সংসদে প্রশ্নবা.ণের পর গিরিরাজকে পর পর ২টি ‘পত্রাঘাত’ তৃণমূলের

সংসদে দেখা হতেই রাজ্যের বকেয়া মেটানোর দাবিতে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন ও পঞ্চায়েতরাজ মন্ত্রী গিরিরাজ সিংকে (Giriraj Singh) ঘিরে ধরেন তৃণমূল (TMC) সাংসদরা। কার্যত মুখ লুকিয়ে পালান তিনি। এই পরই পরপর দুদিন ৬ এবং ৭ এপ্রিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে বিস্ফোরক চিঠি দিল তৃণমূল। রাজ্যের বকেয়া টাকা নিয়ে আলোচনায় তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি দলের মুখোমুখি হতে ‘ভয়’ পান গিরিরাজ। অভিযোগ, দিল্লিতে থাকলেও তিনি দেখা করেননি তৃণমূলের সংসদীয় প্রতিনিধি দলের সঙ্গে। এবার একের পর এক পত্রাঘাত করল তৃণমূল।

চিঠিতে তৃণমূল সাফ জানায়, কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক তলানিতে নিয়ে যাবেন না। অবিলম্বে রাজ্যের প্রাপ্য বকেয়া মিটিয়ে দেন, আলোচনায় একটি চিঠিতে পরবর্তী বৈঠকের দিনক্ষণ জানতে চাওয়া হয়েছে। অপর চিঠিতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর অফিসের তরফে অসত্য বলার জন্যে, তৃণমূলকে বিভ্রান্ত করার জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে। এমনকী, মন্ত্রকের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগও তোলা হয়েছে। চিঠির মাধ্যমে তৃণমূলের অভিযোগ, মন্ত্রী দিল্লিতে থাকা সত্ত্বেও জানানো হয়েছে, তিনি দিল্লিতে নেই এবং এক সপ্তাহের আগে ফিরবেন না। যদিও পরদিন সকালেই তাঁকে লোকসভায় দেখা যায়। সেই বিষয়টি নিয়েই শুক্রবার দ্বিতীয় চিঠি পাঠাল তৃণমূল। চিঠিতে স্বাক্ষর রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েনের।

বৃহস্পতিবার প্রথম চিঠি দেয় তৃণমূলের সংসদীয় দল। প্রথম চিঠিতে লেখা হয়েছে,”আপনার অনুপস্থিতিতে আমরা মন্ত্রকের সচিব এবং অন্যান্য আধিকারিকদের সঙ্গে প্রায় এক ঘণ্টা বৈঠক করি। বকেয়া টাকা না দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়।” চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, মন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহায়ক জানিয়েছিলেন গিরিরাজ সিং-এর সুবিধা মতো কিছুদিনের মধ্যে আরেকটি বৈঠক করে সমস্যার সমাধানের পথ খোঁজার চেষ্টা করা হবে। সেই বৈঠকে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়নমন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত থাকবেন রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী এবং দফতরের অন্যান্য আধিকারিকরা। সেই অনুযায়ী চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, যত দ্রুত সম্ভব পরবর্তী বৈঠকের দিনক্ষণ জানান।

অভিষেকের নেতৃত্বে তৃণমূলের সংসদীয় প্রতিনিধি দল যখন গিরিরাজ সিং-এর সঙ্গে দেখা করতে চান তখন মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়, তিনি বিহার গিয়েছেন ১৩ এপ্রিলের আগে দিল্লি ফিরবেন না মন্ত্রী। যদিও পরদিন লোকসভায় গিরিরাজ সিংকে দেখা যায়। তাঁকে দেখে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন সাংসদ গিরিরাজ সিংকে ঘিরে ধরে বাংলার প্রাপ্য টাকা আটকে রাখার কারণ, মিথ্যা তথ্য দেওয়া সম্পর্কে জানতে চান। যদিও সেসব প্রশ্নের কোনও রকমে এড়িয়ে চলে যান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। শুক্রবার পাঠানো চিঠিতে সে বিষয়টিকে উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, “আপনার ব্যক্তিগত সহায়ক আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। তিনি আমাদের আশ্বস্ত করেছেন যে আপনি দিল্লিতে নয়, বিহারে রয়েছেন এবং এক সপ্তাহের আগে ফিরবেন না। যদিও পরে স্পষ্ট হয়, আপনি দিল্লির বাইরে যাননি। আপনাকে আমাদের লোকসভার সদস্যরা দেখতে পান এবং আপনাকে ঘিরে ধরা হয়।”

চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, “এভাবে মিথ্যা তথ্য দেওয়া শুধুমাত্র অনৈতিকই নয়, একজন মন্ত্রীর অফিসের তরফে এটা অপ্রত্যাশিত। আমরা বাংলার বঞ্চিত মানুষের জন্য লড়াই করছি এবং এ ব্যাপারে পূর্ণ সহযোগিতা কামনা করি।” পরপর চিঠির মাধ্যমে তৃণমূলের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে দেওয়া হল বাংলার মানুষের বকেয়া ফিরিয়ে দিতে হবে, না হলে দিল্লিতে বাংলার লক্ষ লক্ষ মানুষকে নিয়ে গিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করা হবে।

আরও পড়ুন- প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে মুখোমুখি পার্থ-কুন্তল, ছাড়াতে ছুটে এলেন জেল আধিকারিকরা!

 

Previous articleএবার হিমাচল প্রদেশে আইনতভাবে গাঁজার চাষ শুরু হতে চলেছে!
Next articleকো. ভিড মোকাবিলায় তৎপর রাজ্য ! ফের মকড্রিলের ঘোষণা কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর