এককালের রোমান্টিক নায়ক। ছিলেন তৃণমূলের সাংসদ-বিধায়ক। তাঁর অকাল প্রয়াণের পরে কেমন আছে পরিবার? উত্তর দিতে গিয়ে সংবাদ মাধ্যমের সামনে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন প্রয়াত অভিনেতা তাপস পালের (Tapas Paul) স্ত্রী নন্দিনী পাল (Nandini Paul) ও কন্যা সোহিনী (Sohini Paul)। এখন সিবিআই-এর কাছে থাকা টাকা ফেরত চান নন্দিনী। কারণ অর্থেকষ্টে রয়েছে তাঁর পরিবার। নন্দিনীর অভিযোগ, তাপসের মৃত্যুর পরে তাঁদের পাশে থাকেনি দল। যদিও নন্দিনীর অভিযোগের মানতে নারাজ শাসকদল। মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানান, তাঁর সঙ্গে তাপসের পরিবাররে পরিচয় রয়েছে। অভিনেতার অকালমৃত্যু দুঃখজনক। পরিবারের মনে অভিমান জমে রয়েছে বলে জানান ফিরহাদ। তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষও জানান, নন্দিনীদির সঙ্গে যোগাযোগ আছে। এই অকালমৃত্যু অত্যন্ত দুঃখজনক। তাপসের পরিবারের প্রতি দলনেত্রী সহমর্মী বলেও মত কুণালের।
তবে, অনেক নেতৃত্বের বিরুদ্ধেই অভিমান ঝরে পড়েছে মা-মেয়ের গলায়। সোহিনীর অভিযোগ, “বাবা জামিন পাওয়ার পর আমরা মলয় ঘটকের অফিসে গিয়েছিলাম। মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বলেছিলেন মলয় সব দেখে নেবেন। চিন্তা করতে হবে না। কিন্তু মলয় ঘটকের অফিসে গিয়ে অপেক্ষার পর শুনতে পাই যে উনি বলছেন, ‘বল, আমি নেই’। তখন বাবার মুখটা আমি ভুলতে পারব না।”
নন্দিনী বলেন, “১ কোটি টাকার বেল বন্ডে জামিন পেয়েছিলেন তাপস পাল (Tapas Paul)। দিদি আমাকে বলেছিলেন মলয়কে সব বলা আছে। টাকা পয়সা ও সবকিছু দেখে নেবে চিন্তা নেই। দলনেত্রীর আশ্বাসে শান্তি পেয়েছিলাম। ১ কোটি টাকার বেল বন্ড অনেক বড় বিষয়। পার্থ চট্টোপাধ্যায়, মলয় ঘটককে ক্রমাগত ফোন করলেও সেসময় কেউ ফোন ধরেননি।” তাপসের স্ত্রীর মতে, ভূবনেশ্বরে স্থানীয়রা তাঁকে সাহায্য করেন। তাপস পাল বাড়ি ফিরে এলে এফডি ভেঙে তাঁদের টাকা তিনি শোধ করেন। তাঁর কথায়, “তাপস পালকে যারা অভিনেতা বানিয়েছেন, আমি তাদের কাছে গিয়ে ন্যায়বিচার চাইব। ১ কোটি টাকা সিবিআইয়ের কাছে আটকে আছে, ওটা ফেরত চাই। ওই টাকাটাই আমার সম্বল, আমার স্বামীর কষ্টোপার্জনের টাকা।”
মুম্বইতে মৃত্যু হয় তাপস পালের। সোহিনীর অভিযোগ, মুম্বই থেকে বাবার দেহ নিয়ে ফেরার সময় অরূপ বিশ্বাস তাঁদের সঙ্গে ছিলেন। পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু পরে অরূপ বিশ্বাস তাঁর মায়ের ফোন নম্বর ব্লক করে দেন।
আরও পড়ুন: KIFF: পুরস্কারের আলোয় বিশ্ব সিনেমার বঙ্গ ভ্রমণের ঝলমলে সমাপ্তি! আসছে বছর আবার হবে
নন্দিনীর প্রশ্ন, কেন তাপসের সঙ্গে এতো খারাপ ব্যবহার করা হল! শাসকদলের বিভিন্ন নেতা, মন্ত্রী, সাংসদদের কাছে চিঠি লিখেও কোনও উত্তর পাননি বলে অভিযোগ মা-মেয়ের। এখন তাঁদের অর্থের কষ্ট। কীভাবে তার থেকে মুক্তি পাবেন- তা ভেবেই আকুল নন্দিনীর।
তাপস পালের আকালমৃত্যু অত্যন্ত বেদনাদায়ক বলে জানান কুণাল ঘোষ। তাঁর কথায় তাপস পালের পরিবারের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ আছে। এই মৃত্যু পরিবারের উপর প্রভাব ফেলেছে। তার জন্য তাঁদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে।