ফের বড়সড় ধস নামল সিকিমে। নাথু লা-য় ভয়াবহ তুষারধসে এখনও পর্যন্ত ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। ১৩০ জনেরও বেশি পর্যটক আটকে পড়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। উদ্ধারকাজে নেমেছে সিকিম পুলিশ, সিকিমের ট্র্যাভেল অ্যাসোসিয়েশন, পর্যটন দফতর।মর্মান্তিক এই ঘটনায় শোকপ্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইট করেছেন। তিনি লিখেছেন, সিকিমের মর্মান্তিক ঘটনায় গভীরভাবে ব্যথিত। তুষারধসের কারণে বহু মূল্যবান প্রাণ হারিয়েছে।আমি শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা জানাই এবং যারা আহত হয়েছেন তাদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি। সকলের নিরাপত্তা ও সুস্থতার জন্য প্রার্থনা করছি।
Deeply pained by the tragic incident in Sikkim. Owing to the avalanche, the nation has lost several precious lives.
I offer my sincerest condolences to the bereaved families and pray for the speedy recovery of those who were injured. Praying for the safety and security of all.
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) April 4, 2023
মঙ্গলবার নাথু লা-র ছাঙ্গু লেক যাওয়ার পথে ১৭ মাইল এলাকা জুড়ে ধস নেমেছে। দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ এই ধস নামে। বেশ কিছু পর্যটককে ইতিমধ্যেই উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।সিকিমে এই মুহূর্তে বহু পর্যটকর রয়েছেন। ধসের জেরে রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন তাঁরা। ধসের জেরে বারবার এলাকার বাড়ি ঘর রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একাধিকবার এই মেরামতির চেষ্টা হলেও পুনরায় ধস নামায় তা ফের ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে স্থায়ী ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়নি বলেই জানাচ্ছে সিকিম প্রশাসন।
পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান ছাঙ্গু লেক। সেখানে যাওয়ার পথে আচমকা এইভা্বে ধস নামায় বহু পর্যটক আটকে পড়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্চে।আসলে নাথু লা-কে কেন্দ্র করে অনেকগুলি পর্যটনস্থল রয়েছে।ফলে পর্যটকদের ভিড় লেগেই থাকে এই অঞ্চলে।তুষার ধস নামায় কপালে ভাঁজ সিকিমের পর্যটন বিভাগেরও।
শুধুমাত্র পর্যটন স্থল হিসাবেই নয়, নাথু লা দিয়ে চিন এবং ভারতের মধ্যে ব্যবসা বাণিজ্য চলে। প্রাচীন সিল্ক রুটের অন্তর্গত ছিল এই অঞ্চল। ২০০৬ সাল থেকে নাথু লা দিয়ে ভারত ও চিনের মধ্যে ব্যবসা বাণিজ্য হয়ে আসছে। ২০১১ সালে সিকিমে ভূমিকম্প হওয়ার পর এবং ২০১৭ সালে ডোকলাম বিতর্কের সময় নাথু লা দিয়ে দুই দেশের আমদানি, রফতানি বন্ধ ছিল। সীমান্ত পরিস্থিতি উন্নত হওয়ার পরে ভারতীয় তীর্থযাত্রীদের জন্য ফের নাথু লা খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় চিন। ১৯৬২ সালে চিনের আক্রমণের সময়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল নাথু লা-র।
এই সময় সিকিমের নানা পর্যটন স্থানগুলিতে বাংলা থেকেও বহু মানুষ ভিড় জমান। এমত অবস্থায় ধসের খবরে স্বাভাবিকভাবেই তাঁদের সকলের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। আটকে পর্যটকদের উদ্ধার করতে জোরকদমে চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ প্রশাসন। প্রয়োজনে উদ্ধারকাজের জন্য সেনাবাহিনীর সাহায্য নেওয়া হয়েছে।