১০ লাখ ঘণ্টার ক.ঠোর পরিশ্রম, নয়া সংসদের মেঝেতে বঙ্গসন্তানের সংস্থার কার্পেট!

তবে নয়া সংসদ ভবন নিয়ে যতই বিতর্ক হোক না কেন ভবনের মেঝের কার্পেটের সঙ্গে যে বাংলা যোগ স্পষ্ট তা পরিষ্কার।

রবিবার নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। ত্রিভুজাকৃতি তিনতলা নয়া ভবনের মেঝে জুড়ে রয়েছে কার্পেট (Carpet)। অপূর্ব কারুকার্য করা সেই গালিচা তৈরি করেছে বাংলারই এক সংস্থা। উত্তর প্রদেশের (Uttar Pradesh) ৯০০ শিল্পীকে নিয়ে এই কাজ করানো হয়েছে। জানা গিয়েছে, সেন্ট্রাল ভিস্তা (Central Vista) প্রকল্পের আওতাভুক্ত নতুন সংসদ ভবন তৈরি করেছে টাটা গ্রুপ। নয়া ভবনের গালিচা তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয় ওবিতি কার্পেটস (Obiti Carpets) নামের একটি সংস্থাকে। কার্পেট তৈরিতে শতবর্ষ প্রাচীন এই সংস্থার সুনাম দেশজোড়া। তবে নয়া সংসদ ভবন নিয়ে যতই বিতর্ক হোক না কেন ভবনের মেঝের কার্পেটের সঙ্গে যে বাংলা যোগ স্পষ্ট তা পরিষ্কার।

সংস্থার চেয়ারম্যান রুদ্র চট্টোপাধ্যায় (Rudra Chatterjee) বলেন, “দু’টি হাউসের জন্য সাড়ে ১৭ হাজার বর্গফুটের কার্পেট বানানো হয়েছে। আলাদা আলাদা কার্পেট জুড়ে একটি পূর্ণ কার্পেটে রূপ দেওয়ার বিষয়টি পরিকল্পক দলের কাছে অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং ছিল।”

সংস্থা সূত্রে খবর, লোকসভা ও রাজ্যসভার জন্য কার্পেট তৈরি করতে ১০ লাখ ঘণ্টা সময় লেগেছে। প্রসঙ্গত, ১৫০টি করে কার্পেট সংসদের দুই কক্ষের মেঝে ঢাকতে ব্যবহার করা হয়েছে। নির্মাণকারী সংস্থাগুলির দাবি, প্রথমে ছোট ছোট করে কার্পেট তৈরি করা হয়েছিল। পরে সেলাই করে একটি বড় গালিচা তৈরি করা হয়। প্রতিটা কক্ষের প্রায় ৩৫ হাজার বর্গ ফুটের মেঝে ঢেকে দিয়েছে এই কার্পেট। তবে শুধু এই কার্পেটই নয়, নয়া সংসদ ভবনের ভিতরের এক-একটি সামগ্রী নিয়ে আসা হয়েছে দেশের এক-একটি বিশেষ স্থান থেকে। সংসদ ভবনের কার্পেট এসেছে উত্তরপ্রদেশের বিখ্যাত মির্জাপুর থেকে। মেঝে করার বাঁশ আনা হয়েছে ত্রিপুরা থেকে পাথর নিয়ে আসা হয়েছে পাথর শিল্পের জন্য বিখ্যাত রাজস্থান থেকে। বলা যায়, নতুন সংসদ ভবন ভারতের বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির পরিচয় বাহক হয়ে উঠতে চলেছে।

জানা গিয়েছে, নতুন সংসদ ভবনে চেয়ার, টেবিল থেকে যে সমস্ত আসবাব রয়েছে তার পুরোটাই সেগুন কাঠের এবং সেগুলি আনা হয়েছে মহারাষ্ট্রের (Maharashtra) নাগপুর থেকে। গোটা ভবনে লাল-সাদা পাথরের যে কারুকার্য রয়েছে সেই বেলেপাথর আনা হয়েছে রাজস্থানের (Rajasthan) সারমাথুরা এলাকা থেকে। আবার সংসদ ভবনে কারুকাজে ব্যবহৃত সবুজ পাথর এসেছে রাজস্থানের উদয়পুর থেকে আর লাল গ্রানাইট নিয়ে আসা হয়েছে আজমিরের লাখা থেকে। সাদা মার্বেল আনা হয়েছে রাজস্থানের আম্বাজি থেকে। আবার গোটা ভবনে পাথরের যে জালি কাজ রয়েছে সেটি সংগ্রহ করা হয়েছে রাজস্থানের রাজনগর এবং উত্তরপ্রদেশের নয়ডা থেকে।

পাথরের কারুকার্যের জন্য বিখ্যাত রাজস্থান থেকে যেমন পাথর আনা হয়েছে, তেমনই লোকসভা ও রাজ্যসভা কক্ষে যে ফলস সিলিং করা হয়েছে, তার ইস্পাত কাঠামোটি আনা হয়েছে একেবারে দক্ষিণে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল দিউ ও দমন থেকে। আর সেগুন কাঠের আসবাবগুলো তৈরি করে আনা হয়েছে মুম্বই থেকে। পাশাপাশি নতুন সংসদ ভবনে যে অশোক স্তম্ভগুলি রয়েছে, সেগুলি মহারাষ্ট্রের ঔরঙ্গাবাদ এবং রাজস্থানের জয়পুর থেকে নিয়ে আসা হয়েছে। আবার সংসদ ভবন নির্মাণ করছে যে বালি লেগেছে সেটা নিয়ে আসা হয়েছে হরিয়ানার চারখি দাদরি থেকে। গোটা সংসদ ভবন তৈরিতে অ্যাশ ফ্লাইয়ে তৈরি ইট ব্যবহার করা হয়েছে। সেগুলি আনা হয়েছিল হরিয়ানা এবং উত্তরপ্রদেশ থেকে। আর ভবনের ভিতর পিতলের যে কাজ করা হয়েছে সেগুলি একেবারে গুজরাটের আহমেদাবাদ থেকে করে আনা হয়েছে।

 

 

Previous articleবিশ্ব টেস্ট চ‍্যাম্পিয়নশিপে ভারতীয় দলে রুতুরাজের জায়গায় এলেন যশস্বী
Next articleবন্ধুর জ্বলন্ত চি*তায় ঝাঁপ যুবকের , তারপর…