এক দেশ, এক নির্বাচন: সংবিধান পরিবর্তনে যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠানো ধ্বং.সের লক্ষ্যে মোদি

বিষয়টি নিয়ে মুম্বইয়ে INDIA জোটের বৈঠকেও গুরুত্ব সহকারে আলোচনা হয়েছে। বিরোধীরা মনে করছে, এমন সিদ্ধান্ত তুঘলকি। দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোকে ভেঙে দিতে চাইছে মোদি সরকার।

ওয়ান নেশন, ওয়ান ইলেকশন। অর্থাৎ, এক দেশ, এক নির্বাচন। এই লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই প্যানেল গঠন করেছে কেন্দ্রের। নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) সরকার। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে রাখা হয়েছে সেই কমিটির মাথায়। তাঁর নেতৃত্বেই কমিটি পর্যালোচনা করে দেখবে যে, ভারতে ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ ব্যবস্থা কার্যকর করা সম্ভব কি না।

এই বিষয়ে আলোচনার জন্য সংসদের বিশেষ অধিবেশনও ডাকা হয়েছে। ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে ২২ সেপ্টেম্বর ৫ দিনের বিশেষ অধিবেশন বসবে এক দেশ, এক নির্বাচন এজেন্ডাকে সামনে রেখে। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, সংসদের এই বিশেষ অধিবেশনে ‘এক দেশ, এক ভোট’-এর লক্ষ্যে বিলও আনতে পারে কেন্দ্র। যদিও সরকারের তরফে এখনও কেউ এই বিষয়ে কিছু চূডান্ত করে কিছু জানায়নি। তবে মোদি সরকার এমনটা করতে পারে আঁচ করে বিরোধিতায় জোট বাঁধছে বিরোধীরাও। বিষয়টি নিয়ে মুম্বইয়ে INDIA জোটের বৈঠকেও গুরুত্ব সহকারে আলোচনা হয়েছে। বিরোধীরা মনে করছে, এমন সিদ্ধান্ত তুঘলকি। দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোকে ভেঙে দিতে চাইছে মোদি সরকার।

মোদি সরকারের এই পদক্ষেপে ভবিষ্যৎটা স্পষ্ট—বদলাচ্ছে সংবিধান। কায়েম হবে একাধিপত্য। প্রশাসনিকভাবে সেই পথচলা শুরু করে দিয়েছে কেন্দ্র। কারণ, একই সঙ্গে লোকসভা ও বিধানসভা ভোটের সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে পাঁচটি সাংবিধানিক ধারার সংশোধন করতে হবে। ফলে অনেকটাই বদলে যাবে ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর খোলনলচে। পাশাপাশি একঝাঁক প্রশ্ন আবর্তিত হচ্ছে এই সিদ্ধান্তকে ঘিরে। সামগ্রিক নির্বাচনের পর কোনও রাজ্যের সরকারের যদি হঠাৎ পতন ঘটে, তখন সেই রাজ্যে কী হবে? পাঁচ বছরের অপেক্ষা? রাষ্ট্রপতি শাসন? কবে আবার একসঙ্গে লোকসভা ও বিধানসভা ভোট হবে, সেই পর্যন্ত? অর্থাৎ আদতে কেন্দ্রের শাসন। কিন্তু যদি কেন্দ্রীয় সরকারের পতন হয়? তাহলে সব রাজ্যে আবার নির্বাচন হবে? ১৯৭১, ১৯৮০, ১৯৮৪, ১৯৯১, ১৯৯৮, ১৯৯৯, ২০০৪—এই বছরগুলিতে সময়ের আগেই ভেঙে পড়েছে কেন্দ্রের সরকার। বিধানসভার নিরিখে তো উদারহণ অসংখ্য। তাহলে এই সমস্যা কীভাবে মিটবে?

উল্লেখ্য, ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ বলতে বোঝায় সারা দেশে লোকসভা এবং রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনগুলি একযোগে অনুষ্ঠিত হওয়া। যেমনটি ভারতে প্রথম কয়েক দফা নির্বাচনের সময় হয়েছিল। ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত ভারতে একযোগে লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচন পরিচালনার নিয়ম ছিল। আর সেইভাবে চারটি নির্বাচনও অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ১৯৬৮-৬৯ সালে কিছু রাজ্যের বিধানসভা অকালে ভেঙে যাওয়ার পর এই একযোগে ভোট ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যায়। এখন বিজেপি এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে এই বিষয়ে কথা বলেছেন। পাশাপাশি এটি ২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির ইশতেহারেও ছিল।

Previous articleসংখ্যা.লঘু উন্নয়নের শীর্ষে বাংলা, স্বীকৃতি কেন্দ্রের
Next articleভারত-পাকিস্তান ম‍্যাচে বৃষ্টির সম্ভাবনা, ভেস্তে গেলে খেলা কি হবে? কী বলছে নিয়ম?