বেছে বেছে এমন একটি ভিসার উপর আক্রমণ চালিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প, যাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ভারতীয়রা। স্পষ্টভাবে ভারতীয় মেধাকে মার্কিন মেধা দিয়ে প্রতিস্থাপনের লক্ষ্যে প্রযুক্তি সংস্থাগুলিকে নির্দেশ দেওয়ার চেষ্টা চালিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump)। তবে তাতে আদতে মার্কিন তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলি কতটা বিপাকে পড়বে বা আদৌ ভারতীয় মেধাকে প্রতিস্থাপনের পথে তারা হাঁটবে কি না, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে সংশয়। এরই মধ্যে এইচ ওয়ান বি ভিসাধারী (H1B visa) কর্মীদের ২১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ জারি করল মাইক্রোসফট (Microsoft) ও অ্যামাজন (Amazon)।

আমেরিকার এইচ ওয়ান বি ভিসাধারীদের ৭১ শতাংশ ভারতীয়। বিশেষ প্রযুক্তি শিক্ষার অধিকারীদের এই ভিসা দেওয়া হয় আমেরিকায়। নিয়োগকারী সংস্থাকে ভিসার জন্য যাবতীয় খরচ দিতে হয়। এই ভিসার ক্ষেত্রে চিনের ভিসাধারীর পরিমাণ ১১.৭ শতাংশ। অর্থাৎ সরাসরি ভারতে বিভিন্ন প্রশিক্ষণের অধিকারী কর্মপ্রার্থীরা ও আমেরিকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে পাশ করে মার্কিন সংস্থায় যোগ দেওয়া ভারতীয়দেরই সবথেকে বেশি প্রভাবিত হতে হবে।

এর আগে মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে বিদেশি পড়ুয়া গ্রহণ করা নিয়ে তোপ দেগেছিলেন ট্রাম্প। হাভার্ডের (Harvard University) মতো বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুদান বন্ধও করেছেন। তারপরেও বিদেশি, বিশেষত ভারতীয় পড়ুয়াদের শিক্ষাদান থেকে পিছিয়ে আসেনি বিশ্ববিদ্যালয়। বেসরকারি সংস্থায় কাজের ক্ষেত্রেও সেভাবেই ট্রাম্পের নীতি বুমেরাং হতে চলেছে, এমনটা আশঙ্কা আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের। এতদিন এই ভিসার জন্য বার্ষিক ২ হাজার থেকে ৫ হাজার মার্কিন ডলার পর্যন্ত খরচ করতে হত। এবার তা বেড়ে দাঁড়াল বার্ষিক ১ লক্ষ মার্কিন ডলার।

এইচ ওয়ান বি ভিসাধারীদের (H1B visa) মধ্যে অ্যামাজনে (Amazon) কর্মরত ভারতীয়ের সংখ্যা ১২ হাজার। মাইক্রোসফট (Microsoft) ও মেটায় কর্মরত ভারতীয় ৫ হাজারের বেশি। এই পরিস্থিতিতে শনিবার ট্রাম্প ভিসার আইনে স্বাক্ষর করার পরই বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে মাইক্রোসফট। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অবশ্যম্ভাবী ফলাফলের দিকে তাকিয়েই যাঁদের এইচ ওয়ান বি ভিসা রয়েছে, ২১ সেপ্টেম্বর রাত ১২টার আগে যেন ফিরে আসেন। এরপর অ্যামাজনকেও একইধরনের বিজ্ঞপ্তি জারি করতে দেখা যায়। বলা হয়, দেশে ফিরতে কোনও ধরনের সমস্য়ার সম্মুখিন যাতে না হতে হয়, তার জন্য দ্রুত এইচ ওয়ান বি ভিসাধারীরা যেন কাজে যোগ দেন। যারা দেশে রয়েছেন তারা যেন দেশ না ছাড়েন।

আরও পড়ুন: ভারত-বন্ধুর উপর নতুন চাপ ট্রাম্পের! বিদেশি ভিসায় চাকরি করলেই বিরাট ‘খয়রাতি’

কার্যত ঝি-কে মেরে বৌকে শিক্ষা দেওয়ার যে নীতি নিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প, তাতে সংস্থাগুলি এখনও যে মার্কিন মেধার থেকে ভারতীয় মেধায় বেশি আস্থা রাখছে, তা প্রমাণিত। আর এই পথ দেখিয়েছিলেন স্বয়ং ডোনাল্ড ট্রাম্প। ২০১৬ সালের পর থেকেই আমেরিকার ভারতীয় সংস্থাগুলির থেকেও মার্কিন সংস্থাগুলিই ভারতীয় মেধা বেশি করে গ্রহণ করার পথে হেঁটেছে। ২০২০ সালে সেটা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। যদিও শেষ দুবছর সেই তালিকায় চিন অনেকটাই থাবা বসিয়েছে। তবে অতিরিক্ত ব্যয়ের জন্য ভারতীয়দের ফিরে আসতে হবে কিনা, তা স্পষ্ট হবে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই।

–

–

–

–