দুর্নীতির টাকা গিয়েছে গুজরাট-মধ্যপ্রদেশ-অসমে: মেঘালয় থেকে শাহকে তোপ অভিষেকের

খনি দুর্নীতি নিয়ে সরগরম ভোট মুখর মেঘালয়(Meghalaya)। চাপে পড়ে অমিত শাহকে(Amit Shah) মেঘালয়ে এসে বলতে হয়েছে দুর্নীতির তদন্ত হবে। এই কয়লা দুর্নীতির বিরুদ্ধেই শুক্রবার মেঘালয় থেকে শাহের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়(Abhisekh Banerjee)। কড়া সুরে তিনি জানালেন এই দুর্নীতির টাকা গিয়েছে গুজরাট-মধ্যপ্রদেশ-অসমে। শুধু তাই নয়, রীতিমতো চ্যালেঞ্জ ছুড়ে জানালেন, প্রকাশ্যে এই কথা বলছি আমি। আমাকে ইডি(ED) নোটিস পাঠাক। আমি ইডি দফতরে যাব। সেখান থেকে বেরিয়ে ফের এই কথা বলব আমি। এটাই তৃণমূল(TMC)।

শুক্রবার শিলংয়ের পুলিশ বাজারে তৃণমূলের জনসভায় শুরু থেকেই এনপিপি ও বিজেপির বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক ভূমিকায় দেখা যায় অভিষেককে। তিনি বলেন, “ভোটের সময়ে মেঘালয়ে প্রচারে আসছেন জেপি নাড্ডা, অমিত শাহরা। গত ৫ বছরে মেঘালয়ে যে দুর্নীতি হয়েছে তাঁর তদন্তের বিষয়ে কিছু বলেছেন এই বিজেপি নেতারা?” একইসঙ্গে তিনি যোগ করেন, “অমিত শাহ বললেন খনি দুর্নীতি নিয়ে পূর্ববর্তী সরকারের বিরুদ্ধে তদন্ত হবে। কিন্তু কার বিরুদ্ধে তদন্ত হবে? শেষ ৫ বছর তো আপনারাই ক্ষমতায়। অমিত শাহ কি অমিত শাহের বিরুদ্ধে তদন্ত করবেন। আমি আপনাদের বলছি, এই দুর্নীতির টাকা গিয়েছে গুজরাট, মধ্যপ্রদেশ, অসমে। প্রকাশ্যে বলছি, এখানে ১০ টা ক্যামেরা আছে, ইডি আমাকে নোটিস পাঠাক। আমি তদন্তে সহায়তা করব। ইডি দফতর থেকে বেরিয়ে আবার একই কথা বলব। এটাই তৃণমূল। যারা কারও কাছে মাথা নত করে না।”

একইসঙ্গে মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমাকে দিল্লি ও গুয়াহাটির ‘পুতুল’ বলে কটাক্ষ করে অভিষেক বলেন, “অসম পুলিশের গুলিতে মেঘালয়ের ৫ জন কৃষক মারা গেল। কেন মুখ্যমন্ত্রী কোনও তদন্ত করলেন না? তদন্ত ছাড়ুন, কেন একটা নোটিস দেওয়া হল না। কারণ উনি দিল্লি ও গুয়াহাটির কাছে নিজের শিরদাঁড়া বিক্রি করেছেন। উনি জানেন কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হলে ওনার বাড়িতে ইডি-সিবিআই নোটিস পাঠাবে। আপনারা কি এই পুতুল সরকার চান। না এমন কাউকে চান যে আপনাদের জন্য লড়াই করবে?” বাংলার উদাহরণ টেনে তিনি আরও বলেন, “মেঘালয়ের মতো বাংলাতেও একাধিক রাজ্যের বোর্ডার রয়েছে কিন্তু কারও ক্ষমতা নেই গুলি চালাবে। কারণ বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মেঘালয়েও এমন কাউকে দরকার যার শিরদাড়া শক্ত। যে এখানের মানুষের অধিকারের জন্য লড়াই করবে।”

এছাড়াও তৃণমূলকে ভোট দেওয়ার আবেদন জানিয়ে অভিষেক বলেন, “তৃণমূলকে ভোট দেওয়ার অর্থ মেঘালয়ের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনা, ভবিষ্যৎকে সুরক্ষিত করা। সারা দেশ থেকে মানুষ এখানে বেড়াতে আসেন। পর্যটন ক্ষেত্রকে আমরা এখানে আরও উন্নত করব। তৃণমূলকে ভোট দেওয়ার অর্থ রাজ্যের সার্বিক উন্নয়ন। এখানকার মুখ্যমন্ত্রীর নিজের কেন্দ্রের লোডশেডিং, রাস্তায় আলো নেই। যে মুখ্যমন্ত্রী নিজের কেন্দ্রের আলো দিতে পারেন না সে কীভাবে রাজ্যের উন্নয়ন করবে। উনি নিজের ফেসবুক-টুইটারে তৃণমূলকে গালি দিচ্ছেন, আমি বলব আপনি ৫ বছরের রিপোর্ট কার্ড আনুন আমরাও আনি দেখা যায় কথায় কত উন্নয়ন হয়েছে। এছাড়াও তিনি বলেন, TMC-কে ভোট দেওয়ার অর্থ শুধু NPP-কে উৎখাত নয়, মানুষের সার্বিক উন্নতি ও চাকরির সুযোগ। মঞ্চে দাঁড়িয়ে তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, ক্ষমতায় এলে মেঘালয়ে ১ মাসের মধ্যে চালু হয়ে My Card ও We Card প্রকল্প। মেঘালয়ে একটাও মেডিক্যাল কলেজ নেই। তৃণমূল ক্ষমতায় এলে মেঘালয়ের ১২ জেলার হিসেবে অন্তত ১২ টি মেডিক্যাল কলেজ তৈরির প্রতিশ্রুতি দেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

Previous article‘স্বচ্ছতা’ নিয়ে প্রশ্ন! আদানি কাণ্ডে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের ‘কেন্দ্রীয় শর্ত’ খারিজ সুপ্রিম কোর্টের 
Next articleজামিনের আবেদন নেই, ফের ১৪ দিনের জেল হেফাজত অনুব্রতর