দাউ দাউ করে ঘরে আগুন জ্বলছে। বাকি সবাই প্রাণ হাতে বেরিয়ে এলেও তিন তলার ঘরে আটকে নবতিপর এক বৃদ্ধা। অসহায় সিদ্ধাকে বাঁচাতে আবির্ভাব হলো হিরোর। এ কোনও সিনেমার গল্প নয়। একেবারে বাস্তব। এবং এখানে হিরো রুপোলি পর্দার কোনও সুপারস্টার নন, শ্যামবাজার ট্রাফিক গার্ডের ওসি, ইন্সপেক্টর প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়(Prasenjit Chatterjee)।

কলকাতা পুলিশের স্যোসাল মিডিয়া একাউন্টে তুলে ধরা হয়েছে ট্রাফিক পুলিশের ওসির এই হিরো গিরির কথা। পাশাপাশি তুলে ধরা হয়েছে সেই ঘটনার ভিডিও ও প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের ছবি। “সকাল আন্দাজ সাড়ে সাতটা, শ্যামবাজার পাঁচমাথা মোড়ের খুব কাছেই আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রোডের ওপর এক তিনতলা বাড়ির সিঁড়ি সংলগ্ন একতলায় একটি দোকানের রান্নাঘরে গ্যাস সিলিন্ডার থেকে আগুন লাগে। খবর পেয়েই দলবল নিয়ে ঘটনাস্থলে ছোটেন শ্যামবাজার(Shyambazar) ট্রাফিক গার্ডের ওসি, ইনস্পেক্টর প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জি ও অ্যাডিশনাল ওসি, ইনস্পেক্টর সমীক সেনগুপ্ত, সঙ্গে সঙ্গেই পৌঁছান অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার অফ পুলিশ (ট্রাফিক) পি.আর.কুমার এবং শ্যামপুকুর থানার ওসি, ইনস্পেক্টর পরিতোষ ভাদুড়ী ও অ্যাডিশনাল ওসি, ইনস্পেক্টর দিলীপ সরকার। পৌঁছে দেখেন, দাউদাউ করে জ্বলছে একতলার রান্নাঘর, কিন্তু আসল ভয়ের কারণ তা নয়। জানা যায়, বাড়ির তিনতলায় একা থাকেন ৯৩ বছর বয়সী কল্পনা ধর। তাঁর ছেলে থাকেন বিদেশে। বৃদ্ধা হাঁটাচলা করতে পারেন না, সুতরাং সিঁড়ি বেয়ে নীচে নেমে আসার প্রশ্নই নেই।

আরও পড়ুন:নিজের পুরনো কেন্দ্রে গিয়ে কাশীপুর কাণ্ডে বিজেপিকে নিশানা বাবুলের
এই পর্যন্ত শুনে আর দেরি করেননি প্রসেনজিৎ। ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন সিঁড়ি দিয়ে সোজা উঠে যান তিনতলায়, এবং কিছুক্ষণ পর কল্পনা দেবীকে নিজের পিঠে চাপিয়ে নীচে নেমে আসেন। আগাগোড়া তাঁর সঙ্গে ছিলেন কনস্টেবল শ্যামল সিং সর্দার। ততক্ষণে ধোঁয়া এতটাই গাঢ় হয়ে উঠেছে যে চারপাশ দেখা যায় না। কিন্তু প্রসেনজিতের কাজ তখনও শেষ হয়নি। মুখ ঢেকে এরপর আগুনের কেন্দ্রবিন্দু সেই রান্নাঘরে ঢুকে পড়েন তিনি, এবং যে সিলিন্ডার থেকে আগুন লাগে, সেটি বাইরে বের করে আনেন যাতে বিস্ফোরণ ঘটলেও বাড়ির ভিতরে না ঘটে। ইতিমধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছে দমকলের গাড়ি, সুতরাং পরবর্তী পদক্ষেপ দমকল বিভাগই নেয়। সুখের কথা, এই ঘটনায় কেউ আহত হননি।” ইতিমধ্যেই কলকাতা পুলিশের এই রীতিমতো ভাইরাল হয়ে উঠেছে।
