পদ্মশ্রী সম্মান ভুলিয়ে দিল ‘স্বীকৃতি না দেওয়া’র দুঃখ

স্বপ্না চক্রবর্তী গানের শ্রষ্টাকে তাঁর স্বীকৃতি দেননি। তিনি বলেননি যে গানটি আসলে লোকশিল্পী রতন কাহারের লেখা। অভিমান হয়েছিল বীরভূমের লোকশিল্পীর।

বীরভূমের লোকশিল্পী রতন কাহার বরাবরই অভিমানী, এটাই যেন তাঁর পরিচয় হয়ে গিয়েছিল। বৃহস্পতিবার পদ্মশ্রী প্রাপকদের তালিকা প্রকাশ হওয়ার পর কিন্তু সেই অভিমানী নবতিপর রতন কাহারের মুখে শুধুই হাসি। নিজের শিল্প অন্যের নাম পরিবেশিত হওয়ার জ্বালা যেন প্রবীন লোকশিল্পী মেটালেন পদ্ম-সম্মান পেয়েই।

সাধারণতন্ত্র দিবসের আগে দেশের পদ্মশ্রী প্রাপকদের যে তালিকা প্রাপকদের প্রকাশ পায় নাম শিল্পী রতন কাহারের। এই নামের সঙ্গে অনেকটাই সমার্থক একটি গান – বড়লোকের বিটি লো লম্বা লম্বা চুল। লোকশিল্পীর পরিচয় যে গান সেটাই একদিন চুরি হয়ে গিয়েছিল শ্রষ্টার কাছে থেকে। ১৯৭২ সালে এই গান বেঁধেছিলেন তৎকালীন যুবক রতন কাহার। তখন তিনি আকাশবাণীতে শিল্পী হিসাবে পরিচিতি পেয়ে গিয়েছিলেন।

এই গান নিয়ে গোল বাধে ১৯৭৬সালে, যখন তাঁরই সহকর্মী এবং একই শহরের বাসিন্দা শিল্পী স্বপ্না চক্রবর্তী বেতারে তাঁর এই গান গেয়ে ফেলেন। কিন্তু স্বপ্না চক্রবর্তী গানের শ্রষ্টাকে তাঁর স্বীকৃতি দেননি। তিনি বলেননি যে গানটি আসলে লোকশিল্পী রতন কাহারের লেখা। অভিমান হয়েছিল বীরভূমের লোকশিল্পীর। দীর্ঘদিন পরে তাঁর নাম প্রকাশ্যে এলেও শ্রষ্টা সেই অন্ধকারেই রয়ে গিয়েছিলেন।

১৬ বছর বয়স থেকে বীরভূমের লালমাটির পথে পায়ে হেঁটে হেঁটে লোকগান লিখতেন রতন কাহার। আধুনিক যুগে এসেও ব়্যাপার বাদশাহ তাঁর গান ‘গেন্দা ফুল’ গেয়ে প্রাথমিকভাবে রতন কাহারকে স্বীকৃতি দিতে ভুলে গিয়েছিলেন। পরে অবশ্য শুধু প্রকাশ্যে স্বীকৃতি দেওয়াই না, লোকশিল্পীকে আর্থিক সাহায্যও দিয়েছিলেন। শিল্পীর প্রতিভার স্বীকৃতি দিতেই এবার সেই রতন কাহারের হাতে উঠছে পদ্মশ্রী সম্মান।

Previous articleক্লাস না করেই স্নাতক শাহরুখ-পুত্র! কী বলছেন শিক্ষিকা
Next article“লড়াই করতে দলের প্রয়োজন নেই”, বোলপুর কেন্দ্রে নিজেই নিজেকে প্রার্থী ঘোষণা অনুপমের