নির্বাচনী বন্ড নিয়ে ‘ঢিলেমি’ নয়! এসবিআই-কে সময়সীমা বেঁধে ‘সম্পূর্ণ তথ্য’ প্রকাশের নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের

আর কোনও ঢিলেমি নয়! নির্বাচনী বন্ড (Electoral Bond) নিয়ে সম্পূর্ণ তথ্য প্রকাশ করতে এবার স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়াকে (State Bank of India) ডেডলাইন বেঁধে দিল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court of India)। সোমবার মামলার শুনানি চলাকালীন শীর্ষ আদালত সাফ জানিয়েছে আগামী বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার মধ্যে নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য প্রকাশ করতে হবে এসবিআইকে (SBI)। না তবে শুধুমাত্র তথ্য প্রকাশ বললে ভুল হবে এদিন আদালত ধমকের সুরে জানিয়ে দিয়েছে বন্ডের সিরিয়াল নম্বরও (Serial Number) ওইদিনের মধ্যে সামনে নিয়ে আসতে হবে। সোমবার দেশের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের বেঞ্চে এই মামলার শুনানি চলাকালীন বেজায় ধমকের মুখেও পড়তে হয় এসবিআইকে। গত শুক্রবারই শীর্ষ আদালতে নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত মামলায় সাফ জানিয়ে দিয়েছিল অসম্পূর্ণ তথ্য জমা দিয়েছে এসবিআই। এরপরই রীতিমতো হুঁশিয়ারির সুরে শীর্ষ আদালত সম্পূর্ণ ও সঠিক রিপোর্ট পেশের পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে এসবিআইয়ের দেওয়া ‘অসম্পূর্ণ’ তথ্য মুছে দেওয়ার নির্দেশ দেন। এরপরই আদালত ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে নির্বাচনী বন্ড নিয়ে সম্পূর্ণ তথ্য জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয়। সোমবার এই ত্রুটি নিয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য স্টেট ব্যাঙ্ককে নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট।

 

এদিন দেশের প্রধান বিচারপতি স্টেট ব্যাঙ্কের উদ্দেশে একেবারে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন, “আমরা নির্বাচনী বন্ড নিয়ে আপনাদের কাছে থাকা সমস্ত তথ্য চাই। স্টেট ব্যাঙ্কের ভাবভঙ্গি এমন যে, আদালত প্রকাশ করতে বলেছেন। আর সেকারণে যা মনে হয় তাই সামনে আনব। কিন্তু এটা একেবারেই ঠিক নয়। আমরা যখন বলেছি সব তথ্য চাই, তখন সব তথ্যই প্রকাশ করতে হবে।”একই সঙ্গে সোমবার সুপ্রিম কোর্টের স্পষ্ট নির্দেশ, বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার মধ্যে শীর্ষ আদালতে কোনও তথ্য না লুকিয়ে তারা যে সব কিছু প্রকাশ করেছে সেটা হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে স্টেট ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যানকে। এরপর এসবিআই নতুন তথ্য জমা দিলে তা ফের নতুন করে ওয়েবসাইটে তুলবে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। জানা গিয়েছে, নির্বাচনী বন্ডের ক্রমিক নম্বর প্রকাশ্যে এলে কোন রাজনৈতিক দল কার বা কাদের কাছ থেকে অনুদান পেয়েছে, তা অনেকটাই স্পষ্ট হতে পারে। কিন্তু লোকসভা ভোটের আগে কেন্দ্রের মোদি সরকারের অঙ্গুলিহেলনে আসল তথ্য সামনে আসছে না বলে অভিযোগ বিরোধীদের। তবে নির্বাচনী বন্ডের নামে মোদি সরকার কালো টাকা বন্ধের যে যুক্তি সামনে এনেছিলেন তা যে একেবারে ভাঁওতা তা বন্ডের মাধ্যমে গেরুয়া শিবিরের ইনকাম দেখলেই স্পষ্ট হয়। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনের আগে আদৌ এই মামলার সুরাহা হবে কী না তা নিয়ে ইতিমধ্যে প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা। তবে সোমবার আদালত সময়সীমা বেঁধে দেওয়ায় এবার এসবিআইয়ের পাশাপাশি মোদি সরকার যে বেশ চাপে পড়ল তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া গত মঙ্গলবারই জাতীয় নির্বাচন কমিশনকে নির্বাচনী বন্ডের তথ্য জমা দিয়েছিল। বৃহস্পতিবারের মধ্যেই সেই তথ্য প্রকাশ্যে আনে নির্বাচন সদন। সেই বন্ডে ক্রেতা এবং প্রাপক দলের তালিকা ওয়েবসাইটে প্রকাশও করলেও সেখানে বন্ডের নম্বরের উল্লেখ ছিল না।

 

Previous articleমতুয়া গড়ে দাঁড়িয়ে সিএএ নিয়ে শান্তনু ঠাকুর সহ বিজেপি নেতাদের চ্যালেঞ্জ বাংলা পক্ষর
Next articleবায়ুসেনার বিমানে ভোটপ্রচারে প্রধানমন্ত্রী! নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ তৃণমূলের