বকেয়া আদায়ে সত্যাগ্রহ তৃণমূলের: অভিষেকের নেতৃত্বে দিল্লির বৈঠকে চূড়ান্ত হল কর্মসূচি

বাংলার প্রাপ্য টাকা আদায় সোমবার থেকে সত্যাগ্রহ আন্দোলনে নামতে চলেছে তৃনমূল। ওইদিন অর্থাৎ ২ অক্টোবর বিকেলে দিল্লিতে বসবে দ্বিতীয় বৈঠক সেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে ৩ অক্টোবরের কর্মসূচির, রবিবার দিল্লিতে সাংসদ সৌগত রায়ের বাসভবনে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো।

রবিবার রাত আটটা নাগাদ দিল্লিতে সাংসদ সৌগত রায়ের বাসভবনে বৈঠকে বসেছিল তৃণমূল‌। সেখানে সোমবারের কর্মসূচির রূপরেখা তৈরি করে দেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠক শেষে তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জানান, সোমবার বেলা দেড়টায় রাজঘাটে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে দুঘণ্টার অবস্থানে বসবে সব সাংসদ – মন্ত্রীরা। এরপর বিকেল সাড়ে তিনটেয় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর বিকেলে তিন অক্টোবরের কর্মসূচি ঠিক করতে সুদীপ বন্দোপাধ্যায়ের বাসভবনে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এর নেতৃত্বে বৈঠকে বসবে তৃণমূল। এই বৈঠকের উপস্থিত থাকবেন জনা পনেরো নেতৃত্ব।

তৃণমূল সূত্রের খবর, এদিনের বৈঠকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট জানান, ডু অর ডাই এই মনোভাব নিয়েই লড়তে এসেছি। বাংলার হক আদায়ের লড়াই এ পিছপা হবো না। ওরা লাঠি চালাক গুলি চালাক বাংলার মানুষের জন্য লড়াই – আন্দোলন চালিয়ে যাব। এই আন্দোলন দিল্লিতেই শেষ হয়ে যাবে না, লাগাতার চলবে। অভিষেক এদিন দলের ছাত্র – যুবদের নির্দেশ দিয়েছেন, বাসে করে যেসব জব কার্ড হোল্ডাররা এসেছেন তাদের সেন্ট্রাল ভিস্তা আর নতুন সংসদ ভবন ঘুরিয়ে দেখানো হোক। যাতে তারা বুঝতে পারে, তাদের হকের টাকা দিচ্ছে না যারা সেই বিজেপি ২০ হাজার কোটি টাকা অপ্রয়োজনীয় খরচ করে কীভাবে অট্টালিকা তৈরি করেছে। আর ভাতে মারছে বাংলার মানুষকে। এখনো পর্যন্ত সিদ্ধান্ত হয়ে আছে ৩ তারিখ সকাল দশটায় যন্তর মন্তরে ঝরনা কর্মসূচি পালন করবে দল। একটি প্রতিনিধি দল কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন ও পঞ্চায়েতিরাজ মন্ত্রী গিরিরাজ সিং এর অফিসে যাবেন। এই সিদ্ধান্ত হয়ে থাকলেও এখনো পর্যন্ত সময় চূড়ান্ত করা যায়নি। সোমবার বিকেলের বৈঠকেই আন্দোলনের রণকৌশল চূড়ান্ত হবে।

রবিবারের বৈঠকে প্রায় জনা ২০ সংসদ ,মন্ত্রী ও নেতা বক্তব্য রাখেন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সবটা খোলা মনো শোনেন। সবশেষে নিজেও বক্তব্য রাখেন। এই বৈঠকের স্পিরিট ছিল যাই ঘটুক না কেন বঞ্চনার বিরুদ্ধে লড়াই আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে। এই আন্দোলন করতে গিয়ে গ্রেফতারও হতে হয়, লাঠি খেতে হয় তাতেও কুছ পরোয়া নেহি । খোলা মনে সবটা শোনার পর অভিষেক স্পষ্ট জানিয়ে দেন এরা যেরকম ব্যবহার করবে ঠিক সেই রকমটাই আমরা ফেরত দেব। বিজেপি বুঝে গেছে এই আন্দোলনের ফলে তারা যথেষ্ট ব্যাকফুটে চলে গিয়েছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনেও বাংলার মানুষ বুঝিয়ে দিয়েছে এখানে বিজেপির ঠাঁই নেই। কিন্তু কেন্দ্রের বঞ্চনা, দু বছরেরও বেশি সময় ধরে টাকা আটকে রাখা ,এগুলি মানুষকে বোঝাতে আমাদের অনেকটা সময় লেগেছে। আমি এটি প্রথম উপলব্ধি করি নবজোয়ার কর্মসূচি করার সময়। আমার বিশ্বাস আমরা মানুষকে বোঝাতে পেরেছি কিন্তু আরও বেশি করে মানুষকে বোঝাতে হবে। অভিষেক বলেন ,সামনেই উৎসবের মরশুম । মানুষ দুর্গাপুজো কালীপুজোয় মেতে থাকবেন। কিন্তু আমি চাই এর মধ্যেও এই আন্দোলন চালিয়ে যেতে। তৃণমূল কংগ্রেসের সৈনিকদের থামলে চলবে না। আমি বলছি না আমরা উৎসব আনন্দ করবো না কিন্তু তার মাঝেও আমাদের লক্ষ্যে অবিচল থাকতে হবে। এই লড়াই আমাদের জিততেই হবে।

রবিবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ সাংসদ সৌগত রায়ের দিল্লির বাসভবনের বৈঠকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও এদিনের বৈঠকে বক্তব্য রাখেন, সুব্রত বক্সি, কল্যাণ বন্দোপাধ্যায়, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম,অরূপ বিশ্বাস,ব্রাত্য বসু,শশী পাজা, চন্দ্রীমা ভট্টাচার্য, পার্থ ভৌমিক, ইন্দ্রনীল সেন, স্নেহাশিষ চক্রবর্তী, মালা রায়, সমীর চক্রবর্তী, উদয়ন গুহ, তাপস রায়, কুণাল ঘোষ , মহুয়া মৈত্র, বিরবাহা হাঁসদা, শতাব্দী রায়, শান্তনু সেন, পার্থ ভৌমিক, সুজিত বসু, বেচারাম মান্না, প্রতীমা মন্ডল, মানস ভুঁইয়ারা। পাশাপাশি বক্তব্য রাখেন, সংসদ ডেরেক ওব্রায়েন ও সৌগত রায়।

Previous articleসুখবর : ক্যানভাস স্বয়মের নিবেদন ‘ডিজিটাল ক্যানভাস’, এক অ্যাপেই পুজো ফি.ভার
Next articleমিথ্যা অ.ভিযোগ! বিজেপি রাজ্য সভাপতির বি.রুদ্ধে মা.মলা করতে চলেছেন কালনার বিধায়ক