পরেশ কন্যার পরিবর্তে চাকরি পাওয়া ববিতাকে নিয়েও এবার বিতর্ক! কিন্তু কেন?

ববিতার আবেদনের ফর্মে দেখা যাচ্ছে, তিনি গ্র্যাজুয়েশনে ৮০০ নম্বরের মধ্যে পেয়েছেন ৪৪০, অর্থাৎ শতকরা ৫৫ শতাংশ। তবে এসএসসির দাবি, আবেদনের সময় ববিতা "৬০ শতাংশ বা তার বেশি" বলে নিজের নম্বর উল্লেখ করেছেন

কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ঘুরপথে নিয়োগ হওয়া তদানীন্তন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতার চাকরি কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। পরিবর্তে স্কুল শিক্ষকতার চাকরি পেয়েছিলেন অনেক আইনি লড়াই করা “যোগ্য” ববিতা সরকার। গত কয়েক মাসে রাজ্যজুড়ে অন্যতম চর্চিত নাম ববিতা সরকার। নিজের অধিকার বুঝে নিতে তাঁর দীর্ঘ আইনি লড়াইকে কুর্নিশ জানিয়েছে বঙ্গবাসী। কিন্তু এবার সেই ববিতার আবেদনের বৈধতা নিয়েই একগুচ্ছ প্রশ্ন উঠে গেল।

আরও পড়ুন:ফিরে দেখা ২০২২ : আইন-আদালত

পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতার চাকরি চলে যাওয়ার পর কোচবিহারের মেখলিগঞ্জের একটি স্কুলে উচ্চমাধ্যমিক স্তরে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষিক পদে নিযুক্ত হয়েছিলেন ববিতা সরকার। এবার তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, স্কুল সার্ভিস কমিশনের কাছে আবেদনের সময় নিজের গ্র্যাজুয়েশনের নম্বর বাড়িয়ে দেখিয়েছেন ববিতা। ফলে বাড়তি নম্বরের সুবিধায় র‌্যাঙ্কিংয়ে অনেকটা এগিয়ে এসে চাকরি পেয়েছেন তিনি।

ঠিক কী ঘটেছে? ববিতার আবেদনের ফর্মে দেখা যাচ্ছে, তিনি গ্র্যাজুয়েশনে ৮০০ নম্বরের মধ্যে পেয়েছেন ৪৪০, অর্থাৎ শতকরা ৫৫ শতাংশ। তবে এসএসসির দাবি, আবেদনের সময় ববিতা “৬০ শতাংশ বা তার বেশি” বলে নিজের নম্বর উল্লেখ করেছেন। এর ফলে অ্যাকাডেমিক স্কোর মোট ৩১-এর পরিবর্তে হয়েছে ৩৩। এ প্রসঙ্গে স্কুল সার্ভিস কমিশনের ভূমিকাও সমালোচনার ঊর্ধ্বে নয় বলেই মনে করছেন চাকরিপ্রার্থীরা। তাঁরা বলছেন, কমিশনেরও তাঁকে নিয়োগ দেওয়ার আগে সমস্ত ডকুমেন্ট যাচাই করে নেওয়া উচিত ছিল। নদীয়ার বাসিন্দা রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ওবিসি-বি ক্যাটিগরির ওয়েটিং লিস্টে ৪৯ নম্বরে থাকা প্রার্থী দীপঙ্কর কুণ্ডু আগাগোড়াই আন্দোলনে রয়েছেন। তিনি বলেন, “নিজের সম্পর্কে যে কোনও তথ্য সাবমিট করার আগে ঘোষণাপত্রে সই করতে হয়। তাতে প্রার্থীকে বলতে হয়, তিনি যা যা তথ্য দিয়েছেন, সেগুলি তাঁর মতে সঠিক। কোনও তথ্য ভুল থাকলেও প্রার্থী সেই দায় নিচ্ছেন। তাই এক্ষেত্রে ববিতার চাকরি পাওয়া দূর অস্ত, তাঁর প্রার্থীপদই বাতিল হওয়ার কথা।”

স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার বলেন, এই অভিযোগের কথা শুনেছি। অনেক ক্ষেত্রেই আবেদনে ভুলভ্রান্তি ধরা পড়েছে। তবে, এই ঘটনাটি নিয়ে আমরা নিজে থেকে কোনও পদক্ষেপ নেব না। আদালত বললে বা লিখিত অভিযোগ হলেই আমরা তাঁর তথ্যাদি ফের মিলিয়ে দেখব। অন্দরের খবর, এই দু’নম্বরের জন্যই তাঁর র‌্যাঙ্ক ২১ থেকে ৪০-এ গিয়ে ঠেকবে। এ প্রসঙ্গে অবশ্য এখনও পর্যন্ত ববিতা সরকারের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, অঙ্কিতা অধিকারীকে বরখাস্ত করে সেই চাকরি ববিতাকে দেয় আদালত। শুধু তাই নয়, অঙ্কিতাকে ৪৩ মাসের বেতনবাবদ রয়েক লক্ষ টাকাও ফেরতও দিতে হয় ববিতাকে। এই নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এবার সেই ববিতার আবেদন নিয়ে প্রশ্ন ওঠে গেল।

Previous articleভয়াবহ গাড়ি দুর্ঘ*টনায় আহত ঋষভ পন্থ
Next articleঅভিষেকের পছন্দের ২০২২ সেরা গানের তালিকায় অরিজিৎ-এর তিনটি গান