‘র.ক্তবীজ’ জুড়ে প্রতিমুহূর্তে র.হস্য, সৃজিতের প্রথম কপ ইউনিভার্সে মজল দর্শক

পুজোর গন্ধ মাখা ছবিতে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত রহ.স্যে জোর দেওয়া হয়েছে চিত্রনাট্য অনুযায়ী। টানটান থ্রিলার দর্শকে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ধোঁয়া.শার মধ্যে রাখবে।

পুজোয় একসঙ্গে চারটে হেভিওয়েট বাংলা সিনেমার মুক্তি (Durga Puja Movie Release)। টানটান উত্তেজনা ছিল ফ্যানেদের মধ্যেও। একদিকে নন্দিতা রায় ও শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ‘রক্তবীজ’ (Raktabeej), অন্যদিকে সৃজিত মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ‘দশম অবতার'(Dawshom Awbotaar)। দেব (Dev) অভিনীত ‘বাঘা যতীন’ এবং কোয়েল মল্লিক (Koel Mallick)অভিনীত ‘জঙ্গলে মিতিন মাসি’ একই সঙ্গে মুক্তি পেলেও লড়াই হল প্রথম দুটো সিনেমার মধ্যে। নিজেদের পরিচিত ঘরানা থেকে বেরিয়ে রহস্যের টানটান উত্তেজনা উপহার দিলেন শিবু- নন্দিতা জুটি। এক মুহূর্ত গল্প থেকে চোখ সরে না। সঙ্গে আবার রয়েছে পুজোর আমেজ। অন্যদিকে, ইতিহাস, পুরাণ, কবিতা, সাহিত্য, থ্রিলারের শেষে টুইস্ট – এইসব নিয়ে স্বমহিমায় হাজির ‘দশম অবতার’। কে এগিয়ে?

এই মুহূর্তে কপ ইউনিভার্সের কথা বললে দর্শকের মনে ‘পাঠান’ কিংবা টাইগার সিরিজের সিনেমার কথাই আসবে। জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত বাঙালি পরিচালক এই বিষয়টা জানতেন। তাই দুই ছবির দুই দুঁদে পুলিশ অফিসারকে এক ছবিতে এনে নিজের সিগনেচার ফুটিয়ে তুলেছেন। এটা যে ১২ বছর আগের ছবির প্রিকুয়েল সেটা এতদিনে সকলেই জেনে গেছেন। তবে বলতেই হয় কাঁচা খিস্তি দিতে থাকা প্রবীর রায়চৌধুরীর অবলীলায় বেদ-উপনিষদ আওড়ানো দেখে মনে হবে বয়স সত্যিই একটা সংখ্যা মাত্র। প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় (Prosenjit Chatterjee) যে কী করতে পারেন না সেটাই এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে বলতেই হয় এই ছবির সম্পদ অভিনেতা অনির্বাণ ভট্টাচার্য (Anirban Bhattacharya)। গোটা ছবি জুড়ে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন। রাগ-দুঃখ-অভিমান, সব দৃশ্যেই তিনি এতটা সাবলীল যে, দর্শক শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করে থাকবেন, কখন আবার পর্দায় ‘ ইন্সপেক্টর পোদ্দার’কে দেখা যাবে। যীশু ও জয়া তাঁদের মতো যথাযথ। কিন্তু চেনা শত্রুকে নিয়ে রোমাঞ্চ তৈরীর খুব একটা অবকাশ চিত্রনাট্যে ছিল না। তাই ‘২২শে শ্রাবণ’-এর স্মৃতিতে ডুবে থাকা বাঙালি দর্শকের কাছে এই ছবি হয়তো ততটা মন ছুঁয়ে যাওয়া নাও হতে পারে।

এবার আসা যাক ‘রক্তবীজ’ সিনেমার প্রসঙ্গে। ট্রেলার এবং ছবির বিভিন্ন ভাইরাল মুহূর্তের ঝলক থেকে এটা পরিষ্কার যে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন ভিক্টর বন্দ্যোপাধ্যায় (Victor Banerjee)। তাঁর চরিত্রে বিশেষ এক্সপেরিমেন্ট করা জায়গা ছিল না কিন্তু প্রতিমুহূর্তে রাশভারি উপস্থিতিতে একের পর এক রহস্যের ইঙ্গিত তৈরি হয়েছে। ভাই বোন হিসেবে ভিক্টর-অনুসূয়া কেমিস্ট্রি সুন্দর। আবির চট্টোপাধ্যায় ও মিমি চক্রবর্তী (Abir Chatterjee and Mimi Chakraborty) দুজনেই সমাজের রক্ষকের ভূমিকায়। প্রেমটা হল কি হলো না সেটার জন্য অবশ্যই সিনেমাটা দেখতে হবে। তবে শিবু-নন্দিতা জুটি আরও একবার টলিউডের বক্স অফিসে যে বাজিমাত করবেন সেটা প্রথম দিন থেকেই স্পষ্ট। নন্দিতা-শিবপ্রসাদের ছবিতে পর্দা ভিজল রক্তে, চলল গুলি, সন্ত্রাস। নানা বয়সের দর্শকের চাহিদা মেটাতেও যে তাঁরা সক্ষম সেটা এই ছবিতেই বুঝিয়ে দিলেন টলিপাড়ার জনপ্রিয় পরিচালক জুটি। ছবিতে চরিত্রেরা আলাদা আলাদা করে খুব সবল না হলেও, কাউকেই বিশেষ দুর্বল বলার নয়। পুজোর গন্ধ মাখা ছবিতে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত রহস্যে জোর দেওয়া হয়েছে চিত্রনাট্য অনুযায়ী। টানটান থ্রিলার দর্শকে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ধোঁয়াশার মধ্যে রাখবে। আর এখানেই সাফল্য রক্তবীজের। বক্সঅফিস বলছে আগামী চার দিন হই হই করে ব্যবসা করবে এই নতুন বাংলা ছবি।

Previous articleবাংলাদেশের বিরুদ্ধে নামার আগে অনন্য রেকর্ডের সামনে দাঁড়িয়ে রোহিত-শুভমন
Next articleরক্তবীজ: টানটান রহস্য আর জমজমাট অভিনয়, এই ছবি পুজোর Must Watch