articleHighland Park: পানশালায় বচসার জেরে শহরে শ্যু*টআউট! গ্রেফতার ১   
Next articleনিয়োগ দুর্নীতি: ১৬৯৮ জন Group D কর্মীকে নোটিস ধরানোর নির্দেশ শিক্ষা দফতরের