আঙ্কেল জজ সিন্ড্রোম: শীর্ষ আদালতকে আক্রমণ! কলেজিয়াম নিয়ে ফের বি.স্ফোরক রিজিজু

রিজিজু জানান, একজন ভালো আইনজীবী হওয়া সত্ত্বেও যদি কোনও উচ্চপদস্থ এবং প্রভাবশালী বিচারপতির সঙ্গে আপনার সুসম্পর্ক না থাকে তাহলে সেক্ষেত্রে আপনি কখনই বিচারক হতে পারবেন না।

সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) কলেজিয়াম (Collegium) নিয়ে বহুদিন আগে থেকেই বিস্তর প্রশ্ন ও অভিযোগ তুলে দেশের শীর্ষ আদালতের বিরুদ্ধে সমালোচনায় সরব হয়েছিলেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কিরেণ রিজিজু (Kiren Rijiju)। মাঝে কিছুটা সময় পেরলেও ‘কলেজিয়াম’ ইস্যুতে একই মনোভাব পোষণ করলেন তিনি। সাফ জানিয়ে দিলেন, কলেজিয়াম সিস্টেম থাকলে আর যাই হোক বিচারক নিয়োগ পদ্ধতি ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ হতে পারে। পাশাপাশি তিনি পরিষ্কারভাবে জানিয়েছেন, যতদিন উচ্চ আদালতে কলেজিয়াম সিস্টেম থাকবে ততদিন বিচারক নিয়োগ পদ্ধতি নিয়ে বিবাদ চলবেই। এটাকে কোনওভাবেই আটকানো যাবে না। শনিবারই একটি সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে এমনই মন্তব্য করেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী। পাশাপাশি এদিন তাঁর বক্তব্যে উঠে আসে “আঙ্কেল জজ সিন্ড্রোম” (Uncle Judge Syndrome) প্রসঙ্গও। রিজিজু জানান, একজন ভালো আইনজীবী হওয়া সত্ত্বেও যদি কোনও উচ্চপদস্থ এবং প্রভাবশালী বিচারপতির সঙ্গে আপনার সুসম্পর্ক না থাকে তাহলে সেক্ষেত্রে আপনি কখনই বিচারক হতে পারবেন না। অন্যদিকে, তিনি মনে করিয়ে দেন, একজন ভালো আইনজীবী না হওয়া সত্ত্বেও যদি কোনও প্রভাবশালী বিচারপতির সঙ্গে আপনার সুসম্পর্ক থাকে তাহলে সেক্ষেত্রে আপনিও একজন ভালো বিচারক হতে পারেন। আর কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রীর এমন মন্তব্যকে কেন্দ্র করেই শুরু হয়েছে জোর চর্চা। একজন আইনমন্ত্রী হয়েও কীভাবে দেশের শীর্ষ আদালতের বিশেষ একটি সিস্টেম নিয়ে তিনি বারবার সমালোচনা করতে পারেন তা নিয়ে ইতিমধ্যে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন বিরোধীরা।

কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী আরও জানান, কলেজিয়াম সিস্টেম চালু হওয়ার পর থেকে হাইকোর্টের তিনজন সিনিয়র বিচারকই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন কে হবেন শীর্ষ আদালতের পরবর্তী বিচারক। এরপরই ৩ সিনিয়র বিচারক সুপ্রিম কোর্টে তাঁদের নাম পাঠান। তারপর পাঁচজন সিনিয়র বিচারপতি সুপ্রিম কোর্টে বিচারকদের নাম নির্ধারণ করেন। আর এরপরই রিজিজু অভিযোগ করেন, বর্তমানে কলেজিয়াম এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি করেছে যেখানে বিচারপতিরা শুধুমাত্র যাদেরকে ব্যক্তিগতভাবে চেনেন তাঁদের নাম প্রস্তাব করেন। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী আরও বলেন, এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের চিন্তাভাবনা আরও স্পষ্ট কারণ আমরা বিচার বিভাগ থেকে আসি না।

অন্যদিকে, এদিন রিজিজুর কথায় উঠে আসে আরও একটি চাঞ্চল্যকর বিষয়। তাঁর নিশানায় এদিন কয়েকজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির সরকারবিরোধী মন্তব্য প্রসঙ্গ উঠে আসে। আইন মন্ত্রী জানান, আমাদের মতো ৯০ শতাংশ বিচারপতি দেশে কাজ করেন। তাঁরা বলেন, আমাদের কাজে খুশি। তবে বাকি ১০ শতাংশ মানুষ বিজেপি বিরোধী। তাঁদের চিন্তাভাবনাও বিজেপি-বিরোধী। এরপরই তিনি অভিযোগ করেন, ভাবুন সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি আমাদের প্রধানমন্ত্রী ও সরকারকে আক্রমণ করছেন।

তবে বিচারপতি নিয়োগে কলেজিয়াম ব্যবস্থার প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় (Chief Justice DY Chandrachud)। তিনি জানান, “কোনও সিস্টেমই ত্রুটিমুক্ত নয়। তবে যে সিস্টেম তৈরি করা হয়েছে সেটাই সবথেকে ভালো।” তিনি আরও জানান, কলেজিয়াম সিস্টেমের ফলে, বিচারপতি নিয়োগে গণতান্ত্রিক পদ্ধতি বজায় থাকে।

 

 

 

Previous articleএবার সুপ্রিম কোর্টে কো.ভিডের কোপ! আক্রান্ত ৪ বিচারপতি
Next articleঅমর্ত্য সেনকে উচ্ছেদের নোটিশ ‘ভারতের লজ্জা’, বিশ্বভারতীর নিন্দায় অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসু