আদানির বিরুদ্ধে ধামাচাপা দেওয়া জালিয়াতি মামলা ফের শুরু করতে হাইকোর্টে এসএফআইও

স্পেশাল ফ্রড ইনভেস্টিগেশন অফিস (এসএফআইও) গৌতম আদানির বিরুদ্ধে এক দশক ধরে চলা ৩৮৮ কোটি টাকার জালিয়াতির মামলায় তদন্ত ফের চালু করার জন্য বম্বে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে

গৌতম আদানির গোষ্ঠী কারচুপি করে তাদের সংস্থাগুলির শেয়ার দর বাড়িয়েছে, অভিযোগ তুলেছিল আমেরিকার লগ্নি নিয়ে গবেষণাকারী সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ। রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পরেই পড়তে থাকে গোষ্ঠীর সংস্থাগুলির শেয়ার দর। বিএসই-তে আদানি ট্রান্সমিশনের দর ৮.৮৭% পড়ে হয় ২৫১১.৭৫ টাকা। আদানি পোর্টস অ্যান্ড সেজ-এর নামে ৬.৩০%, আদানি টোটাল গ্যাসের ৫.৫৯%, আদানি উইলমার ও আদানি পাওয়ারের ৫% করে। আদানি গ্রিন এনার্জির ৩.০৪% ও আদানি এন্টারপ্রাইজ়েসের ১.৫৪%।

আদানি গোষ্ঠীর তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলির এক মাসে ১২ লক্ষ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। এবার আদানি গোষ্ঠীর পুরানো মামলার খোঁজখবর শুরু করেছে সরকারি সংস্থা।স্পেশাল ফ্রড ইনভেস্টিগেশন অফিস (এসএফআইও) গৌতম আদানির বিরুদ্ধে এক দশক ধরে চলা ৩৮৮ কোটি টাকার জালিয়াতির মামলায় তদন্ত ফের চালু করার জন্য বম্বে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে।জানা গিয়েছে, স্পেশাল ফ্রড ইনভেস্টিগেশন অফিস বম্বে হাইকোর্টে গৌতম আদানির বিরুদ্ধে যে মামলাগুলি চলছে সেগুলির ওপর স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের  আবেদন করেছে।

শুনানির সময় বিচারপতি আরজি আওসাত এসএফআইও’র আইনজীবীকে  বলেন যে, পুরো এক বছর ধরে আপনার কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি।অথচ  আপনারা এখন জেগে উঠলেন  কেন?

তথ্য বলছে, ২০১২ সালে  বিশেষ জালিয়াতি তদন্ত অফিস গৌতম আদানি সহ ১২ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে। গৌতম আদানি কেতন পারেখ নামে এক ব্যক্তিকে তহবিল সরবরাহ করেছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এই টাকা দিয়ে বেআইনি কাজ চালানো হতো।২০১৪ সালের মে মাসে, একটি ম্যাজিস্ট্রেট আদালত আদানি এবং অন্যান্য অভিযুক্তকে খালাস করে দেয়। ২৭ নভেম্বর ২০১৯, দায়রা আদালত ম্যাজিস্ট্রেটের সিদ্ধান্ত খারিজ করে। দায়রা আদালত স্বীকার করেছে যে জালিয়াতি তদন্ত অফিস দ্বারা প্রস্তুত করা মামলায়, কেতন পারেখ ৩৮৮ এবং ১৫১ কোটি টাকা লাভবান হয়েছিল।দায়রা আদালতের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বম্বে হাইকোর্টে গৌতম আদানির তরফে আপিল দায়ের করা হয়েছিল। এতে বলা হয়, দায়রা আদালতের সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ ভুল। তাঁর ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে।

আবেদনে বলা হয়, দায়রা আদালতের সিদ্ধান্ত খারিজ করে তাদের অব্যাহতি দিতে হবে।গৌতম আদানির আবেদনটির ওপর বোম্বে হাইকোর্ট ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে সেশন কোর্টের দেওয়া আদেশ ২০২০ এর ১৩ জানুয়ারি পর্যন্ত স্থগিতাদেশ দেয়। পরে তা ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছিল। কিন্তু জালিয়াতি তদন্ত অফিস এর পর হাইকোর্টে আপিল করে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করার কোনও চেষ্টাই করেনি।  এক বছর পর হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের জন্য ফের পদক্ষেপ নিল এসএফআইও।এই মামলায় অভিযুক্তদের মধ্যে আছেন আদানি এন্টারপ্রাইজেস লিমিটেডের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর রাজেশ আদানিও।আগামী ১৮ এপ্রিল মামলাটির চূড়ান্ত শুনানির দিন নির্দিষ্ট হয়েছে।

 

Previous articleআরও ‘নিরাপদ’ জঙ্গল সাফারি! পর্যটকদের জন্য বড় সিদ্ধান্ত নিচ্ছে রাজ্য
Next articleসাগরদিঘিতে মহিলাদের ভয় দেখাচ্ছে কেন্দ্রীয় বাহিনী, চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তৃণমূল প্রার্থীর