যাদবপুর ছাত্রমৃত্যু কাণ্ডে রহস্যের জট যত খুলছে, ততই বেরিয়ে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। বাড়ছে গ্রেফতারির সংখ্যাও। হস্টেলে নবাগত পড়ুয়াদের উপর বিভিন্ন কায়দায় অকথ্য অত্যাচার চালানো হতো। সেইসঙ্গে উঠে আসছে র্যাগিংয়ের হাড়হিম বর্ণনা।
আরও পড়ুনঃ পরিবারকে না জানিয়ে প্রেমিকার দেহ ‘সৎকার’! আমতলা শ্মশা*নে উত্তেজ*না

কিন্তু এবার যে তথ্য উঠে এসেছে, তা শুনলে রীতিমতো আঁতকে উঠতে হয়। একেবারে সিন্ডিকেট খুলে তোলাবাজি চলতো বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন হস্টেলে। সামনে এলো রেটকার্ড ধরে তোলাবাজির অভিযোগ। পুলিশের দাবি, ছাত্রমৃত্যুর মূলপাণ্ডা র্যাগিংবাজ সৌরভ চৌধুরী ও তার গ্যাং হস্টেলের মধ্যে কার্যত কর্পোরেট কায়দায় তোলাবাজি চালাতো। সেই গ্যাংয়ের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে যাদবপুর থানার পুলিশ। তাদের জেরা করে আরও তথ্য উঠে আসবে বলে মনে করছে তদন্তকারীরা।
কীভাবে চলত তোলাবাজি? প্রথমে দেখে নেওয়া হয় হস্টেলে আসা নবাগত ছাত্রদের পরিবারিক ‘ইনকাম প্রোফাইল’। একদম কর্পোরেট ধাঁচে নামের তালিকা তৈরি হতো। নামের পাশে লেখা থাকত কোন ছাত্রের থেকে কত টাকা নেওয়া হবে। এরপর তালিকা ধরে ধরে চাপ দিয়ে, ভয় দেখিয়ে, ব্ল্যাকমেইল করে সেই টাকা তোলা হতো। অনলাইনেও টাকা নেওয়া হতো। টাকা হাতে পড়তেই শুরু হয়ে যেত দেদার মোচ্ছব।

পুলিশ সূত্রে আরও দাবি, এই র্যাগিং গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিযোগ করা যেত না। কারণ, কোনও না কোনওভাবে খবর পৌঁছে যেত সৌরভ বাহিনীর কাছে। তখনই ‘টার্গেট’ হয়ে যেতেন সেই নবাগত পড়ুয়ারা। ফলে মুখ বুজে সহ্য করতে হতো অত্যাচার। চাহিদা মতো দিতে হতো টাকা।

সূত্রের খবর, সৌরভের এই গ্যাংয়ে প্রায় ১৫ জন প্রাক্তন ও বর্তমান পড়ুয়া ছিল। হস্টেলের এ-২ ব্লক ছিল তাঁদের মুক্তাঞ্চল। এর মধ্যেই চলত রাজনৈতিক ক্ষমতা দখলের প্রয়াসও। পুলিশ জেনেছে, নবাগতরা যাতে ক্যাম্পাসের ক্ষমতাশালী ছাত্র সংগঠনে ভিড়ে না যায়, তার চেষ্টা চলত হস্টেলে। এমনকী, হস্টেলে দিনরাত উচ্ছৃঙ্খল কার্যকলাপের জন্য আশপাশের বিল্ডিংয়ের বাসিন্দারা সেদিকের জানলা বন্ধ রাখতে বাধ্য হতেন।
