চাপে পড়ে নতিস্বীকার স্কুলের! সরকারের মধ্যস্থতায় চাকরি ফিরে পেয়েও ‘অভিমানী’ সৌমিত্র

তবে এদিন পাশে থাকার জন্য সাংবাদিকদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান সৌমিত্র। তিনি জানান, দেরিতে হলেও স্কুলের প্রধান যে ওনার ভুল বুঝতে পেরেছেন এটা জেনে সত্যি ভালো লাগছে। ওনাকে ধন্যবাদ। তবে সৌমিত্র সাফ জানিয়েছেন স্কুল পুনর্বহাল করলেও তিনি পুনরায় ওই স্কুলে কাজ করবেন কী না তা ‘চিন্তাসাপেক্ষ’।

চাপে পড়ে নতিস্বীকার। শেষমেশ এইচআইভি পজিটিভ (HIV Possitive) সৌমিত্র গায়েনকে (Soumitra Gayen) স্কুলে ফেরাতে বাধ্য হল স্কুল কর্তৃপক্ষ। রাজ্য সরকারের উদ্যোগে হারানো চাকরি ফিরে পেলেন সদ্য বিবাহিত যুবক। মঙ্গলবার কলকাতার নিউ সেক্রেটারিয়াট বিল্ডিংয়ে (New Secretariat Building) সাংবাদিক সম্মেলন করে একথাই জানালেন রাজ্যের অ্যাডমিনিস্ট্রেটর জেনারেল অ্যান্ড অফিসিয়াল ট্রাস্টি বিপ্লব রায় (Biplab Roy)। তবে স্কুল কর্তৃপক্ষ চাকরি ফেরানোর কথা জানালেও ওই স্কুলেই ভবিষ্যতে চাকরি করবেন কী না সে বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি সৌমিত্র। এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সমাজসেবী কল্লোল ঘোষও।

তবে এদিন পাশে থাকার জন্য সাংবাদিকদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান সৌমিত্র। তিনি জানান, দেরিতে হলেও স্কুলের প্রধান যে ওনার ভুল বুঝতে পেরেছেন এটা জেনে সত্যি ভালো লাগছে। ওনাকে ধন্যবাদ। তবে সৌমিত্র সাফ জানিয়েছেন স্কুল পুনর্বহাল করলেও তিনি পুনরায় ওই স্কুলে কাজ করবেন কী না তা ‘চিন্তাসাপেক্ষ’। তিনি আরও জানান, তাঁর উপর দিয়ে বিগত কয়েকদিন যে ঝড় বয়ে গিয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখেনা।

অন্যদিকে, এদিন কিছুটা চাপে পড়ে স্কুলের প্রধান তথা চিকিৎসক রণজিৎ মণ্ডলের (Ranjit Mondal) সাফাই, কিছুটা ভুল বোঝাবুঝির জেরেই এমন ঘটনা ঘটেছিল। তবে রাজ্য সরকারের প্রচেষ্টায় সবকিছু ঠিক হয়ে গিয়েছে। ‘পুত্রসম’ সৌমিত্র চাইলে মঙ্গলবার থেকেই স্কুলে ফের কাজ শুরু করতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি। বিষয়টি জানাজানির পরই শিশুদের পরিবারের মধ্যে শোরগোল পড়ে যায়। আর সেকারণেই নাকি সৌমিত্রকে ‘ছুটি’তে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে প্রকাশ্যে না বললেও এদিন আবেভাবে স্কুলের প্রধান বুঝিয়ে দেন, স্কুলে ফের কাজ ফিরে পেলেও কিছু নিয়মবিধি এবং দূরত্ব বজায় রাখতেই হবে সৌমিত্রকে।

উল্লেখ্য, চলতি মাসের ১২ ফেব্রুয়ারি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন এইচআইভি পজিটিভ সৌমিত্র গায়েন ও সুনীতা যাদব (Sunita Yadav)। কিন্তু বিয়ের পাঁচদিন কাটতে না কাটতেই চরম বিপাকে পড়েন এইচআইভি পজিটিভ দম্পতি। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি দম্পতির মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। একটি বেসরকারি স্কুলে স্পেশ্যাল এডুকেটর (Special Educator) হিসাবে কর্মরত ছিলেন সৌমিত্র। তিনি এইচআইভি পজিটিভ জানার পরই তাঁকে ৯০ দিনের জন্য ‘ছুটি’তে পাঠায় স্কুল। আর স্কুলের এমন সিদ্ধান্তে বিভিন্ন মহলে নিন্দার ঝড় ওঠে। স্কুলের প্রধান রণজিৎ অভিযোগ জানিয়েছিলেন, এইচআইভি পজিটিভ হওয়ার বিষয়টি গোপন করে চাকরি করছিলেন সৌমিত্র। সে কারণেই তাঁকে সাময়িকভাবে কাজ থেকে ‘ছুটি’তে পাঠানো হয়েছে। তবে এখানেই শেষ নয়, বিষয়টি জানাজানি হতেই স্কুলের সমস্ত ‘স্পেশ্যাল চাইল্ড’দের এইচআইভি টেস্ট করানো হয়।

তবে চাকরি থেকে ‘ছুটি’ দেওয়ার বিষয়টির তীব্র নিন্দা জানান, তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান। তিনি বলেন, “এইচআইভি আক্রান্ত তো জন্মসূত্রে। তাঁদের দোষ নয় তো। অথচ তার জন্য চাকরি চলে যাচ্ছে। কেন হবে এটা? এটি ছোঁয়াচে রোগ না। আইনত চাকরি সঠিক। এইচআইভি অ্যান্ড এইডস অ্যাক্ট ২০১৭- এ স্পষ্টভাবে সব বলা আছে। সুনীতা আর সৌমিত্র খোলা মনে সমাজের সামনে পরিচয় গোপন না করে বিয়ে করল। অথচ এই সমাজের যোগ্যতা নেই তাদের মানসিকতাকে স্যালুট করার। সৌমিত্রর কর্মস্থল বারাসাত ভিশন ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট (Vision Welfare Trust) পরিচালিত স্কুলটির সচিব যে সিদ্ধান্ত ওকে জানিয়েছেন, তার তীব্র প্রতিবাদ করছি। অবিলম্বে সৌমিত্রকে কাজে ফেরান তাঁরা।

 

 

 

Previous articleনিজের ডিজাইন করা অভিনব পাড়ের শাড়ি পরে ভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী
Next article৫ জন বিজেপি, ২০০ পুলিশ, ৫০ সংবাদকর্মী! সুপার ফ্লপ “অভিষেকের বাড়ি ঘেরাও” কর্মসূচি