“কমরেড কী বলবেন?” সিপিএমের ‘মহাতারকা’ নীতীশের ‘মহাপাল্টি’তে খোঁচা তৃণমূলের

বিশ্বাসঘাতক, সুবিধাবাদী, ধান্ধাবাজ, নীতিহীন নীতীশের ডিগবাজিতে সারা দেশে ছি ছি পড়েছে। তাঁর পাল্টিতে চারিদিকে যখন নিন্দার ঝড় তখন মুখ লুকাতে ব্যস্ত বঙ্গ সিপিএম নেতারা। কারণ, এই নীতীশকেই কিছুদিন আগে মহাতারকা হিসেবে তুলে ধরেছিল তাঁরা। নিউ টাউনে সিপিএমের ‘জ্যোতি বসু সোশ্যাল স্টাডিজ অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার’ ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে উদ্বোধক হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল এই ‘পাল্টিবাজ’কে। সিপিএমের এহেন মহাতারকার মহাপলায়নে সিপিএমকে কটাক্ষ করতে ছাড়ল না তৃণমূল।

গিরগিটিকে টেক্কা দেওয়া নীতীশের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন বিরোধী জোটের নেতারা। অথচ অদ্ভুতভাবে নীরব সিপিএম। ঠিক সেই সময় ‘চোরের’ মতো মুখ লুকিয়ে থাকা সিপিএমকে কটাক্ষ করে এক টুইট করলেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তিনি লেখেন, “সিপিএমের টাটকা কর্মসূচি। উদ্বোধক ছিলেন নীতীশকুমার। এসে পৌঁছননি তিনি, কিন্তু কদিন ধরে এই বিজ্ঞাপনের প্রচারে মেতেছিল সিপিএম। কমরেড, পলিটব্যুরো কী বলছে?” এর সঙ্গেই নীতীশকে নিয়ে সিপিএমের সেই পোস্টার তুলে ধরেন কুণাল। যেখানে দেখা যাচ্ছে, ১৭ জানুয়ারির ওই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত তালিকায় উদ্বোধক হিসেবে সবার উপরে নাম রয়েছে নীতীশের। তারপর কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন, সীতারাম ইয়েচুরি, সেলিম ও বিমান বসু। সিপিএমের সেই আমন্ত্রণে নীতীশ সাড়া দিলেও শেষ পর্যন্ত ‘শারীরিক অসুস্থতা’র কথা জানিয়ে ওই দিন গরহাজির থাকেন বিরোধী জোট ত্যাগ করে ফের বিজেপির সঙ্গী হওয়া নীতীশ। বলা যেতে পারে তাতে কিছুটা মুখরক্ষা হয়েছে বামেদের। কারণ নীতীশ যদি সেদিন অনুষ্ঠানে আসত তবে সিপিএমের পোড়া মুখে আরও কালি লাগত।

এদিকে নীতীশের এই পাল্টির পর বামেদের কটাক্ষ করার পাশাপাশি তৃণমূলের তরফে দাবি করা হচ্ছে, বিশ্বাসঘাতককে ঠিকই চিনেছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর চিনেছিলেন বলেই নীতীশের পরিবর্তে ইন্ডিয়া জোটের মুখ হিসেবে সর্বজনগ্রাহ্য দলিত নেতা কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের নাম প্রস্তাব করেন তিনি। সেদিন মমতার সিদ্ধান্ত যে ভুল ছিল না এখন তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন জোটের অন্যান্য শরিকরা।

অবশ্য কেন নীতীশকে ওই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে তা নিয়ে সিপিএমের অন্দরে প্রশ্ন যে একেবারে ওঠেনি তা নয়। তবে পাকাচুলো নেতাদের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সে আপত্তি অবশ্য ধোপে টেকেনি। এখন সেই পদক্ষেপের জেরে মুখ লোকানোর জায়গা পাচ্ছেন না সেলিম, বিমানের মতো নেতারা। তবে ১৭ জানুয়ারির কর্মসূচিতে নীতীশ যোগ না দিলেও লিখিত একটি বার্তা পাঠিয়েছিলেন। সেই বার্তা পাঠ করাও হয়েছিল। পরের দিন সিপিএমের দলীয় মুখপত্রে ছাপার অক্ষরে নীতীশের সেই বার্তাও প্রকাশিতও হয়েছিল। শুধু তা-ই নয়, নীতীশ যে আসছেন, তা উল্লেখ করে সিপিএমের মুখপত্রে অন্তত পাঁচ দিন আগে থেকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল।

Previous articleসুপ্রিম কোর্টের ৭৫ বছর পূর্তিতে গান্ধীজিকে স্মরণ প্রধান বিচারপতির
Next articleটলিউডে ১৮ বছর পার, অভিনয় জীবনের প্রাপ্তবয়স্কতায় নস্টালজিক অভিনেতা দেব!