উত্তরপাড়ায় মৃত্যুশোকে ২২ দিন ঘরবন্দি স্ত্রী-পুত্র-কন্যা, দরজা ভেঙে উদ্ধার পুলিশের

এরপর ওই আত্মীয় স্থানীয় কাউন্সিলরকে ফোন করে বিষয়টি জানান। কি কারণে এই ঘটনা সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে

উত্তরপাড়া রাজেন্দ্র এভিনিউতে বাড়ির একমাত্র রোজগেরে সদস্যের মৃত্যুর পর স্ত্রী, পুত্র এবং কন্যা নিজেদের ঘরবন্দি করে ফেললেন। প্রতিবেশীরা জানান, একটি বাড়িতে বাইশ দিন আগে মৃত্যু হয় অবসর প্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী গগন বরন মুখোপাধ্যায়ের।তারপর থেকেই নিজেদের ঘরবন্দি করে ফেলেন বৃদ্ধের স্ত্রী শ্যামলী, ছেলে সৌরভ ও মেয়ে চুমকি মুখোপাধ্যায়। খাওয়া দাওয়া না করে তারাও ক্রমশ মৃত্যুর দিকে ঢলে পরতে থাকেন। যা টের পাননি প্রতিবেশীরাও।
শেষে এক আত্মীয় তাঁদের ফোনে যোগাযোগ করে জানতে পারেন, তিন জনই মৃত্যুর জন্য ‘প্রস্তুত’ হচ্ছেন। খবর পেয়ে ওই বাড়িতে পৌঁছান এলাকার কাউন্সিলর থেকে পুরসভার চেয়ারম্যান। শেষে বাড়ির দরজা ভেঙে উদ্ধার করা হয়েছে তিন জনকে। সোমবার এই ঘটনায় চাঞ্চল্য চড়ায় হুগলির উত্তরপাড়ার রাজেন্দ্র অ্যাভিনিউ এলাকায়।

সোমবার স্থানীয় কাউন্সিলর উৎপলাদিত্য চট্টোপাধ্যায়, পুরসভার চেয়ারম্যান দিলীপ যাদব, পুলিশ নিয়ে ওই বাড়িতে যান। বৃদ্ধের আত্মীয় বৈষ্ণব দাস মুখোপাধ্যায় জানান, গত ৪ ফেব্রুয়ারি শেষ কথা হয়েছিল তাদের সঙ্গে। গগনবাবুর মৃত্যুতে শোকাহত ছিল পরিবারের সদস্যরা। তার জন্য এই অবস্থা হতে পারে তা কল্পনাও করতে পারেননি তিনি।তিন জনের শারীরিক পরিস্থিতি শঙ্কাজনক বলে খবর। তাঁদের উত্তরপাড়া হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
উত্তরপাড়া পুরসভার চেয়ারম্যান দিলীপ যাদব জানান, পরিবারের এক সদস্যের মৃত্যু হয়েছে বেশ কিছুদিন আগে। বাড়ির বাকি তিন সদস্য বাড়িতেই ছিল দরজা বন্ধ করে। কেউ তাদের এক আত্মীয়কে ফোন করে জানায় মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করছেন তারা। এরপর ওই আত্মীয় স্থানীয় কাউন্সিলরকে ফোন করে বিষয়টি জানান। কি কারণে এই ঘটনা সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, মৃতের ছেলে এবং মেয়ের বয়স পঞ্চাশের কোঠায়। দু’জনেই অবিবাহিত। তাঁদের রোজগার বলতে তেমন কিছু নেই। গগনের মৃত্যুর পর স্ত্রী যাতে পেনশন পান, কয়েক দিন সে জন্য সরকারি অফিসে যাতায়াত ছিল তাঁদের। কিন্তু তার পর পরিবারের তিন জনের কাউকেই বাড়ির বাইরে দেখা যায়নি।

 

Previous articleআধার জটিলতায় বিকল্প নথিতেই ভোট, কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে জানালো তৃণমূল
Next article‘বেশ কিছু’ ভারতীয়কে সেনা থেকে মুক্তি রাশিয়ার, দাবি বিদেশ মন্ত্রকের