৪২ হাজারি বেতনভোগী মাছি মারা কেরানির DA আবদার! চিরকুটে চাকরি নয় তো?

মাস পড়লেই তাপসবাবুর ব্যাঙ্ক একাউন্টে ৪২ হাজার টাকা ঢুকিয়ে দেয় রাজ্য সরকার। এখন আবার সঙ্গে আরও ৩ শতাংশ DA. করোনা কালে আবার বাড়িতে বসেই সেটা নিয়মিত পেয়েছেন তাপসবাবু। সেই সময় পৌরসভার জরুরি পরিষেবায় তাঁকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তায় নামতে হয়নি, বাড়ি বসেও করতে হয়নি 'ওয়ার্ক ফর্ম হোম'।

সোমনাথ বিশ্বাস

ইন্টারনেট-কম্পিউটারের যুগে এখনও বহু সরকারি দফতরে বহাল তবিয়তে চাকরি করছেন স্টেনো টাইপিস্টরা। না, এতে অন্যায় কোনও নেই। নেই বেআইনি কিছু। কারণ, তাঁরা যে সময়ে চাকরিতে ঢুকে ছিলেন, তখন স্টেনো টাইপিস্ট যুগ ছিল। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে অনেকেই স্টেনো টাইপিস্ট থেকে কম্পিউটার অপারেটর হয়েছেন। আবার অনেকে নিজেকে যুগের সঙ্গে বদলাতে পারেননি নিজেকে। স্টেনো টাইপের ব্যবহার উঠে গেলেও সপদে বহাল রয়েছেন তাঁরা। যেখানে কাজ কম, আড্ডা, বাতেলা বেশি। নিজেদের পাওনাগণ্ডা বুঝে নেওয়া, অন্যদের প্ররোচনা দেওয়াই কাজ।

এমনই এক মাছি মারা কেরানির সন্ধান পেয়েছে বিশ্ববাংলা সংবাদ। নাম তাপস পাল, স্টেনো টাইপিস্ট। কলকাতা পৌরসংস্থায় কর্মরত এই তাপসবাবু। বাম জমানায় চাকরি পাওয়া তাপস পাল প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে একজন DA আন্দোলনকারী বা আন্দোলনের সমর্থক। যিনি DA নিয়ে সরব। তাই গত, ১০ মার্চ ধর্মঘটকে সমর্থন জানিয়ে দফতরে আসেননি।

রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের প্রতি ৯ মার্চ বিজ্ঞপ্তি জারি করে নবান্নের নির্দেশ ছিল, অফিসে না এলে কেটে নেওয়া হবে একদিনের বেতন। সেইমতো ধর্মঘটে সামিল হওয়ার খেসারত দিতে হয়েছে পৌরকর্মী তাপস পালকে। তাঁর একদিনের বেতন কেটে নেওয়া হয়েছে।

আজকের দিনে স্টেনো টাইপিস্ট পদে কর্মরত মাছি মারা কেরানি তাপস পালের বেতন কত জানেন? মাস পড়লেই তাপসবাবুর ব্যাঙ্ক একাউন্টে ৪২ হাজার টাকা ঢুকিয়ে দেয় রাজ্য সরকার। এখন আবার সঙ্গে আরও ৩ শতাংশ DA. করোনা কালে আবার বাড়িতে বসেই সেটা নিয়মিত পেয়েছেন তাপসবাবু। সেই সময় পৌরসভার জরুরি পরিষেবায় তাঁকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তায় নামতে হয়নি, বাড়ি বসেও করতে হয়নি ‘ওয়ার্ক ফর্ম হোম’, কারণ তিনি মাছি মারা কেরানি। ঘরে বসে বসে লকডাউন উপভোগ করেছেন।

নবান্নের (Nabanna) নির্দেশ অমান্য করায় এবার তাপস পালকে (Tapas Paul) সার্ভিস ব্রেকের (Service Break) নোটিশ ধরিয়েছে তাঁর দফতর। যেখানে অফিস ফাঁকি মারার জন্য তাঁর একদিনের বেতন ১৬১৯ টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে। অর্থ দফতরের নির্দেশিকা অমান্য করার জন্য তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে কলকাতা পৌরসংস্থা (KMC)।

আজকের যুগে যেখানে ইন্টারনেট (Internet), কম্পিউটার (Computer), ল্যাপটপের (Laptop) যুগ। সেখানে রাজ্য সরকারকে তাপস পালের মতো স্টেনো টাইপিস্টকে ৪২ হাজার টাকা বেতনে পুষতে হচ্ছে। প্রশ্ন উঠছে, এইসব মাছি মারা কেরানিদের আদৌ কি চাকরি করার নৈতিকতা আছে? আইনে হয়তো মাছি মারা কেরানিদের চাকরি কেড়ে নেওয়া যাবে না, কিন্তু অন্য কাজে কি এঁদের লাগানো যায় না? নাকি মোটা বেতন দিয়ে বাম আমলের এইসব বোঝা এখনও বয়ে চলবে রাজ্য সরকার! খুঁজলে দেখা যাবে তাপসবাবুর মতো মাছি মারা কেরানিরা কোনও কমরেডের হাত ধরে যোগ্যদের বঞ্চিত করে চিরকুটে চাকরি পেয়েছিলেন! তাপসবাবু, আপনার চাকরিটা চিরকুটে নয় তো?

 

 

 

Previous articleপ্রতিষ্ঠা দিবসের দিনেও বিরোধীদের তীব্র আক্রমণ মোদির
Next articleডিএ নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত! আন্দোল.নকারীদের সঙ্গে রাজ্যকে আলোচনায় বসার নির্দেশ হাই কোর্টের