মংপুকে পর্যটন মানচিত্রে নিয়ে এলেন মুখ্যমন্ত্রী

১৯৪৪ থেকে ২০২৩। কম সময় নয়। কারোরই অজানা নয়, রবীঠাকুরের মংপুর বাসভবন ঐতিহাসিকভাবে কতটা গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু শৈল শহর দার্জিলিং থেকে বেশ খানিকটা পাহাড়ের অগোচরে এই ঐতিহাসিক ভবনকে কেন্দ্র করে, একটা সম্পূর্ণ পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলার পরকল্পনা ও বাস্তবায়ন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী করে দেখালেন। মংপুর রনীন্দ্রভবন পর্যটকদের কাছে এখন তীর্থক্ষেত্র হয়ে উঠছে দার্জিলিং জেলার রঙ্গলি রঙ্গলিয়ত ব্লকের রবীন্দ্রনাথের বাসভবনকে নতুনভাবে সাজিয়ে তুলেছে রাজ্য সরকার। মঙ্গলবার ভাষা দিবস উপলক্ষে শিলিগুড়ির অনুষ্ঠান থেকে ভার্চুয়ালি সেই ররীন্দ্র ভবনের গেস্ট হাউস উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। ১৯৩৮ থেকে ১৯৪০ সাল পর্যন্ত দু’বছরে অন্তত ৪ বার মংপুতে এসেছিলেন। এই বাসভবনে বসেই বিশ্বকবি তার একাধিক অমর সৃষ্টি রচনা করেছিলেন। ডক্টর রাধামোহন সেনের আমন্ত্রণেই মংপুতে আসেন তিনি। যদিও বাম আমলে এই ঐতিহাসিক রবীন্দ্র ভবন কার্যত ভেঙে পড়েছিল। কিন্তু মমতার উদ্যোগেই মংপুর রবীন্দ্রনাথের বাসভবন স্বমহিমায় ফিরে আসে। এই ছোট পাহাড়ি মংপু শহরে এতদিন কয়কটা হোমস্টে ছাড়া পর্যটকদের থাকার জন্য কোনও ব্যবস্থাই ছিল না। প্রথমবার রবীন্দ্র ভবনকে কেন্দ্র করে গড়ে তোলা হল গেস্ট হাউস। যার ফলে ট্রাভেল ডেস্টিনেশন হিসেবে মংপু এখন উত্তরবঙ্গের পর্যটন স্থানগুলির মধ্যে বিশেষ জায়গা করে নেবে বলেই মনে করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, ১৯৪১ সালে রবীন্দ্রনাথের প্রয়াণের পর ১৯৪৪ সালে মংপুর বাসভবনকে রবীন্দ্র সংগ্রহশালা হিসেবে গড়ে তোলা হয়।

আরও পড়ুন:অনাড়ম্বরে মংপুতে রবীন্দ্র-স্মরণ
রাজ্য সরকার রবীন্দ্রনাথের বাসভবনের সংস্কারের পাশাপাশি, এবার রবীন্দ্রনাথ অনুরাগীদের থাকার জন্য গেস্ট হাউজ তৈরি করা হয়েছে। যেখানে ২ টো সুইট রুম, ২ টো ডরমিটারি, কনফারেন্স হল, রেস্টুরেন্ট রয়েছে। এছাড়াও ড্রাইভারদের জন্য করা হয়েছে ডরমিটারিও। ২০১৭ সালেই রবীন্দ্রনাথের বাসভবনকে সাজিয়ে তোলার উদ্যোগ নেয় রাজ্য সরকার। কিন্তু পরবর্তী সময়ে পাহাড় অশান্ত হওয়ায় এবং করোনা মহামারীর কারণেই পিছিয়ে যায় সংস্কারের কাজ। দার্জিলিং জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ৩.৪৫ কোটি টাকা খরচ করে রবীন্দ্র ভবনের সংস্কার করা হয়েছে। মোট ১.৫ একর জমির উপর ভবনটিতে রয়েছে।

বিশ্বকবির মিউজিয়াম, অডিটোরিয়াম হল ও পর্যটকদের থাকার জন্য গেস্ট হাউজ। উত্তরবঙ্গের পর্যটনদের সঙ্গে যুক্ত মানুষরা মনে করেছেন, দার্জিলিং জেলায় বিশ্বকবির বাসভবনকে যেভাবে সাজিয়ে তোলা হয়েছে তাতে আরো বেশি সংখ্যক পর্যটকরা মংপুর মত অফবিট জায়গায় সময় কাটাতে আরো বেশি আগ্রহ হবে। সাধারণত এতদিন ধরে পাহাড়ে পর্যটকরা এলেও রবীন্দ্রনাথের বাসভবন তেমনভাবে বাঙালীদের কাছে পরিচিত ছিল না। রাজ্য সরকার রবীন্দ্রভবনকে কেন্দ্র করে গোটা মংপু ও সংলগ্ন এলাকার সার্বিক উন্নয়ন করে তলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, রবীন্দ্রভবনের সামনেই রাজ্য সরকারের হর্টিকালচার দফতরের উদ্যোগে তৈরি হয়েছে ট্রি হাউজ। ২৫ থেকে ৩০ ফুট উপরে সিড়ি বেয়ে দুতলা ট্রি হাউজটি গতবছর ২৩ ডিসেম্বর উদ্বোধন হয়েছে। সবমিলিয়ে কেবল রবীন্দ্র স্মৃতি নয় পর্যটকদের কাছে দার্জিলিং, কার্শিয়াং-এর মতো আরও একটি সুপারহিট পর্যটন কেন্দ্র হয়ে উঠতে দেরি নেই মংপুর।

 

 

Previous articleমুম্বইয়ের কমলা নগরে বি*ধ্বংসী অ*গ্নিকাণ্ড, ঘটনাস্থলে দমকল
Next articleনির্বাচনের আগে আজ মেঘালয়ে সভা মমতা-অভিষেকের