প্রকাশ্যে যোগী পুলিশের ‘দাদাগিরি’! ‘এন.কাউন্টারে’ খ.তম রেকর্ড অ.পরাধী

তবে এমন রিপোর্ট সামনে আসার পরই বিরোধীদের অভিযোগ, বেছে বেছে রাজপুত ও ঠাকুর বাদে অন্যান্য মাফি.য়াদের হ.ত্যা করছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ।

উত্তর প্রদেশের (Uttar Pradesh) মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের (Yogi Adityanath) ‘ঠোক দো’ শব্দবন্ধ নিয়ে আগেই বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। এই শব্দবন্ধ ব্যবহারের মধ্য দিয়ে বিরোধীদের প্রবল সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে যোগীকে। এবার গত ৬ বছরে যোগী রাজ্যে ১৮৩ অপরাধী পুলিশি এনকাউন্টারে (Police Encounter) খতম হয়েছে। শুক্রবার এমনই রিপোর্ট সামনে আনল উত্তর প্রদেশ পুলিশ। তাদের মধ্যে রয়েছে গ্যাংস্টার আতিক আহমেদের ছেলে আসাদও। বৃহস্পতিবার দুপুরে ঝাঁসির বাবিনা রোডে পুলিশের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে নিহত হয়েছেন উত্তরপ্রদেশের ‘গ্যাংস্টার’ আতিক আহমেদের (Atiq Ahmed) পুত্র আসাদ (Asad Ahmed) ও সঙ্গী গুলামও। তারপর থেকেই সরগরম উত্তরপ্রদেশের রাজনীতি।

তবে লখনউ-এর এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) প্রশান্ত কুমার জানিয়েছেন, মাফিয়াদের বিরুদ্ধে বরাবরই ‘জিরো-টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করেছে যোগী সরকার। এরপরই তিনি স্পষ্ট করে দেন, উত্তরপ্রদেশে পুলিশের সঙ্গে এনকাউন্টারে এখনও পর্যন্ত ১৮৩ জন অপরাধী নিহত হয়েছে। যার সম্প্রতিতম নিদর্শন আসাদ এবং গুলামের এনকাউন্টারের ঘটনা। তবে শুধু আসাদের এনকাউন্টারই নয়, গত কয়েক বছরে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের একাধিক এনকাউন্টারের ঘটনা সংবাদ শিরোনামে উঠে আসে এবং তা নিয়ে কম চর্চা হয়নি।

একনজরে দেখে নিন যোগীরাজ্যের কিছু এনকাউন্টারের নিদর্শন-

২০২০ সালের ১০ জুলাই- কানপুরে একটি এনকাউন্টারে নিহত হন গ্যাংস্টার বিকাশ দুবে৷ তবে পুলিশের দাবি ছিল, বিকাশকে উজ্জয়িনী থেকে কানপুরে নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশের গাড়ি উল্টে যায়। বিকাশ পালানোর চেষ্টা করলে পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয় তার।

২০২০ সালের ২৫ জুলাই- পুলিশের এনকাউন্টারে নিহত হন গ্যাংস্টার টিঙ্কু কাপালা। টিঙ্কুর মাথার দাম ১ লক্ষ টাকা ধার্য করেছিল পুলিশ।  

২০২১ সালের ১৮ অক্টোবর- লখনউয়ের গোমতীনগরে পুলিশের গুলিতে প্রাণ যায় বাংলাদেশি গ্যাংস্টার হামজার।

২০২১ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি- সিদ্ধপুরা থানা এলাকার কুখ্যাত অপরাধী মতি সিং পুলিশের গুলিতে নিহত হন মতি। থানারই এক কনস্টেবলকে খুনের অভিযোগে এবং কাসগঞ্জ থানার এক পুলিশ আধিকারিকের উপর হামলা চালানোর জন্য পুলিশ তাঁকে খুঁজছিল।

২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর- উত্তরপ্রদেশের জৌনপুরে পুলিশের এনকাউন্টারে নিহত হন কুখ্যাত গ্যাংস্টার বিনোদকুমার সিং। বিনোদের উপর অপহরণ এবং তোলাবাজির একাধিক অভিযোগ ছিল।

২০২২ সালের ২১ মার্চ- বারাণসীতে উত্তরপ্রদেশ স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের এনকাউন্টারে মৃত্যু হয় মণীশ সিং ওরফে সোনুর। মোনুর মাথায় ২ লক্ষ টাকার পুরস্কার ধার্য ছিল।

২০২৩ সালের ১৩ এপ্রিল- প্রয়াগরাজে উমেশ পাল হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত ছিলেন আসাদ এবং গুলাম। পুলিশের খাতায় ‘ওয়ান্টেড’ অপরাধীর তালিকাতেও নাম উঠেছিল দু’জনের। উভয়ের মাথায় দাম ৫ লক্ষ টাকা ঘোষণা করেছিল পুলিশ। আসাদ এবং তাঁর সঙ্গী গুলামকে লক্ষ্য করে মোট ৪২ রাউন্ড গুলি চালায় পুলিশ।

সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, যোগী আদিত্যনাথ সরকারের আমলে গত ছ’বছরে, ১০,৭১৩ ‘এনকাউন্টার’ হয়েছে উত্তরপ্রদেশে। যাতে ১৮৩ জন অভিযুক্ত নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৪,৯১১ জন। উত্তরপ্রদেশের এনকাউন্টারে যারা নিহত হয়েছেন, তাঁরা সকলেই গুরুতর অপরাধে অভিযুক্ত। হিসাব অনুযায়ী, গত ছয় বছরে উত্তরপ্রদেশে পুলিশের গড়ে ১৩ দিনে অন্তত এক জন অভিযুক্ত নিহত হয়েছেন।

তবে এমন রিপোর্ট সামনে আসার পরই বিরোধীদের অভিযোগ, বেছে বেছে রাজপুত ও ঠাকুর বাদে অন্যান্য মাফিয়াদের হত্যা করছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। উত্তরপ্রদেশে ব্রাহ্মণদের সঙ্গে ঠাকুর ও রাজপুতদের তীব্র বিরোধ রয়েছে। সেই হিসেব মাথায় রেখে ব্রাহ্মণ মাফিয়াদেরও বেছে বেছে হত্যা করা হচ্ছে। যদিও পুলিশের দাবি, এই সব দুষ্কৃতীরা সবাই সংঘর্ষে মারা গিয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ, গোটা ভুয়ো সংঘর্ষের ঘটনায় পিছন থেকে কলকাঠি নাড়াচ্ছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।

 

 

 

Previous article২৬ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে জীবনকৃষ্ণর বাড়িতে সিবিআই, তল্লাশি বিভাসের বাড়িতেও
Next articleবাংলায় দলের সংগঠনের প.ঙ্গুদশা, শুভেন্দুদের নেতৃত্ব নিয়ে অস.ন্তোষ শাহের