রবিবার ৭৫তম বর্ষে পদার্পণ করল ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। সেই উপলক্ষ্যে একবছর ব্যাপী অনুষ্ঠানের সূচনা হল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের উপস্থিতিতে। সেই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সংবিধানের দ্বায়িত্ব সম্পর্কে বলতে গিয়ে মহাত্মা গান্ধীর বাণী স্মরণ করলেন প্রধান বিচারপতি। সেই সঙ্গে তিনি স্মরণ করিয়ে দিলেন ভারতের সংবিধান নাগরিকদের পরস্পরের প্রতি সম্মান করতে শেখায়। ভারতীয় বিচার ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণভাবে ডিজিটাল করার উদ্যোগ নেওয়া শুরু হল এই অনুষ্ঠান থেকেই।
ক্লাউড-বেসড প্রযুক্তির মাধ্যমে দেশের বিচার ব্যবস্থার সব প্রক্রিয়া ডিজিটাল করার উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানান প্রধান বিচারপতি। এর মাধ্যমে মামলার ই-ফাইলিং, কেসের রেকর্ড, কাগজবিহীন বিচার প্রক্রিয়া ও দফতরের সব কাজ ডিজিটাল করা সম্ভব হবে। এর ফলে দেশের সমস্ত বিচার প্রক্রিয়ার একটি ডিজিটাল তথ্যভাণ্ডারও তৈরি হবে। অন্যদিকে ‘সুস্বাগতম’ অ্যাপের মাধ্যমে বিচার প্রক্রিয়া দেখার সুবিধা পাবেন নাগরিকরা। ইতিমধ্যেই ১.২৩ লক্ষ মানুষ এই অ্যাপ ব্যবহার করে এই সুবিধা উপভোগ করেছেন বলে জানান সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি।
সাধারণ মানুষের জন্য বিচারব্যবস্থাকে আরও সহজ করার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন প্রধান বিচারপতি। সেই প্রসঙ্গেই তিনি মনে করিয়ে দেন মহাত্মা গান্ধী যেমন বলেছিলেন বিচার করার সময় যেন দেশের সবথেকে দরিদ্র ও দুর্বল মানুষটির মুখ স্মরণ করতে। যেন সেই বিচারপ্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে সেই মানুষটির কিছু উপকার করা সম্ভব হয়।
এই প্রসঙ্গেই তিনি বিচার প্রক্রিয়া সহজ করার জন্য চারটি পন্থার কথা উল্লেখ করেন। ‘মুলতুবি সংস্কৃতি’র সমালোচনা করে সেই পথ থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি। বিচার প্রক্রিয়া চলাকালীন মৌখিক বিতণ্ডা যেন গোটা বিচার প্রক্রিয়ার গতি দীর্ঘ না করে, এমন স্মরণ করিয়ে দেন তিনি। পাশাপাশি বিচার প্রক্রিয়ায় নতুন প্রজন্মকে বেশি করে সুযোগ করে দেওয়ার আবেদন করেন তিনি। সর্বশেষে সুপ্রিম কোর্ট ও অন্যান্য আদালতের বিচারকদের ছুটির বিষয়টি আলোচনায় নিয়ে আসার আবেদন করেন তিনি। দীর্ঘ ছুটি বা বিকল্প ব্যবস্থা যেন এমনভাবে হয় যাতে বিচার প্রক্রিয়া দীর্ঘদিন করে না দেয়।