কেন্দ্রের গাফিলতিতেই একের পর এক চিতার মৃ.ত্যু! আশঙ্কার সুর গবেষকদের গলায়

তাড়াহুড়ো করে সুনাম অর্জন করতে গিয়ে এখন প্রাণ সংশয়ে বাড়ছে চিতাদের। ইতিমধ্যেই মৃত্যু হয়েছে দুই চিতার। এমনটাই জানালেন ভারতীয় গবেষকরা। সাশার মৃত্যুর রেশ কাটতে না কাটতে একমাসের মধ্যে আরও এক চিতা মৃত্যুর ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে কুনো জাতীয় উদ্যানে। বর্তমানে কুনো জাতীয় উদ্যানে মোট চিতার সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ১৮তে। নামিবিয়ার লাইবনিজ-আইজেডব্লিউ’র ‘চিতা গবেষণা প্রকল্প’-র বিজ্ঞানীরা আগেই জানিয়েছিলেন, দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে চিতাগুলি ভারতে আনার ক্ষেত্রে ভারতের স্থানীয় ভৌগোলিক পরিবেশ বিচার না করেই তাদের আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এবার একই সুর শোনা গেল ভারতীয় গবেষকদের গলায়।

সেপ্টেম্বরে শাশার মৃত্যুর পর জানানো হয়েছিল কিডনিজনিত সমস্যার কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। যদিও উদয়ের মৃত্যুর পর তার মৃত্যুর আসল কারণ এখনও প্রকাশ্যে আনেনি কেন্দ্রীয় সরকার। নামিবিয়ার গবেষকরা আগেই জানিয়েছেন, এখানকার পরিবেশ চিতাগুলির বসবাসের ক্ষেত্রে উপযুক্ত নয়। জায়গা প্রতি ১০০ বর্গ কিলোমিটারে একটি চিতা বাস করে। ঢাকঢোল পিটিয়ে প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে প্রথম আন্তঃমহাদেশীয় চিতা প্রকল্পের অন্তর্গত কুড়িটি চিতাকে দক্ষিণ আফ্রিকার নামিবিয়া থেকে আনা হয়েছিল এদেশে। যার মধ্যে ইতিমধ্যেই মৃত্যু হয়েছে দুটি চিতার। ফলে কুনো ন্যাশনাল পার্কে এখন মোট ১৮টি চিতা বর্তমান।

উল্লেখ্য, ১৯৯৩ সালে কুনো জাতীয় উদ্যান প্রথমে সিংহ প্রকল্পের জন্য নির্বাচিত হয়েছিল। আর সেই অনুযায়ী সাহারিয়া উপজাতির ৩০ টি গ্রামও উচ্ছেদ করা হয়। চিতা প্রকল্পের ফলে স্থানীয় অর্থনীতির উন্নতি হবে, এই কারণ দেখিয়ে সেইসময় সেখানকার বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখানে সিংহ প্রকল্প বাদ দিয়ে চিতা আনা হয় প্রধানমন্ত্রী ৭০ তম জন্মদিন উপলক্ষে। এদিকে একের পর এক চিতার মৃত্যু প্রসঙ্গে বন্যপ্রাণী গবেষক অজয় দুবে স্পষ্ট জানান, একের পর এক চিতার মৃত্যু হচ্ছে অথচ সরকারের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ টিম এদের মৃত্যুর সঠিক কারণ অনুসন্ধানে ব্যর্থ। তিনি আরও জানান, এখানে আনার পর থেকে ক্রমাগত চিতাগুলোকে বন্দি অবস্থায় রাখা হয়েছে যা তাদের জন্য একেবারেই অস্বাস্থ্যকর। এদিকে উদয়ের মৃত্যু হৃদরোগ ও শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যার কারণেই হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে জানানো হয়েছে। সে প্রসঙ্গে অজয় দুবে জানান, সরকারের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ টিম চিতাদের রক্ষণাবেক্ষণে ব্যর্থ। শুধু তাই নয় কুনো ন্যাশনাল পার্কে চিতাদের দেখভালের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত যে আধিকারিক রয়েছেন তাঁর উপর আরও চারটি জাতীয় উদ্যান দেখভালের দায়িত্ব রয়েছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই তাঁর একার পক্ষে সদ্য আনা চিতাদের সঠিকভাবে দেখভাল করা সম্ভব নয়। আর সব জেনেও সরকারের গাফিলতিতেই মৃত্যু হচ্ছে একের পর এক চিতার, এমনটাই অভিযোগ বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞদের।

বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, কেন্দ্রীয় সরকার যখন দায়িত্ব নিয়ে চিতাদের ভারতে এনেছে সেখানে এতবড় প্রকল্পের মধ্যে যদি কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত তা প্রকাশ্যে আনা। যাতে বাকি চিতাদের জীবন অন্তত বাঁচানো যায়। কুনো জাতীয় উদ্যানে দু-একটি ছাড়া বেশিরভাগ চিতাই বন্দী অবস্থায় রয়েছে। সেক্ষেত্রে, অতি সংবেদনশীল এই প্রাণীগুলোর মধ্যে হতাশা গ্রাস করেছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

Previous articleতুফানগঞ্জে স্থানীয় কিছু নেতার ইস্তফা! আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের আশ্বাস জেলা তৃণমূলের
Next articleকালিয়াগঞ্জে বিহার থেকে লোক এনে অ.শান্তি বিজেপির! হাম.লাকারীদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর