বাংলাকে ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদার দাবিতে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি মুখ্যমন্ত্রীর, নিশানায় বিগত বাম সরকার

বাংলা ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা দেওয়ার দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে (Prime Minister) চিঠি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বৃহস্পতিবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন, তামিল, মালায়লম, ওড়িয়ার মতো আঞ্চলিক ভাষা যদি ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা পায় তবে আড়াই হাজার বছরের প্রাচীন বাংলা ভাষা কেন ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা পাবে না? এই বিষয় নিয়ে বিগত বাম সরকারকেও নিশানা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমাদের সবরকম পাওয়ার যোগ্যতা ছিল। কিন্তু অপদার্থতা আমাদেরই। কারণ, আগে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা কখনও এটা নিয়ে ভাবেননি, চর্চাও করেননি। তাঁদের রাজনীতি নিয়ে যতটা মন ছিল, এসব করা নিয়ে কোনও মন ছিল না।

কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক প্রাচীনত্ব সহ যেসব মাপকাঠি মেনে প্রাদেশিক ভাষাগুলিকে ধ্রুপদী ভাষা হিসাবে স্বীকৃতি দেয় বাংলা ভাষা সেই সব মাপকাঠি পূরণ করে। ইতিহাস, প্রাচীন লিপি ও ভাষার বিবর্তন নিয়ে এই গবেষণায় উঠে এসেছে, গত আড়াই হাজার বছর ধরে বাংলাভাষার জন্ম ও বিবর্তন হয়েছে। এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “অন্য রাজ্যের ক্লাসিকাল ভাষা যদি সেগুলি স্বীকৃতি পায়, তাহলে আমাদের ভাষা কেন পাবে না? আমাদের সবরকম পাওয়ার যোগ্যতা ছিল। কিন্তু অপদার্থতা আমাদেরই। কারণ, আগে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা কখনও এটা নিয়ে ভাবেননি, চর্চাও করেননি। তাঁদের রাজনীতি নিয়ে যতটা মন ছিল, এসব করার কথা মনে ছিল না।

মুখ্যমন্ত্রী জানান, “এটা হয়ে গেলে, এটি একটি সেন্টার অব এক্সিলেন্স তৈরি হবে। বাংলা পৃথিবীর গুরুত্বপূর্ণ ভাষার মধ্যে একটি। আমরা গবেষণার মাধ্যমে বাংলার প্রাচীনতা ও ধ্রুপদী মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করলাম। কেন্দ্র এবার ক্লাসিক্যাল ভাষা হিসেবে বাংলাকে মেনে নিক। এই নিয়ে আমি আজকেই কেন্দ্রকে চিঠি দিয়েছি।“ সেই চিঠির সঙ্গে পণ্ডিত ও সরকারি আধিকারিকদের দিয়ে তৈরি করা চার খণ্ডে প্রামাণ্য গবেষণাপত্র তৈরি করে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঠানো হচ্ছে।

একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি চিঠি দিয়েছেন। যেখানে বাংলা ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষার স্বীকৃতি দেওয়ার পাশাপাশি রাজ্যের নাম বদল করে বাংলা করার পুনরায় দাবি জানানো হয়েছে।

 

মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, বাংলার দীর্ঘদিন ধরে অনেক ব্যাপারেই বঞ্চিত। এমনকী কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক বিভিন্ন মাপকাঠি মেপে কোনও কোনও ভাষাকে ধ্রুপদী ক্লাসিকাল ভাষার স্বীকৃতি দেয়। এখনও পর্যন্ত স্বীকৃতি ধ্রুপদী ক্লাসিকাল ভাষা- তামিল (২০০০), সংস্কৃত (২০০৫), তেলুগু ও কন্নড় (২০০৮), মালায়লাম (২০১৩) এবং ওড়িয়া (২০১৪)। আমি আজ একটি চিঠি প্রধানমন্ত্রীকে পাঠিয়েছি। আমরা গবেষণামূলক তথ্য জোগাড় করে দেখেছি। ইতিহাস, প্রাচীন লিপি ও ভাষার বিবর্তন নিয়ে এই গবেষণা দেখাচ্ছে বাংলা ভাষার জন্ম ও বিবর্তন হয়েছে গত আড়াই হাজার বছর ধরে। এই ধ্রুপদী প্রাচীনতা এবার সরকারের স্বীকৃতির যোগ্য। আমরা অনেক পণ্ডিত ও অফিসারদের নিয়ে চার খণ্ডে প্রামাণ্য গবেষণাপত্র তৈরি করেছি। সেটায় দেখা যাচ্ছে, বাংলা অনেক আগেই ধ্রুপদী ভাষা হিসেবে জাতীয় স্বীকৃতি পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা বঞ্চিত করা হয়েছে।”

 

তিনি প্রশ্ন তুলেছেন“অন্য রাজ্যের ক্লাসিকাল ভাষা যদি সেগুলি স্বীকৃতি পায়, তাহলে আমাদের ভাষা কেন পাবে না?  আমাদের সবরকম পাওয়ার যোগ্যতা ছিল। কিন্তু অপদার্থতা আমাদেরই। কারণ, আগে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা কখনও এটা নিয়ে ভাবেননি, চর্চাও করেননি। তাঁদের রাজনীতি নিয়ে যতটা মন ছিল, এসব করা নিয়ে কোনও মন ছিল না। এটা হয়ে গেলে, এটি একটি সেন্টার অব এক্সিলেন্স তৈরি হবে। বাংলা পৃথিবীর গুরুত্বপূর্ণ ভাষার মধ্যে একটি। আমরা গবেষণার মাধ্যমে বাংলার প্রাচীনতা ও ধ্রুপদী মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করলাম। কেন্দ্র এবার ক্লাসিক্যাল ভাষা হিসেবে বাংলাকে মেনে নিক। এই নিয়ে আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে চিঠি দিচ্ছি।”

Previous articleটি-২০ বিশ্বকাপের আগে বিরাট-রোহিতকে নিয়ে বড় মন্তব্য গাভাস্করের
Next article‘জন কি বাতের’ প্রথম পর্বেই বছরে ২কোটি চাকরির প্রতিশ্রুতি নিয়ে মোদিকে খোঁ.চা তৃণমূলের