মোদি-আদানি জুটিতে LIC শেয়ার পতন ৪০ শতাংশ! উধাও ২ লক্ষ কোটি টাকা!

ঠিক এক বছর পর, LIC-এর মূলধন ৩ লক্ষ ৬০ হাজার ৫৮৮ কোটি টাকায় এসে দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ, প্রায় ১ কোটি ৯৩ হাজার ৪১২ কোটি কম। তার জেরে বর্তমানে মূলধনের বিচারে দেশের সেরা কোম্পানির তালিকায় ১৩তম স্থানে নেমে গিয়েছে LIC।

ঠিক একবছর আগে ২০২২ সালের ১৭ মে, ভারতের সবচেয়ে বড় বীমা সংস্থা LIC-কে শেয়ার বাজারে অন্তর্ভুক্তি করেছিল কেন্দ্রের জনবিরোধী নরেন্দ্র মোদি সরকার (Narendra Modi Govt)। অনেক ঢাকঢোল পিটিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদি নিজেই ওইদিন “শুভ সূচনা” করেছিলেন। সূচনার দিন যে শেয়ারের (Share) দাম ছিল ৯৪৯ টাকা, মাত্র একবছরের মধ্যে তা কমে হয়েছে ৭৭০টাকা। অর্থাৎ, ৪০ শতাংশ দাম পড়ে গিয়েছে। টাকার মূল্যে যা প্রায় ২ লক্ষ হাজার কোটি! সাধারণ লগ্নিকারীদের এই বিপুল পরিমাণ অর্থ আজ বাজার থেকেও হাওয়া। নথিভুক্ত হওয়ার দিনে বাজারে ভারতীয় জীবন বিমা নিগমের মূলধনের পরিমাণ ছিল প্রায় ৫ লক্ষ ৫৪ হাজার কোটি টাকা। অঙ্কের বিচারে দেশের সেরা পাঁচটি সবচেয়ে মূল্যবান সংস্থার মধ্যে অন্যতম ছিল তারাই। ঠিক এক বছর পর, LIC-এর মূলধন ৩ লক্ষ ৬০ হাজার ৫৮৮ কোটি টাকায় এসে দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ, প্রায় ১ কোটি ৯৩ হাজার ৪১২ কোটি কম। তার জেরে বর্তমানে মূলধনের বিচারে দেশের সেরা কোম্পানির তালিকায় ১৩তম স্থানে নেমে গিয়েছে LIC. সৌজন্যে মোদি-আদানি জুটি(Modi Adani Alliance)। তৃণমূলের দাবি, এটাই স্বাধীন ভারতের সবচেয়ে বড় দুর্নীতির কলঙ্কময় অধ্যায়।

বিষয়টি নিয়ে দেশের সমস্ত বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে সোচ্চার হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার এমন ঘটনায় দায়ী করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি ও তাঁর আদরের আদানি গ্রুপকে। তিনি বলেন, “মোদি সরকারের বিরাট দুর্নীতি। অনিয়ন্ত্রিত অর্থনৈতিক ব্যবস্থা, মুষ্টিমেয় কিছু শিল্পপতিকে অনৈতিকভাবে বিপুল আর্থিক সুবিধা পাইয়ে দেওয়া। মোদির হুকুমই আদানির সাম্রাজ্যে বিপুল টাকা ঢেলে এই পতন। মোদি সরকারের সৌজন্যে আদানিকে বিপুল টাকা দিয়ে LIC এখন দেউলিয়া হওয়ার পথে এগিয়ে চলেছে। ৫০ শতাংশ বাজার মূল্য কমে গিয়ে টাকার অঙ্কে যা প্রায় ২ লক্ষ কোটি। তা আজ অবলুপ্ত হয়েছে। যা সাধারণ মানুষের। মোদি সরকার সেটা আড়াল করতে চাইছিল। কিন্তু ধরা পড়ে গিয়েছে। ফলে বলতেই হচ্ছে মোদি-আদানি অশুভ আঁতাতে স্বাধীন ভারতের সবচেয়ে দুর্নীতির কলঙ্কময় অধ্যায়।”

জয়প্রকাশ মজুমদার (JayPrakash Majumder) আরও বলেন, খুব স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, যদি LIC-কে ডোবানোর মূল কারিগর মোদি-আদানি জুটির প্রভাবে দেশের সবচেয়ে বড় বীমা সংস্থার এই হাল হয় তাহলে বুঝে নিন দেশের সবচেয়ে বড় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক এসবিআই-এর কী অবস্থা? সেই রিপোর্ট এখনও সামনে আসেনি। রিপোর্ট এলেই দেখা যাবে টাকার পরিমাণ আরও বেশি। সবমিলিয়ে ৪ থেকে ৫ লক্ষ কোটি টাকা যদি ধরা হয়, তাহলে সেটাই স্বাধীন ভারতের সবচেয়ে বড় দুর্নীতি!”

হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের একটি রিপোর্ট (Hindenburg Report) ঘিরে ভারতের বাজারে আগেই শুরু হয়েছিল তুমুল আতঙ্ক। আদানির সম্পত্তির তদন্ত নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট সেবিকে তিন মাসের সময় দিয়েছে। হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টের মারাত্মক অভিযোগে নজর রয়েছে দেশের শীর্ষ আদালতের। প্রশ্ন উঠেছে, সেবি কি ঘুমিয়ে ছিল? মোদির নির্দেশেই অনেকটা বাধ্য হয়ে আদানির সাম্রাজ্যে টাকা লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা লাভদায়ী রাষ্ট্রায়ত্ত্য সংস্থাগুলি বিনিয়োগ করে। যা সাধারণ গরিব মানুষের কষ্টার্জিত টাকা, ব্যাংকের টাকা। আদানিরা বাজারে কৃত্রিম অবস্থা সৃষ্টি করে বার বার শেয়ার বাজারকে নয়ছয় করেছে নিজেদের শেয়ারের দাম বাড়িয়ে। মিলিয়ে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে চলেছে LIC. কোটি কোটি গ্রাহকের মাথায় হাত। দেশ জুড়ে ক্ষোভ কেন্দ্রের আর্থিক নীতির বিরুদ্ধে।

 

 

Previous articleমুশকিল আসানে অভিষেক!
Next articleরাজ্যের নতুন নির্বাচন কমিশনার প্রাক্তন মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা!