ওপেনএআই-র সিইও পদ থেকে অপসারিত অল্টম্যান! নয়া দায়িত্বে ভারতীয় বংশোদ্ভূত মীরা

তবে এই ঘটনার পরই চ্যাটজিপিটির সহ-প্রতিষ্ঠাতা তথা সংস্থার প্রেসিডেন্ট গ্রেগ ব্রকম্যান নিজে থেকেই পদত্যাগ করেন বলে জানা গিয়েছে।

বোর্ড অফ ডিরেক্টরদের সঙ্গে ঠিকমতো যোগাযোগ না রাখার পাশাপাশি কোম্পানির কাছে তথ্য গোপনের মতো গুরুতর অভিযোগ। আর তার খেসারত যে এভাবে চোকাতে হবে তা হয়তো দুঃস্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেননি। শেষমেশ ওপেনএআই (Open AI) সংস্থার সিইও পদ থেকে ছাঁটাই করা হল চ্যাটজিপিটি-র (Chat GPT) ‘স্রষ্টা’ স্যাম অল্টম্যানকে (Sam Altman)। সংস্থার অভিযোগ অল্টম্যান নাকি কোম্পানির বোর্ডের কাছে তথ্য গোপন করছিলেন। আর সেকারণেই তাঁকে চ্যাটজিপিটি পরিচালনার দায়িত্বে আর রাখা হবে কিনা তা নিয়ে জরুরি ভিত্তিতে একটি রিভিউ বৈঠক ডাকা হয়েছিল। আর সেই বৈঠকেই অল্টম্যানকে মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সংস্থার তরফে একটি বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, চ্যাটজিপিটি পরিচালনার ক্ষেত্রে বোর্ড আর তাঁর উপর ভরসা রাখতে পারছে না। তবে অল্টম্যানকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর ওপেনএআই-এর অন্তর্বর্তী সিইও হিসাবে দায়িত্ব তুলে দেওয়া হল ভারতীয় বংশোদ্ভূত মীরা মুরাতির (Mira Murati) হাতে। এর ফলে বিশ্বের আরও এক বড় প্রযুক্তি সংস্থার শীর্ষপদে আসীন হলেন এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত।

তবে চ্যাটজিপিটি তৈরির ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল অল্টম্যানেরই। তাঁকেই চ্যাটজিপিটি-র স্রষ্টা হিসাবে চেনে সারা বিশ্ব। কিন্তু সেই অল্টম্যানকেই এবার সংস্থার সিইও পদ থেকে ছেঁটে দিল‌‌‌‌ ওপেনএআই। ওপেনএআই সাফ জানিয়েছে, অল্টম্যানকে নিয়ে অনেক পর্যালোচনার পর সংস্থার বোর্ড এমন সিদ্ধান্তের পথে হেঁটেছে। সংস্থার আরও অভিযোগ, বোর্ডের সদস্যদের সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে যোগাযোগ বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন অল্টম্যান। পাশাপাশি তিনি যে ভবিষ্যতে ওপেনএআই-র নেতৃত্ব দিতে পারবেন সেবিষয়ে আর কোনও ইতিবাচক দিক দেখতে পাচ্ছে না বোর্ড। আর সেকারণেই তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এদিকে সিইও পদ খোয়ানোর পর অল্টম্যান এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, ওপেনএআই-তে আমি যে সময় কাটিয়েছি, তা ভাল ছিল। ব্যক্তিগতভাবে আমার জীবনে এই সিদ্ধান্ত অনেক বদল আনবে। আশা করি বিশ্বেরও কিছুটা পরিবর্তন হবে। ওপেনএআই-এ আমার সব থেকে বেশি ভালো লেগেছে প্রতিভাবান মানুষদের সঙ্গে কাজ করতে। পরবর্তী কালে আমি কী করব, তা নিয়ে পরে সিদ্ধান্ত নেব। তবে এই ঘটনার পরই চ্যাটজিপিটির সহ-প্রতিষ্ঠাতা তথা সংস্থার প্রেসিডেন্ট গ্রেগ ব্রকম্যান (Greg Brockman) নিজে থেকেই পদত্যাগ করেন বলে জানা গিয়েছে। পদত্যাগের পর সোশ্যাল মিডিয়ায় গ্রেগ লেখেন, আটবছর আগে আমার ফ্ল্যাট থেকে কাজ শুরু হয়েছিল। আমরা যা তৈরি করতে সক্ষম হয়েছি, তা নিয়ে আমি গর্বিত। একসঙ্গে আমরা অনেক কঠিন এবং ভালো সময় কাটিয়েছি। একসঙ্গে অনেক কাজ করেছি বলেই সাফল্য পেয়েছি। তা না হলে এটা অসম্ভব হব। তবে আজ যা খবর শুনলাম, তার পর আমি সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি সবাইকে শুভেচ্ছা জানাতে চাই ভবিষ্যতের জন্য। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জন্য নিরাপদ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবস্থা তৈরির মিশন সম্পন্ন করা সম্ভব। উল্লেখ্য, ৩৮ বছর বয়সি অল্টম্যান খুব অল্প সময়ের মধ্যেই গোটা বিশ্বে পরিচিতি লাভ করেছিলেন চ্যাটজিপিটির দৌলতে। তাঁর সংস্থার তৈরি এই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স চ্যাটবক্স অবাক করা সব কাজ করে দেখিয়েছে বিগত এক বছরে। কবিতা লেখা থেকে শুরু করে গল্প লেখা বা অ্যাপ্লিকেশন লিখে দেওয়া, পরীক্ষার প্রশ্নের জবাব দেওয়ার মতো কাজ এক নিমেষেই করে ফেলে এই চ্যাটবক্স। তবে এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই মাইক্রোসফ্টের শেয়ার ১.৯১ শতাংশ পড়ে গিয়েছে বলে খবর।

 

 

 

 

Previous articleরূপ বদল ফরাসডাঙার, আলোর মালায় চন্দননগরে শুরু জগদ্ধাত্রী বন্দনা!
Next articleআজ কী ঘটেছিল জানেন?