কলকাতায় গঙ্গারতির প্রস্তুতি বিবেকানন্দের জন্মতিথিতেই, ঘোষণা মমতার

বারাণসীর ধাঁচে কলকাতায়(Kolkata) গঙ্গার বুকে আরতির পরিকল্পনার কথা আগেই ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। বুধবার আউট্রাম ঘাটে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করলেন আগামীকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার থেকে বাবুঘাটে গঙ্গার বুকে সন্ধ্যা আরতির প্রস্তুতি শুরু হবে। স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিন উপলক্ষ্যে এই বিশেষ দিনকে বেছে নেওয়া হয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতার এই গঙ্গারতির(Ganga Arati) নাম দেওয়া হয়েছে ‘আরতি বন্দনা’।

বুধবার গঙ্গার ঘাট পরিদর্শন করেন মুখ্যমন্ত্রী। খতিয়ে দেখেন কথায় গঙ্গা আরতি করা যায়। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম এবং অরূপ বিশ্বাস। এরপর আউট্রাম ঘাটে ট্রানজিট পয়েন্টের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। মঞ্চ থেকে মমতা জানান, বারাণসীর ধাঁচে কলকাতার গঙ্গার ঘাটে আরতি করা হবে। যেহেতু বারাণসীর মতো ঘাট নেই। তাই আপাতত চৌকির উপর ব্যারিকেড করে গঙ্গা আরতির বন্দোবস্ত করা হবে। পরিকল্পনা না করে আগুন বা জলের কোনও কাজ করা সম্ভব নয়। তাই প্রস্তুতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আগামিকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার স্বামী বিবেকানন্দের জন্মতিথিতেই শুরু হবে গঙ্গা আরতির প্রস্তুতি। সবরকম প্রস্তুতি সম্পূর্ণ হলে তারপরই করা হবে গঙ্গা আরতি। আলো দিয়ে সাজানো হবে গঙ্গার ঘাট। প্রশিক্ষিতরা করবেন গঙ্গা আরতি। দর্শক হিসাবে অংশ নিতে পারবেন সকলেই। ভবিষ্যতে বেলুড় ও দক্ষিণেশ্বরেও গঙ্গা আরতি হোক, তা চান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বুধবার গঙ্গাসাগর মেলার উদ্বোধন উপলক্ষ্যে আউট্রাম ঘাটের অনুষ্ঠানে গঙ্গারতির পাশাপাশি গঙ্গাসাগর মেলার উন্নয়নের বিষয়টিও তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, “আগেই তুলনায় বর্তমানে গঙ্গাসাগরের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। গঙ্গা সাগরে এখন হেস্টহাউস তৈরি হয়েছে, সরকার ১২০০ বায়ো টয়লেট তৈরি করেছে। আমরা এখানে হোগলার ঘর বানিয়েছি ১০ লক্ষের বেশি, যাতে বাইরের মানুষ এসে থাকতে পারে।” পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী জানান, “আগে মেলার আসার জন্য ট্যাক্স দিতে হত, আমরা সেটা তুলে দিয়েছি। মেলায় যারা আসছেন তাঁদের সঙ্গে কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে ৫ লক্ষ টাকার বিমা করে দিয়েছি আমরা।” পাশাপাশি কুম্ভ মেলার উদাহরণ টেনে এবং এই মেলাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেওয়ার দাবি জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “কুম্ভ জাতীয় মেলা। সেখানকার যাবতীয় খরচ করে কেন্দ্র। কুম্ভ রেলের সঙ্গে যুক্ত, গঙ্গাসাগর নয়। গঙ্গাসাগরে প্রত্যেককে ৪-৫ ঘণ্টা জল পেরিয়ে যেতে হয়। একসঙ্গে তো ৪-৫ লক্ষ মানুষ ভেসেলে যেতে পারে না। এত ভেসেলের ব্যবস্থাও করা যায় না। তবে প্রশাসন পুলিশ সর্বশক্তি দিয়ে তীর্থযাত্রীদের সাহায্য করে এখানে। রামকৃষ্ণ মিশন, ভারত সেবাশ্রম, ও এনজিওরা যথেষ্ট ভালো কাজ করছে তীর্থযাত্রীদের সাহায্যে। পাশাপাশি কোনও রকম সমস্যা হলে, পুলিশ, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, ফায়ার ব্রিগেড রয়েছে। জায়গায় জায়গায় স্বাস্থ্য শিবির বানিয়েছি আমরা।”

এছাড়াও যে কোনও রকম গুজব ঠেকাতে সংবাদমাধ্যম ও তীর্থযাত্রীদের সহযোগিতার বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, “সংবাদমাধ্যমকে বলব টিআরপি বাড়ানোর জন্য এমন কিছু করবেন না যাতে মানুষ সমস্যায় পড়েন। সম্প্রতি বন্দে ভারতে পাথর ছোড়ার ঘটনায় গুজব ছড়ানো হয়েছিল। এটা বিহারে হয়েছিল, বাংলায় নয়।” এছাড়াও তীর্থযাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “কিছু কিছু সময় মেলায় গুজব ছড়ানো হয়, মানুষ আতঙ্কিত হয়। এঁদের বিশ্বাস করবেন না। সরকার মাইকে ঘোষণা করে সেগুলো শুনবেন। অন্যের কথা শুনে আতঙ্কিত হবেন না।”

Previous articleSSC Recruitment : ৫১ জন চাকরিপ্রার্থীকে নিয়োগপত্র দিল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ !
Next articleপ্রকাশ্যে জ*ঙ্গি যোগ! কর্ণাটকে NIA-এর জালে আরও ২ স*ন্ত্রাসী