চন্দ্রযান সাফল্যে ভাগ তো বসালেন, কুস্তি ফেডারেশনের নির্বাসনের দায় নেবেন তো মোদি?

ভারতের হাতের মুঠোয় যখন চাঁদ, ঠিক সেই সময় দেশের ক্রীড়া ইতিহাসে রচিত হল এক কলঙ্কময় অধ্যায়। বিশ্বের বুকে নির্বাসিত ভারতীয় কুস্তি সংস্থা

গোটা বিশ্বকে তাক লাগিয়ে চাঁদের মাটিতে বিক্রম দেখাচ্ছে ভারত। ইসরোর এমন কৃতিত্বে গর্বে বুক ফুলে উঠছে ভারতবাসীর। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণার ইতিহাসে এই দিনটি উজ্জ্বল হয়ে থাকবে। চাঁদের মাটিতে ভারতের তেরঙ্গা।

আরও পড়ুনঃ এক মাথা দুই মুখওয়ালা বাছুর! শুনতে ‘আজব’ মনে হলেও সত্যি

বিক্রমের চাঁদে পা রাখার সঙ্গে সঙ্গে লাইভ টেলিকাস্টে গোটা স্ক্রিন জুড়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তখন তিনি ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিয়ে সুদূর দক্ষিণ আফ্রিকায়। শরীরী ভাষা এমন, যেন চন্দ্রযান-৩, তাঁর নির্দেশেই চাঁদ জয় করেছে। পরোক্ষে নিজেকে সাফল্যের ভাগীদার বানাতেও কসুর করেননি বিজ্ঞাপন সর্বস্ব মোদি।

কিন্তু ভাগ্যের কী পরিহাস! ভারতের হাতের মুঠোয় যখন চাঁদ, ঠিক সেই সময় দেশের ক্রীড়া ইতিহাসে রচিত হল এক কলঙ্কময় অধ্যায়। বিশ্বের বুকে নির্বাসিত ভারতীয় কুস্তি সংস্থা। ইউনাইটেড ওয়ার্ল্ড রেসলিং ইতিমধ্যে রেসলিং ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ার সদস্যপদ খারিজ করে দিয়েছে।নির্দিষ্ট সময়ে নির্বাচন না করার ‘অপরাধে’ই ভারতীয় কুস্তি ফেডারেশনের সদস্যপদ কেড়ে নেওয়া হয়েছে।

এর অর্থ, ভারতীয় কুস্তিগীররা আগামীদিনে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে দেশের পতাকা নিয়ে খেলতে নামতে পারবেন না। আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে বিশ্ব কুস্তি চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু হতে চলেছে। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের পাশাপাশি প্যারিস অলিম্পিক্সে আবার যোগ্যতাও অর্জন করতে হবে। কুস্তির লড়াইয়ে বিশ্বের দরবারে উড়বে না তেরঙা, বাজবে না জাতীয় সঙ্গীত!

এই কলঙ্কিত পরিস্থিতির জন্য সম্পূর্ণভাবে দায়ী কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকার। বছরের পর বছর কুস্তি সংস্থাকে কুক্ষিগত করে রেখেছে বিজেপি। সংস্থার প্রাক্তন সভাপতি ব্রিজভূষণ শরণ সিংয়ের বিরুদ্ধে মহিলা কুস্তিগিরদের উপর শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ ছিল। দেশের হয়ে পদক জেতা ভারতীয় কুস্তিগিররা বিপদে।স্তম্ভিত গোটা দেশ। এটা একটা লজ্জার ব্যাপার। কেন্দ্রীয় সরকার কুস্তিগীরদের বিরুদ্ধে ঔদ্ধত্য দেখিয়ে তাঁদের সম্মান ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছে। অপরাধীদের শাস্তি দেওয়া উচিত। হিসাব বুঝে নেওয়ার দিন আসন্ন। কেন্দ্র ও বিজেপির নারীবিদ্বেষ নিয়েও সওয়াল করেন অনেকে।

চাঁদের মাটিতে যখন গর্বের জাতীয় পতাকা উড়ছে, তখন অহংকারী মোদি বিজ্ঞানীদের সাফল্যে ভাগ বসিয়ে কৃতিত্ব নিলেন। এখন যখন তাঁর সরকার ও দলের অপদার্থ লোকেদের নিয়ন্ত্রণে থাকা কুস্তি ফেডারেশন নির্বাসনে, বিশ্ব কুস্তির ময়দানে উড়বে না তেরঙা, বাজবে না জাতীয় সঙ্গীত, তখন বড়ই নিশ্চুপ মোদিজি! চন্দ্রযান সাফল্যে ভাগ তো বসালেন, কুস্তি ফেডারেশনের নির্বাসনের দায় নেবেন না তিনি?