রাজুর মৃত্যুর আগে ধ্বস্তাধস্তির সময়ে কে কাকে চড় মেরেছিল? সেই ঘটনায় চাঞ্চল্য

বিজেপি যুব নেতা রাজু সরকারের রহস্য মৃত্যু নিয়ে রাজনৈতিকমহলে ক্রমশ সন্দেহের পারদ চড়ছে। মৃত্যুর কারণ ও তার পূর্ববর্তী ঘটনা নিয়ে রহস্য দানা বেঁধেছে। জানা গিয়েছে, হেস্টিংস পার্টি অফিসে সোমবার সন্ধ্যায় ‘কিছু একটা’ ঘটেছিল। বিজেপি মহল থেকেই জানা গিয়েছে বৈঠক চলাকালীন উত্তেজনা ছড়ায় রাজুকে ঘিরে। একটি ‘চড়’ মারার ঘটনাও ঘটে সন্ধ্যায়। বৈঠক চলাকালীন রাজুর সঙ্গে তর্ক বাধে যুব মোর্চার কয়েকজনের। তর্ক গড়াতে থাকে। এক সময়ে রাজু কোনঠাসা হয়ে পড়েন। অভিযোগ, এই সময়ে রাজু হাত চালান। ঘটনায় জনৈক অভিজিতের নাক কেটে যায়। এরপরই ১৪-১৫জন রাজুকে ঘিরে ধরে। তারপরের ঘটনার বিবরণ পাওয়া যায়নি। কারণ, ভিড়ের মধ্যে তা জানা বা দেখা সম্ভব ছিল না প্রত্যক্ষদর্শীদের।

সোমবার হেস্টিংস পার্টি অফিসে যুব মোর্চার বৈঠক ছিল। বেশ কিছুদিন ধরেই রাজুর সঙ্গে আদি বিজেপির গণ্ডগোল চলছিল। শুধু আদি নয়, রাজুর সঙ্গে নব্য বিজেপিদেরও ঠাণ্ডা লড়াই ছিল। রাজু বিজেপিতে যোগ দিয়েছিল মুকুল রায়ের সঙ্গে। পরবর্তী সময়ে সৌমিত্র খান ও শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে দেখা যেত। পরে আবার প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়েন। অনেকেই তাঁকে প্রতাপের অন্ধ অনুগামী বলতেন।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য, বৈঠকে রাজু কর্মসূচি বলতে যান। নব্য ও আদিদের একাংশ পালটা বলে, তুমি বলার কে? এ নিয়ে তর্ক বাধে। যে তর্ক শেষ পর্যন্ত হাতাহাতিতে পৌঁছায় বলে অভিযোগ। পরের ঘটনা, প্রায় অচৈতন্য রাজুকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, এবং পথেই তাঁর মৃত্যু।

প্রয়াত রাজুর মা কল্পনা সরকার ছেলের মৃত্যুর তদন্ত চেয়েছেন। স্পষ্ট বলেছেন শাস্তি চাই দোষীদের। দুপুরে রাজুর দেহের ময়না তদন্ত হবে। অন্যদিকে ঘটনার জেরে একটি মামলা রুজু হয়েছে। হেস্টিংস থানার পুলিশ বিজেপির হেস্টিংস পার্টি অফিসে যায়, কথা বলেছে বিল্ডিং ইনচার্জ সহ বেশ কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীর সঙ্গে।

ঘটনার আসল রহস্য চাপা দিতে বিজেপি নেতারা রাত থেকেই তৎপর। রাজুর অসুস্থতার কথা বলা হচ্ছে। লিফট বন্ধ থাকায় হেঁটে উপরে ওঠায় অসুস্থ হয়ে পড়েন বলেও যুক্তি সাজানো হচ্ছে। এমনকী পিজিতে ভর্তি না নেওয়ার কথাও সামনে আনা হচ্ছে। যদি হাসপাতাল সূত্র জানাচ্ছে, পিজিতে অসুস্থ রাজুকে নিয়ে যাওয়ার পর আইসিসিইউতে ভর্তির দাবি করা হয়। আইসিসিইউতে বেড না থাকায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, অবশ্যই ভর্তি নেওয়া হবে, কিন্তু কোন ডিপার্টমেন্টে হবেন সেটা চিকিৎসকরা ঠিক করবেন। আইসিসিইউ ভর্তি বেড নেই। কিন্তু চিকিৎসা দ্রুত শুরু হওয়া দরকার। এতে সহমত না হয়ে দলের কর্মীরা তাঁকে অ্যাপোলো হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। দলের একটি গোষ্ঠীর বক্তব্য পিজিতে ভর্তি করে চিকিৎসা শুরু করলেই ভাল হতো। হয়তো বেঁচে যেত তরতাজা ছেলেটা।

আরও পড়ুন:স্বস্তি দিয়ে দেশে ৩০ হাজারের নীচে নামল দৈনিক সংক্রমণ