বাজেট অধিবেশনে প্রথমবার বক্তৃতাতেই পুরসভার নজর কাড়লেন অয়ন, ঠুকলেন সজলকেও

বাজেট বক্তৃতার শুরুতেই অয়ন চক্রবর্তী মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে পুরসভার বাজেটকে সমর্থন করেন। তিনি মনে করেন, এই বাজেট মানুষকে পরিষেবা দেওয়ার বাজেট। এই বাজেটে পরিষেবার সঙ্গে কোনও আপোষ করা হয়নি

কাউন্সিলর হিসেবে প্রথমবার ভোটে দাঁড়িয়ে বড় মার্জিনে জয়। সেই সাফল্যের পথে হেঁটেই এবার কলকাতা পুরসভার বাজেট অধিবেশনে কাউন্সিলর হিসেবে প্রথমবার বক্তৃতাতেই সকলের নজর কাড়লেন কলকাতা কর্পোরেশনের ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের জনপ্রতিনিধি তরুণ আইনজীবী অয়ন চক্রবর্তী।

আজ, সোমবার কলকাতা পুরসভার বাজেট অধিবেশনে প্রথমদিন শেষ বক্তা ছিলেন তৃণমূল কাউন্সিলর অয়ন চক্রবর্তী। ভরা অধিবেশনে চেয়ারপার্সন মালা রায় থেকে শুরু করে মেয়র ফিরহাদ হাকিম, ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ থেকে শুরু মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার, দেবব্রত মজুমদার, তারক সিং, বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়রা মুগ্ধ অয়নের ভাষণে। অন্যান্য কাউন্সিলরাও টেবিল চাপড়ে উৎসাহ দিলেন তাঁকে। বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে কথার জাগলারিতে তাঁকেও থামিয়ে দিলেন ২৮ নম্বরের তরুণ কাউন্সিলর অয়ন। গোটা বক্তৃতায় একবারের জন্য মনে হয়নি এই প্রথমবার পুরসভার বাজেট অধিবেশনে বক্তব্য রাখছেন তিনি। শরীরী ভাষা থেকে কথার বাঁধন, তথ্য-যুক্তিতে অয়নের বক্তব্য মন কেড়েছে সকলের।

বাজেট বক্তৃতার শুরুতেই অয়ন চক্রবর্তী মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে পুরসভার বাজেটকে সমর্থন করেন। তিনি মনে করেন, এই বাজেট মানুষকে পরিষেবা দেওয়ার বাজেট। এই বাজেটে পরিষেবার সঙ্গে কোনও আপোষ করা হয়নি। এবং এই বাজেট ১৪৪টি ওয়ার্ডেই সমান পরিষেবা প্রদান করার জন্য। অয়ন জানান, প্রথমবার বক্তব্য দেওয়ার জন্য আত্মবিশ্বাস দিয়েছেন মেয়র। নতুন কাউন্সিলর হিসেবে কোনও বিষয় নিয়ে তাঁর কাছে গেলে ফিরিয়ে দেননি।

পানীয় জল, নতুন বুস্টার পাম্পিং স্টেশন, পুরোনোর রক্ষণাবেক্ষণ-এর প্রশংসা শোনা যায় অয়নের গলায়।
মেয়রের দূরদৃষ্টির প্রশংসাও শোনা যায় তাঁর বক্তব্যে। অয়ন মনে করেন এই বাজেটে দুয়ারে পৌর পরিষেবার উপর বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে। সবুজায়ন, দূষণরোধ সহ পুরসভার একের পর এক কাজের প্রশংসা করেন অয়ন। তিলোত্তমা কলকাতা এখন আলো ঝলমলে, বাম জমানায় যা অন্ধকারে ডুবে থাকতো বলেও বাজেট অধিবেশনে দাবি করেন অয়ন।

পাশাপাশি তাঁর ২৮ নম্বর নিয়েও মেয়রকে কিছু প্রস্তাব দেন তরুণ কাউন্সিলর। মূলত, তাঁর ওয়ার্ডে বস্তি ও জলের উন্নয়ন নিয়ে আরও কিছু প্রস্তাব দেন অয়ন চক্রবর্তী। তাঁর ওয়ার্ডের মধ্যে দিয়ে সার্কুলার ক্যানেলের দু’পাশ জবর দখল হয়ে রয়েছে বলে অধিবেশনে জানান অয়ন চক্রবর্তী। গঠনমূলক বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে অয়ন চক্রবর্তী ক্যানেল রোড নিয়ে এক সুন্দর রূপরেখা তুলে ধরেন। সেচ দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করে যদি এই রাস্তাকে ব্যবহারের উপযোগী করা যায় তারও প্রস্তাব দেন অয়ন। এই রাস্তা চালু হলে কলকাতার মধ্যে সার্বিকভাবে একটি সেতুবন্ধন হতে পারে বলেই মনে করেন তিনি। তাঁর দাবি, রাস্তা হলে উত্তর-মধ্য-দক্ষিণ কলকাতার মধ্যে যোগাযোগের সুবিধা হবে। কলকাতা স্টেশনে যাওয়ারও সুবিধা হবে।

আরও পড়ুন- স্টেশনের টিভিতে প.র্ণ সিনেমা! পাটনায় ট্রেন মিস যাত্রীদের

অধিবেশনে অয়ন যখন এমন গঠনমূলক প্রস্তাব দিচ্ছেন, ঠিক তখনই অপ্রাসঙ্গিক কথা বলে চিৎকার করতে করতে তাঁকে বলতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ। অয়ন সজলকে পাল্টা দিয়ে বলেন, “সজলবাবুও বলতে পারবে না, তাঁর ওয়ার্ড কোনও পরিষেবা পাচ্ছেন না। তাঁর ওয়ার্ডের মানুষকেও অন্য ওয়ার্ডের মতোই সমান পরিষেবা দিচ্ছে কলকাতা পুরসভা। তাই সজলবাবুকে একটা পরামর্শ, তিনি পুরসভার অধিবেশনে চেল্লামেল্লি না করে যদি দিল্লিতে গিয়ে এমনভাবে চিৎকার করুন। বাংলাকে ১০০দিনের কাজের ন্যায্য টাকা দেওয়ার জন্য চিৎকার করে দিল্লিকে বলুন, তাহলে এই রাজ্যের মানুষ উপকৃত হবে।”

 

Previous articleস্টেশনের টিভিতে প.র্ণ সিনেমা! পাটনায় ট্রেন মিস যাত্রীদের
Next articleআন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে একত্রে কাজ করবে ভারত-জাপান, হাতে হাত মোদি-কিশিদার