মেলেনি শববাহী গাড়ি! মেয়ের দেহ কীভাবে নিয়ে ফিরলেন অসহায় বাবা?

আর এমন ঘটনা ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। অসহায় বাবার এমন কাণ্ড দেখে নেটদুনিয়ায় শুরু হয়েছে জোর বিতর্ক। ঘটনার জেরে চরম বিতর্কের মুখে পড়তে হয়েছে মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানকে।

চরম অর্থাভাবের জের। শববাহী গাড়ি না পেয়ে এবার মেয়ের (Daughter) মৃতদেহকে (Dead Body) বাইকে (Bike) চাপিয়ে বাড়িতে আনলেন বাবা। এমনই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে মধ্যপ্রদেশে (Madhya Pradesh)। একটি সর্বভারতীয় সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, মধ্যপ্রদেশের শাহদোলের কোটা গ্রামের বাসিন্দা ওই অসহায় বাবার নাম লক্ষ্মণ সিং (Laxman Singh)। সম্প্রতি তাঁর ১৩ বছরের কন্যা মাধুরী সিকেল সেল অ্যানিমিয়ায় আক্রান্ত হন। মেয়েকে শাহদোলের একটি সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি। সোমবার রাতে হাসপাতালেই মৃত্যু হয় মাধুরীর। এরপর হাসপাতালে শববাহী গাড়ি না পেয়ে শাহদোল থেকে কোটা প্রায় ৭০ কিলোমিটার বাইক চালিয়ে মেয়ের মৃতদেহকে বাড়ি নিয়ে যান অসহায় বাবা। আর এমন ঘটনা ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। অসহায় বাবার এমন কাণ্ড দেখে নেটদুনিয়ায় শুরু হয়েছে জোর বিতর্ক। ঘটনার জেরে চরম বিতর্কের মুখে পড়তে হয়েছে মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানকে (Shiv Raj Singh Chouhan)।

জানা গিয়েছে, মেয়ের দেহ বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে একটি অ্যাম্বুল্যান্স (Ambulance) চেয়েছিলেন লক্ষ্মণ। অভিযোগ, তাঁর বাড়ি হাসপাতাল থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটারের থেকে দূরে হওয়ায় তাঁকে অ্যাম্বুল্যান্স দিতে রাজি হননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে, শববাহী গাড়ি ভাড়া করে নিয়ে যাওয়ার মতো টাকাও তাঁর কাছে ছিল না। আর সেকারণেই বাধ্য হয়ে এমন সিদ্ধান্ত নেন মেয়ে নিরুপায় বাবা। তবে শুধুমাত্র কিছু টাকার জন্য কেন এমন ভয়ানক পরিস্থিতির সামনে পড়তে হল অসহায় বাবাকে? তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। তবে বিরোধীদের অভিযোগ, বিজেপি (BJP) শাসিত রাজ্যগুলিতে এমন নিদর্শন এই প্রথম নয়। এর আগে যোগীরাজ্য উত্তর প্রদেশেও এমন মর্মান্তিক ঘটনা সামনে এসেছে। আর বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশে এমন ঘটনা সামনে আসায় শুরু হয়েছে জোর বিতর্ক।

তবে বাড়ি থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার আগে লক্ষণকে তাঁর মেয়ের মৃতদেহ এভাবে নিয়ে যেতে দেখেন শাহদোলের জেলাশাসক বন্দনা বৈদ্য। এরপর তিনিই একটি শববাহী গাড়ির ব্যবস্থা করে দেওয়ার নির্দেশ দেন। ইতিমধ্যে ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক। উল্লেখ্য, দিনকয়েক আগেই কালিয়াগঞ্জের (Kaliyagaunj) ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়। জানা গিয়েছে, কালিয়াগঞ্জের বাসিন্দা পেশায় পরিযায়ী শ্রমিক অসীম দেবশর্মার পাঁচ মাস আগে যমজ পুত্র সন্তান হয়। পরে একজন শিশু সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেও, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরেকজনের মৃত্যু হয়। তাঁর দেহ হাসপাতাল থেকে নিয়ে আসতে গেলে শববাহী গড়ি আট হাজার টাকা ভাড়া দাবি করে। আর সেই ভাড়া দিতে না পেরে অসীম ব্যাগে ভরে শিশুর দেহ নিয়ে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন। ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয় রাজ্য রাজনীতি। তবে ইতিমধ্যে, ঘটনায় বড় পদক্ষেপ নিয়েছে রাজ্য সরকার। ঘটনার প্রাথমিক রিপোর্ট ইতিমধ্যে স্বাস্থ্য দফতরে জমা পড়েছে। কেন ওই শিশুর মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুল্যান্স দেওয়া গেল না, তা এবার তদন্ত করে দেখবেন স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা।

 

 

Previous articleআপত্তি নেই মুখ্যমন্ত্রীর! তাও এনআইএ তদন্তের দাবি নিয়ে হাইকোর্টে মামলা শুভেন্দুর
Next articleসব জল্পনার অবসান, কর্ণাটকের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া-ডেপুটি শিবকুমার, কাল শপথ